মামাতো_বোন_যখন_অফিসের_বস..♥, Part...13

রিসিভ করে নানুর সাথে কথা বললাম। তবে নানু আমায় যা জানালো ফোন করে তা আমার জীবনকে ওলট পালট করে দেওয়ার মত একটা বড় ধরনের ধাক্কা ছিল। আমার স্বপ্ন আমার ভালোবাসা গুলো এক নিমিষে শেষ করে দেওয়ার মত কিছু জানালো নানু...........










যা আমি কখনো ভাবতেও পারেনি। নানু বলেছে, মামা নাকি তানহার জন্য ছেলে ঠিক করেছেন। ওর বিয়ে দেবে বলে।
কথাটা শুনে আমি নির্বাক হয়ে গেলাম।
--কিরে মেহমেদ?
কই তুই? কথা বলছিস না কেন? (ফোনের ওপাশ থেকে নানু)
--হ্যাঁ, নানু
বল।
--কি বল?
কথা বলছিস না কেন?
--আসলে একটু অন্য মনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম...
--আচ্ছা.
রাতে খেয়েছিস?
--হ্যাঁ খেয়েছি.
--তুমি খেয়েছ?
-- হ্যাঁ খেয়েছি.
আচ্ছা শোন, বিয়ের ডেট কিন্তু ফিক্সট হয়ে গেছে। তুই কিন্তু সময়মতো এখানে চলে আসবি।
একটু কিন্তু দেরি করবি না। সব কিছু কিন্তু তোকেই করতে হবে।
কথাটা শুনে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না. নানুর মুখে কথাটা শুনে মনের ভেতরটা যেন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে. বুকটা যেন ভার হয়ে আসছিল.
আমি কি তানহাকে আবার পেয়েও হারালাম?
--আচ্ছা নানু, একটা কথা বলি?
--হ্যাঁ বল না...
--তানহার যে বিয়ে ঠিক করেছ তোমরা,
তানহাকে জানিয়েছ?
--আরে না.
কি বলছিস এসব?
ওকে জানালে কি বিয়ে করতে চাইবে?
সেই চার বছর থেকে যখন ওর বিয়ে ভেঙেছে তখন থেকে ওর বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছুতেই বিয়ে করতে চাইছে না।
তোর মামা ব্যাপারটা ওকে না জানিয়েই করেছে।
--যদি তানহা এই বিয়েতে অমত করে?
-- কি সব অলক্ষনে কথা বলছিস মেহমেদ?
অমত করতে যাবে কেন?
ছেলেটা খুব ভালো রে। বিদেশ থাকে।
তানহাকে খুব সুখে রাখবে দেখিস।
তানহা বিয়েতে অমত করবে না।
নানুর কথাগুলো শুনে যেন চোখের পানি আর আটকে রাখতে পারছিলাম না। নিজের অজান্তেই চোখের কোনে পানি চলে এসেছে। গাল বেয়ে অশ্রু গুলো ঝরে যাচ্ছে।
এ যেন আমার ভালোবাসার ব্যর্থতার প্রকাশ করছে। আমি ভেবেছিলাম আম্মুর পরে নানু আমাকে কিছুটা বুঝবে। আমার মনের ইচ্ছা গুলো নানু বোঝার চেষ্টা করবে।
কিন্তু নানুও বুঝল না। আমি একাই রয়ে গেলাম। সেই আগের মত।
তাহলে মাঝখানে আমার সাথে যা হয়েছে- এ সুখের স্মৃতি গুলো কি শুধুই মরিচীকা?
এগুলো কি ক্ষণিকের আনন্দ দেওয়ার জন্য এসেছিল আমার জীবনে। তানহার সাথে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো? সবই কি মিথ্যে?
--মেহমেদ..
কিরে চুপ হয়ে গেলি কেন।(নানু)
--কই না তো.
বলো( কাঁদো কাঁদো গলায়)
--তোর গলায় কি হয়েছে?
তুই এভাবে কথা বলছিস কেন? গলা কি বসে গেছে নাকি???
--হ্যাঁ নানু.
আসলে ঠান্ডা পানি একটু বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম তো, তাই গলাটা বসে গেছে।
--কি যে করিস তুই?
একটু দেখেশুনে চলবি না?
আচ্ছা তোরা ঢাকায় আসছিস কবে?
--এই তো কালকের দিনটার পরে পরশু চলে আসছি আমরা সবাই.
--আচ্ছা ঠিক আছে.
আর শোন একদম নিজের অযত্ন করবি না। নিজের যত্ন নিবি, ঠিক আছে?
--ঠিক আছে নানু. রাখছি তাহলে?
--আচ্ছা
আমার মাথায় যেন আকাশটা ভেঙে পড়ল। কি যত্ন নিতে বলেছ আমায় নানু,,?
যে আমার যত্ন নিত.. যে আমার জন্য কেয়ার করতো
তাকে তো তোমরা সবাই মিলে কেড়ে নিচ্ছো আমার কাছ থেকে।
বলতে গেলে কেড়ে নিয়েছো। আমি কি আর বেঁচে আছি নানু। জীবিত লাশ হয়ে বেঁচে আছি। এখন আমায় কেন এতটা হতাশ করে দিলে নানু??
সত্যিই কি তানহাকে আমি হারিয়ে ফেলেছি? আমি চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি?
জানি না ভাগ্যে কি আছে?
তবে যাই হোক না কেন, তানহাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকা অসম্ভব। কোন ভাবেই ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।
আমি বুঝতে পারছি না আমি এখন কি করবো। মনের ভেতরটা এখন কষ্টের সাগরে পরিণত হয়েছে। হতাশা আর দুঃখ আমাকে গ্রাস করে ফেলতে চাইছে। বুঝতে পারছিনা কি করবো?
বুকের বাম পাশটা খুব ব্যথা করছে। প্রিয় মানুষকে হারানোর ভয় মানুষকে তিলে তিলে ক্ষয় করে দেয়, সেটাই হচ্ছে আমার সাথে।
এসব ভাবতে ভাবতেই বালিশের কোনে মাথা দিয়ে দিলাম। খাওয়া হলো না। এমনি ঘুমিয়ে পড়লাম। অবশ্য সারাটা রাত ঘুমোতে পারিনি। ঘুম হহয়নি।
অনেক চেষ্টা করছি ঘুমানোর। কিন্তু দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি। তানহা কে হারানোর ভয় আমার প্রশান্তি কেড়ে নিয়েছে। নিদ্রা কেড়ে নিয়েছে।
এখন কি করবো সেটাই ভাবছি। দেখতে দেখতে নির্ঘুম সকাল হয়ে গেল। সকাল আটটার দিকে এখনও আমি বিছানায়।
সারা রাত চোখ দিয়ে অনেক পানি পড়েছে। আমি কাঁদিনি। কিন্তু চোখ কেন জানি বারবার আমার ব্যর্থতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।চোখের অশ্রু ধারা।
আমার চোখ যেন বলতে চাইছে-- তুমি ব্যর্থ ভালোবাসায়. তুমি হারিয়েছো তানহাকে. তুমি আর কখনো কি ফিরে পাবে না.
এটাই তোমার ভাগ্য। এটাই তোমার নিয়তি। আর এটা নিয়েই তোমাকে সারাটি জীবন বাঁচতে হবে।
দেখতে দেখতে সকাল আটটা বেজে গেল। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল। দরজা খুলতেই তানহা ----
--গুড মর্নিং
--গুড মর্নিং (মুখটা মলিন করে)
--মুখটা শুকনো লাগছে কেন?
রাতে খাস নি কিছু?
--হ্যাঁ.
খেয়েছিলাম তো।
-- দেখি. সর তো.
আমি দেখছি।
আমাকে পাশ কাটিয়ে সোজা টেবিলের কাছে চলে গেল। গিয়ে দেখল খাবার পড়ে আছে। যেমনটা ও রাতে রেখে গিয়েছিল।
--মেহমেদ.
আশ্চর্য। তোকে আমি রাতে বলি গিয়েছিলাম না রাতে খেয়ে শুবি।
তুই একটুও খাবার খাসনি। আর ওষুধ?
নিশ্চয়ই ওষুধ গুলো খাস নি।
--আসলে মনে ছিল না.
-- কি আশ্চর্য রকমের ছেলে তুই?
মনে থাকবে না কেন।
--ভুলে গিয়েছিলাম.
হঠাৎ আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আমার দু গালে আলতো করে হাত দিয়ে বলল---
-- কি হয়েছে তোর?
রাতে ঘুমাস নি?
রাতে ঘুম হয়নি তোর?
ওর চোখের দিকে তাকিয়ে খুব বলতে ইচ্ছে করছে--- তোমার মত আর কেউ আমার খেয়াল রাখে না তানহা. কেউ আমার মুখটি দেখে আমার মনের কথা বুঝতে পারে না।
তারপরও তোমার সাথে আমার যেন যোজন যোজন দূরত্ব। এ দূরত্ব তুমি ভেঙে দিতে পারবে না তানহা?
তুমি কি কখনো আমার হবে না?? কখনো কি আমি তোমাকে আপন করে পাব না?
-- কিরে
কি হয়েছে তোর?
বল রাতে ঘুমাস নি কেন?
-- আসলে ঘুম আসছিল না.
-- কেন ঘুম আসছিল না.
--এমনি
--আচ্ছা যা ফ্রেশ হয়ে নে।
তোর জন্য আমি ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি।
কথাটা বলেই তানহা চলে যেতে লাগল। আর তখনই ওর হাতটা আমি ধরে ফেললাম। ও আমার দিকে তাকিয়ে বলল---
-- কিরে কিছু বলবি?
--আমায় কাল রাতে নানু ফোন দিয়েছিল।
--তাই নাকি.
তা কি বলেছে নানু?
--মামা আপনার জন্য ছেলে দেখেছে।
কথাটা শুনে তানহা আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-- আপনার নাকি বিয়ের ডেট ফিক্সড করে ফেলেছে.
তানহা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে হেসে দিল।
-- আশ্চর্য আপনি হাসছেন কেন?
-- ওলে বাবালে.
এইজন্য বুঝি তোর মন খারাপ।( আমার গাল টেনে)
-- আশ্চর্য.
আমি কখন বললাম এই জন্য আমার মন খারাপ হয়েছে?( অবশ্য কথাটা মিথ্যে. কারণটা এটাই)
--হুম..
বুঝতে পেরেছি।
--কি বুঝতে পেরেছেন?
--আপনার তো বিয়ের ডেট ফিক্সট হয়ে গেছে.
মামা তো আপনাকে বিয়ে দিয়ে দিবেন।
-- আরে ধেৎ.
এরকম কতবার বিয়ের ডেট ফিক্সট করেছে বাবা আমার জন্য।
কিন্তু একবারও আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি।
-তার মানে তো এই নয় যে এবারও পারবে না.
--দেখ.
সকাল সকাল আমার মেজাজটা গরম করে দিস না তো এসমস্ত আজেবাজে কথা বলে।
-- কিন্তু মামা তো আপনার বিয়ের ডেট ফিক্সড করে দিয়েছেন।
ঢাকা গেলেই আপনার বিয়ে দিয়ে দেবেন।
--একেবারেই না.
আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবে না।
--আপনি এত শিওর হচ্ছেন কিভাবে.
--যতবারই আমার বিয়ের ডেট ফিক্সট করেছে একবারও আমার পছন্দ হয়নি একটি ছেলেকেও.
-- তারমানে এবার এই ছেলেটিকে পছন্দ হলেও হতে পারে.?
--এটা আবার কখন বললাম?
--আপনি তো এখনো ছেলেকে দেখেন নি.
সুতরাং পছন্দ হলেও হতে পারে।
-- এক শতাংশ সম্ভাবনা তো আছেই. পছন্দ হলেও হতে পারে. (মুখটা ববেকিয়ে)
--তার মানে আপনি যে বিয়েটা করবেন না এটা 100% সিউর নন.
-- দেখ.
বাবা কখনোই আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি।
তাই তুই চাপ নিস না।
বাবার ওসব জারিজুরি আমার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না।
নে এবার তুই ফ্রেশ হয়ে নে বেশি কথা না বলে।
আমি তোর জন্য খাবার আনছি।
কথাটা বলেই তানহা চলে গেল। আমার মন থেকে মেঘ গুলো যেন আস্তে আস্তে কেটে গেল ওর কথায়।
একটু শান্তি পেলাম।
বুঝলাম যে মামার ডিসিশন ওর উপর তেমন একটা ইফেক্ট করবে না। ওর পছন্দটাই সর্বাধিক।
তারপর ও খাবার নিয়ে এলো। এবার আর নিজের হাতে খাইয়ে দিলো না। ও খুব তাড়া করে চলে গেল। খাবারটা দিয়ে আমি নিজের হাতে খেয়ে নিলাম।
খাওয়া শেষ হতেই আফসার ভাই আমার রুমে ঢুকে পড়ল ----
--কি ব্যাপার মেহমেদ ভাই.
কাল সারাদিন ম্যাডামের সাথে কোথায় ঘুরলেন?
( একটু হেসে)
--আচ্ছা, আফসার ভাই,
কালকে দেখলাম আপনি আমাকে লক্ষ্য করে হাসছিলেন।
-- আপনারা গেলেন সকালে, রাতে ফিরলেন।
সারাদিন ছিলেন কই।
এই ভেবে মনটা একটু আনন্দময় লাগছিল আর কি , তাই হাসছিলাম।
-- আনন্দ লাগার কি আছে আফসার ভাই?
--আরে মিয়া.
আপনি যে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকালেন।
আমাদের কি কিছু না জানিয়ে,
এই কাজটা কি ঠিক করলেন??
--আফসার ভাই.
সব সময় এক রকম করবেন না তো?
ভালো লাগেনা।
আমার আর ম্যাডাম এর মধ্যে কোন ধরনের সম্পর্ক নাই, ওকে।
-- সে তো বাইরে বাইরে...
ভেতরে ভেতরে তো ঠিকই ম্যাডাম কে ভালোবাসেন।
-- আপনি কেমনে বুঝলেন?
--সেদিন বাগানে ম্যাডামকে জড়িয়ে ধরেছিলেন.
সেটা অস্বীকার করতে পারেন?
সেটার তো চাক্ষুষ প্রমাণ ছিলাম আমি।
-- আরে আফসার ভাই সেই ঘটনার পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম.
আপনি সেটা না বুঝেই নিজের মত করে ভেবে নিয়েছেন যে ম্যাডাম আমাকে ভালোবাসি।
- হ্যাঁ ভাই.
সবই বুঝি। আমি তো কচি খোকা??
আপনার থেকে এখন এবিসিডি শিখতে হবে আর কি-
-- আফসার ভাই কোন কাজ আছে?
--আপনারেই তো নিতে আসছি।
বাইরে সব অপেক্ষা করছে। আজকে ঘুরতে যাবেন না?
-- ঠিক আছে চলেন.
বেশি কথা বইলেন না, মেজাজটা গরম হয়ে যায় সকাল সকাল।( একটু বিরক্তিকর ভাব নিয়ে)
তারপর আফসার ভাই আর আমি হোটেলের নিচে চলে গেলাম। বাসের মধ্যে তানহা সহ আমরা সবাই শেষবারের মতো খাগড়াছড়ি ঘুরে বেড়ালাম।
খুব অসাধারণ মুহূর্ত ছিল। সবাই মিলে কাটানো দিনগুলি খুব ইনজয় করেছি।তারপর ঘুরা শেষে হোটেলে ফিরে এলাম।
রাতটা কাটিয়ে সকাল সকাল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম সবাই মিলে। তারপর সোজা অফিসের সামনে গিয়ে বাস টা থামল।
এরপর যে যার গন্তব্যে চলে গেল।
তবে তানহা আমায় বলল আমি যেন ওর সাথে ওর গাড়িতে করে যাই। গেলাম।
রাস্তায় যেতে যেতে ওর বিয়ের ব্যাপারে ওকে একটা প্রশ্ন করলাম ---
--আচ্ছা যদি মামার ঠিক করা ছেলেকে পছন্দ হয়, আপনি বিয়ে করে নিবেন??
--এতকিছু জানি না..
এখনোও তো তাকে দেখিনি।
দেখার পর বলতে পারি।
--তার মানে পছন্দ হলে বিয়েটা করবেন?
কনফার্ম??
-- কেন?
তুই চাসনা আমি বিয়েটা করি?
(আমার দিকে একটু অন্য ভাবে তাকিয়ে)
আমি ওর কথার উত্তরটা না দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমি চাই আমার নিরবতার মাঝে তানহা ওর প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাক। তানহা অনুভব করুক আমি ওকে কতটা ভালোবাসি।
গাড়িটা আমার বাড়ির সামনে এসে নামল। আমি গাড়ি থেকে নামতেই তানহা বলল---
-- এই শোন.
রাতে কিন্তু খেয়ে ঘুমাবি।
ওষুধগুলো ঠিক মতো খাবি। মনে থাকবে??
-- আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম হ্যাঁ বললাম.
--মাথা নাড়ালে হবে না..
আমি কিন্তু রাতে ফোন করবো।
ঠিক মত যেন ওষুধ গুলো খাওয়া হয়। বোঝা গেছে?
--জ্বী. খেয়ে নেব.
-- ঠিক আছে এখন আসি তাহলে.
বাই
--বাই..
সাবধানে যাবেন।
তানহা চলে গেল।
আমার মধ্যে একটা অস্থিরতা থেকেই গেল। বুঝতে পারছি না আমি কি তানহা কি চিরতরে হারাতে বসেছি। নাকি ওকে কাছের করে পাবো।
তানহা কি সত্যি সত্যি মামার পছন্দ করা ছেলেটা কে বিয়ে করবে। আমি আর ভাবতে পারছি না।
অনেকগুলো প্রশ্ন আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব ভাবতে ভাবতেই আমার রুমের সামনে গিয়ে দেখি আমার দরজাটা খোলা। খুব অবাক হলাম।
দরজায় তো আমি তালা মেরে গিয়েছিলাম। তাহলে দরজাটা খুলল কে ??? আমি আর চার পাঁচ না ভেবে দরজার ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম....
ভিতরে ঢুকে যাদেরকে দেখলাম তাদের কে দেখে কিছুটা বিস্মিত হলাম.
আমার রুমের ভেতর বড় মামা, বড় মামী আর নানু বসে আছে।
--মামা-মামী.
তোমরা এখানে কী করছো?
আর আমার রুমের চাবি পেলে কোথায়?
--বাড়িওয়ালার কাছে চাবি দিয়ে গিয়েছিলি না।
ওনাদের কাছ থেকে নিয়েছি,(মামা)
-- ও বুঝলাম.
তা এই অসময়ে এখানে কেন এসেছ তোমরা?
-- এখানে আয়.
আমার কাছে বস। (নানু)
--ইস..
















চেহারাটা কি হাল করেছিস তুই।
ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস না...মেহমেদ??
( বড় মামি আমার গালে আলতো করে হাত দিয়ে) আমি মামীর হাতে একটা চুমু দিয়ে বললাম-
-- তুমি আমার জন্য এত চিন্তা করো না তো মামী.
আমি দিব্যি সুস্থ আছি।
আর ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করছি।
--কি খাওয়া দাওয়া করছিস শুনি?
ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করলে তোর চেহারার এই হাল হয়?
আগের থেকে কত রোগা হয়ে গেছিস তুই..( মামা খুব রেগে)
--আহ.. তুই আমার নাতি টাকে আবার বকাবকি শুরু করে দিলি?( নানু)
--তোমাকে না কতবার বলেছি.
তোমার এই স্বভাব পরিবর্তন করো।
সব সময় শুধু রাগারাগি।
রাগ ছাড়া তুমি একটু কথা বলতে পারো না তাই না??(মামি)
-- রাগারাগি করি ছেলেমেয়েদের ভালোর জন্যই তো. নাকি?
ছেলেমেয়েদেরকে শাসনে না রাখলে পরে বিগড়ে যাবে না??
--তুই থামবি... (নানু)
আমি মামার কথা শুনে শুনে হাসছি।
--তা হ্যাঁ রে বাবা।
রাতে ঘুমাসনি?
তোর চেহারাটা এরকম লাগছে কেন? (মামী)
--মামি, তুমি অযথা আমার জন্য টেনশন করছো।
আমি সুস্থ আছি। ভালো আছি।
কিন্তু তোমরা এই অসময় এখানে কি করছ।
আর আমি যে আজ আসবো সেটা জানলে কি করে?
-- মা বলেছে আমাদের..
মা নাকি কালকে তোকে ফোন করেছে?( মামা)
--ও হ্যাঁ.
কালকে নানু কে বলেছিলাম যে আজ এখানে আসছি।
কিন্তু তোমরা এখানে কেন এসেছ, সেটাই তো বুঝতে পারছি না?
--তুই তখন থেকে এমন করছিস যেন আমরা এখানে আসাতে তোর কত বড় সমস্যা হয়ে গেছে??( নানু)
--নানু..
আমি এটা আবার কখন বললাম?
কিন্তু এখানে আসার তো কোন কারন আছে নাকি?
-- কারন তো আছেই.( মামা)
কিন্তু তুই আগে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
অনেকটা পথ জার্নি করে এসেছিস। একটু ফ্রেশ হয়ে নে। ভালো লাগবে।
তারপর তোর সাথে কথা বলছি।
-- হ্যাঁ বাবা.
তুই আগে একটু ফ্রেশ হয়ে নে। তারপর তোর সাথে কথা বলছি।(মামি)
-- কি কথা মামি.?
-- মেহমেদ.
আগে যা ফ্রেশ হয়ে নে।
তারপর বলছি (নানু)
--এখন বলা যায় না?
-- আহা.
আগে ফ্রেশ হয়ে আয় না। তারপর বলছি।(মামা)
-- ঠিক আছে যাচ্ছি।
--তুই যা.
ফ্রেশ হয়ে নে।
ততক্ষনে আমি তোর জন্য খাবার রেডি করছি। (মামী)
মামা মামীর কথা গুলো যেন কেমন লাগছে আমার কাছে। খুবই রহস্য করে কথা বলছে ওনারা।
কি বলতে চাইছে আমার সাথে?
তানহার ব্যাপারে কিছু ?? এ ছাড়া আর কি হতে পারে? হয়তো তানহার বিয়ের ব্যাপারে কিছু বলবে আমায়?
যখনই তানহার বিয়ের কথা মনে পড়ে তখনই আমার বুকের ভেতরটা যেন ভার হয়ে আসে।
আমি আর অত কিছু না ভেবে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ওয়াশরুমে। মামী আমার জন্য খাবার রেডি করছে। আর মামা নানু বসে আছে। বসে নিজেদের মধ্যে কি নিয়ে যেন আলোচনা করছে?
আমি ফ্রেশ হয়ে মামার কাছে বসে পড়লাম।
--মামা এবার বল কি বলবে?
--কি বলবে মানি.?
এতদূর জার্নি করে এসেছিস।
আগে খেয়ে নে পরে কথা হবে।( মামী)
-- মামী.. পরে খেলে চলবে.
আগে বল না কি বলতে চাও। (খুব কৌতুহল নিয়ে)
--আহ আগে খেয়ে নে. পরে বলছি. (মামা)
কি আর করার। সহজে কেউ বলতেই চাইছে না। তাই খুব জলদি করে খেয়ে নিলাম। কথাটা শোনার জজন্য.....
--নাও.
খাওয়া তো শেষ।
এবার বলো।
--দেখ মেহমেদ..
তুই এখন বড় হয়েছিস। বুঝতে শিখেছিস। জানতে শিখেছিস।
দায়িত্ব কি জিনিস সেটা অনুধাবন করতে পারিস।( মামা)
-- মামা তুমি এভাবে বলছ কেন?
--মেহমেদ, বাবা আমার...
আমরা সবাই তোকে না জানিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাবা। (আমার গালে হাত দিয়ে মামি)
মামির মুখে কথাটা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো।
--কি সিদ্ধান্ত নিয়েছো মামি?
--দেখ বাবা.
তুই আর তানহা একসাথে ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছিস। একসাথে সময় কাটিয়েছিস।
-- কি হয়েছে মামী?
খুলে বলো না কি বলতে চাও?
--মেহমেদ.
জানিস তো তানহার বিয়ে ঠিক হয়েছে ।
--হুম, জানি মামি। ( মাথা নিচু করে)
-- খুব জলদি তানহার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে.
তাই আমরা ঠিক করেছি তানহার বিয়ের পরপরই আমরা তোর বিয়ে দিয়ে দেবো। (মামি)
কথাটা শুনে মাথা উঠিয়ে মামীর দিকে শুধু চেয়ে রইলাম। আমি যেন মরীচিকার মধ্যে আছি? কি শুনছি এসব?
-- মামি.....
-- হ্যাঁ বাবা.
তোকে ছোটবেলা থেকে আমি মায়ের মত আদর করেছি।
মেহমেদ, তোর ভালো কথা চিন্তা কর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তুই এতো অমত করিস না বাবা।
-- কিন্তু মামী. এত তাড়াতাড়ি কিভাবে? আমি মানিয়ে নিতে পারব না?( খুব বিস্মিত হয়ে)
--মানিয়ে নিতে পারবি না কেন?
মেহমেদ অনেকটা সময় তো পার হয়ে গেল বাবা.
এবার একটু সংসারী হ। (মামা)
--কিন্তু মামা.
হঠাৎ করে..........
--হঠাৎ করে কোথায় বাবা?
আমি, তোর মামি তোর নানু অনেকদিন যাবতই এ বিষয়ে চিন্তা করছিলাম।
--মেহমেদ...
আমার মেয়েটার কত স্বপ্ন ছিল তোকে নিয়ে বলতো।
তোকে প্রতিষ্ঠিত দেখবে, তোকে সংসারী দেখবে, সুখী দেখবে,
কিন্তু আমার মেয়ে অকালে মরে গেছে বলে তার স্বপ্নগুলো কি মরে যাবে নানু????বল?
-- কিন্তু নানু.
এ বিষয়ে আমার একটু চিন্তা-ভাবনা করার প্রয়োজন ছিল?
হঠাৎ করে, কি করে আমি সব সামলে নেব?
--কিসের চিন্তা ভাবনা করার প্রয়োজন তোর?
তোর কী আমাদের সিদ্ধান্তের উপর কোন ভরসা নেই??( মামা একটু রেগে)
-- আহ. তুমি ছেলেটার সাথে এভাবে কথা বলছ কেন?(মামী)
--আসলে মামা.
আমি সে কথা বলতে চাইনি।
আসলে এই বিষয়ে আমার একটু ভাবার প্রয়োজন ছিল।
-- মেহমেদ.
ভাবার কোনো প্রয়োজন নেই বাবা।
বিশ্বাস কর আমি তোর জন্য যেই মেয়েটা দেখেছি, খুবই ভালো মেয়ে। তোর উপযুক্ত, শিক্ষিত, সুন্দরী মার্জিত।
তোর সাথে খুব মানাবে বাবা।
তুই আর না করিস না। রাজি হয়ে যা।
আমরা তো তোর ভালোর জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেহমেদ ।(মামি)
--তুই আর অমত করিস না নানু। রাজি হয়ে যা (নানু)
--কিন্তু নানু........
-- মেহমেদ. বাবা.
তোর তো নিজের খেয়াল রাখার জন্য কারো প্রয়োজন তাই না।
এই যে তুই এরকম খামখেয়ালি জীবন যাপন করছিস, ঠিকমতো খাচ্ছিস না, ঘুমাচ্ছিস না।
এভাবে তো আর চলে না। এবার একটু সংসারী হয়ে জীবনটাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে নে বাবা।( মামা)
--কিন্তু মামা.
আমার একটু সময়ের প্রয়োজন প্লীজ...
-- মেহমেদ. লক্ষী ছেলে আমার-
তোর কি আমার উপর কোন ভরসা নেই?
তোর মামীর উপর কোন ভরসা নেই তোর। (মামী)
-- মামি আসলে আমি সেটা বলিনি.
কিন্তু........
--তা হলে আর অমত করিস না বাবা.
রাজি হয়ে যা।
আমার জন্য বাবা, রাজি হয়ে যা বাবা,
আমি কি তোর মা এর থেকে কম কিছু। প্লিজ বাবা। তোর সুখের জন্যই বলছি। তোর ভালোর জন্য বলছি বাবা।
আর অমত করিস না। এ বিয়েতে রাজি হয়ে যায়
(মামি আমার গালে হাত দিয়ে)
আমি মাথা নিচু করে বসে আছি মামীর সামনে. সবাইকে মানা করতে পারলেও. মামীর কথা আমি ফেলতে পারিনা.
মামি আমাকে খুব আদর করতেন ছোটবেলা থেকে। একদম আমার মায়ের মত। তাই মামীর কথার উপর আর কোন কথা বলতে পারলাম না।
আমি হয়তো বলতে চেয়েছিলাম, বলতে ইচ্ছে করছিল মামীকে, যে---
আমি তানহাকে ভালোবাসি। কিন্তু তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এর পরও যদি আমি এ কথা বলি, মামীর কাছে আমি ছোট হয়ে যাব। আমি কখনই করতে পারব না।
আমি অনেকক্ষণ ধরে চুপ করেই আছি। কোন কথা বলছিলাম না। হঠাৎ মামী বলে উঠল---
-- তাহলে ওই কথাই রইল ,
আমরা তাহলে বিয়ের ডেট ফাইনাল করি।
মেহমেদ,
--আজ তাহলে আমরা আসি বাবা।
আমরা সমস্ত কথা পাকাপোক্ত করে তোকে জানাবো কেমন?(মামা)
--তাহলে আজ আসি বাবা.?
আর কিচ্ছু চিন্তা করিস না।
সব ঠিক হয়ে যাবে। (মামি আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেল)
-- মেহমেদ.
ভাবিস না নানু.
যা করব তোর ভালোর জন্যই করবো।
কথাটা বলে নানুও আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেল। সবাই চলে গেল।
আমি শুধু চুপ করে বসে রইলাম। কোনো কথা বলিনি। আমি নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম। এ কোন ঝড় আমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে।?
এ কেমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি আমি? আমি শুধু সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি. কি করবো বুঝতে পারছিলাম না.
দ্বিমুখী প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে আমি এখন আটকা পড়ে গিয়েছি। একদিকে তানহার বিয়ে ঠিক হয়েছে। অন্যদিকে আমার বিয়ে ঠিক হতে চলেছে।
কি করব এখন আমি?
তাহলে কি বড়দের কথা রক্ষা করতে গিয়ে আমি আমার ভালোবাসাকে চিরতরে হারাবো? আমি কি হারিয়ে ফেলবো তানহাকে? আমি কি কখনো ভুলতে পারবো?
মামি যখন বিয়ের কথাটা বলেছিল, তানহাকে হারানোর ভয়ে বুক ফেটে খুব কান্না পেয়েছিল। কিন্তু ছেলেদের নাকি প্রকাশ্যে কাঁদতে নেই।
তা নাকি লজ্জার?
কিন্তু এখন তো কেউ নেই। বুকটা আমার ফেটে যাচ্ছে। তানহা কে হারানোর ভয়ে।
এখন কেন চোখ দিয়ে পানি পড়ছে না? এখন তো খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে?
যখন কাঁদতে চাই না, তখন এই চোখ আমার বাধা মানে না। মনের অনুভূতি গুলো চোখের জল হয়ে গড়িয়ে পড়ে তখন। আমার অনিচ্ছা সত্তেও।
সারাটা রাত শুধু এই নিয়ে ভেবেছি। ঘুম হয়নি। দুচোখের পাতা এক হয় নি। এখন শুধু সময় বলে দেবে আমার নিয়তি কি?
আমার ভাগ্যে কী আছে?
এই দুশ্চিন্তা আর ভাবনার মধ্যেই রাতটা কাটিয়ে দিলাম। রাতের শেষে চোখটা একটু লেগে এসেছিলো। সকাল হয়ে গেল। ঘুম ভাঙলো ফোনের আওয়াজে।
মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি তানহা ফোন দিয়েছে।
-- হ্যালো, মেহমেদ।
কিরে তোর এখনো ঘুম হয়নি?
--এই মাত্র ঘুম ভাংলো?
কিছু বলবেন?
--না এমনি ফোন দিয়েছিলাম.
তোর ঘুমটা ভেঙ্গেছে কিনা দেখতে।
তাড়াতাড়ি ওঠ। অফিস চলে আয়।
-- জি আসছি.
কথাটা বলে ফোনটা রেখে দিলাম।
মেয়েটি আমাকে খুব মায়ায় ফেলে দিয়েছে। না পারছি ওকে ভুলতে, না পারছি ওকে মনের কথা খুলে বলতে। কি করে বাঁচবো আমি তানহাকে ছাড়া। জানিনা..
পরবর্তীতে কি হবে?
তবে যাই হবে দেখা যাবে।
ঘুম থেকে উঠে বিছানাটা ছাড়লাম। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর জলদি অফিস চলে গেলাম। অফিসে গিয়েই আমি নিজের চেয়ারে বসে কাজ করতে লাগলাম।
হঠাৎ আফসার ভাই আমার পাশে এসে বসলেন।
--এই যে মেহমেদ ভাই.
কেমন আছেন?
--ভালো (মুখটা মলিন করে)
--এ আমি কি দেখছি?
সদা হাস্যজ্জল, সদা প্রেমের সাহিত্য রচনাকারি মেহমেদ এর মনটা খারাপ নাকি??
-- না আফসার ভাই.
আসলে রাতে ঘুম হয়নি তো ভালো,
তাই একটু খারাপ লাগছিলো।
-- ঘুম হয়নি?
আরে ভাই যাদের ঘুম হয় না তাদের চেহারা এক রকম থাকে।
আর যাদের মন খারাপ তাদের আর একরকম। আমাকে শিখাইয়েন না।
সবই বুঝি। এখন কি হয়েছে খুলে বলেন।
মনটা খারাপ কেন আপনার? (আমার কাঁধে হাত দিয়ে)
-- এমন কিছু না আফসার ভাই।
কিছু বলবেন?
--আপনাকে না একটা গোপন কথা বলার ছিল.
(আমার খুব কাছে এসে)
-- গোপন কথা?
কোন গোপন কথা?
-- মিস শায়লা না আমাকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে. (মুচকি হেসে)
--ওহ্.
তা কীভাবে বুঝলেন?( আমার কাজ করতে করতে)
-- আরে কালকে যখন বাস থেকে নেমে ছিলাম না. আমি বলেছিলাম মিস শায়লাকে, যে আমি তার ঘর পর্যন্ত ড্রপ করে দেবো কিনা।
-- তারপর?
--তারপর আর কি?
মুচকি হেসে পুরাই গ্রিন সিগন্যাল।
--ভালো.
-- ভালো?
মেহমেদ ভাই, আপনাকে এতবড় একটা কথা বললাম,
আপনি তো কোন পাত্তাই দিলেন না।
--আফসার ভাই.
কিসের পাত্তা আবার।
মিস শায়লা খুব ভালো মনের মানুষ।
ভালো লাইফ পার্টনার হিসেবে আপনার জন্য তিনি খুব ভালোই হবেন।
--হুম বুঝছি.
বসের মন খারাপ, তাই আজকে মন মরা হয়ে আছে।
-- এমন কিছু না.
ম্যাম আসছেন?
-- হ্যাঁ.
ম্যাম তো কখনই আসছে।
-- আচ্ছা.
--আচ্ছা ভাই..
আফসার ভাই। আমার থেকে তেমন কোনো রেসপন্স না পেয়ে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসে কাজ করতে লাগলেন। হঠাৎ পিয়ন এসে বললো ম্যাম নাকি আমাকে ডাকছে।
--আচ্ছা ঠিক. আছে তুমি যাও আমি আসছি..
কথাটা শুনেই কলমটা টেবিলের উপর রেখে দিলাম। কিছুক্ষণ হতাশ হয়ে বসে রইলাম।
ওর কাছে গিয়ে কি বলবো আমি। কিভাবে কথা বলব ওর সাথে। যাকে ভালবাসি তাকে আজ পর্যন্ত মনের কথা খুলে বলতে পারলাম না।
এবং অজান্তেই তাকে হারিয়ে ফেলতে চলেছি। এরপর বেশি কিছু না ভেবে সোজা তানহার রুমে চলে গেলাম।
-- ম্যাম আসব.
-- হ্যাঁ ভেতরে আয়.
গিয়ে চেয়ারে বসলাম। আমার দিকে তাকিয়ে বলল--
-- মেহমেদ. সকালে কিছু খেয়েছিস?
-- জী, খেয়েছি।
--আবার মিথ্যা কথা?
তোকে না বলেছ............চলবে

Post a Comment

0 Comments