মামাতো_বোন_যখন_অফিসের_বস..♥, Part...17....শেষ পর্ব ।

তবে তানহার বড়বেশে যাকে দেখলাম তাকে দেখেই আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছিল।
এ কেমন বিশ্বাসঘাতকতা আমার সাথে..?
এ আমি কাকে দেখছি...........?











নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না আমি।
কল্পনাও করতে পারছি না....যে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমাকে.......
আফসার ভাই? এইমাত্র বরবেশে যে ভিতরে ঢুকল, সে আর কেউ নয়, আফসার ভাই ।
আফসার ভাই দাঁড়িয়ে আছে আমার সামনে. আমি কি আমি কি ভুল দেখছি?
আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না। কি হচ্ছে এখানে? আফসার ভাই ভিতরে ঢুকে আমার সামনে এসে শুধু মুচকি মুচকি হাসছে. কিন্তু রাগে আমার শরীরের রক্ত যেন মাথায় চড়ে গেছে. নিজেকে কন্ট্রোল করে আফসার ভাই কে প্রশ্ন করলাম ---
--আপনি.?
আপনি এই বেশে? এসবের মানে কি?
এখানে তো তানহার বরের আসার কথা ছিল?
আপনি এখানে বরবেশে কি করছেন?
--কেন?
তানহাকে বিয়ে করতে এসেছি।
নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে না পেরে সবার সামনে আফসার ভাই কলারটা সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেললাম আর চিৎকার করে বলতে লাগলাম ---
--আফসার ভাই.
ওই মুখে তানহার নাম উচ্চারণ করবেন না।
বিশ্বাসঘাতক, বেঈমান,।
আপনি এতটা নিচ, এতটা জঘন্য।
আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এখন তানহাকে বিয়ে করতে এসেছেন??
তার মানে তানহা আপনাকে পছন্দ করত। আপনাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
কিন্তু আপনি আমাকে বলেননি।
কেন করলেন আমার সাথে এমন টা? বলুন কেন করলেন?
-- আরে আরে.
মেহমেদ ভাই, কি করছেন কি, ছাড়ুন।
--না ছাড়বো না.
বলুন কেন করলেন আমার সাথে প্রতারণা?
পিছন থেকে কাপুরুষের মত আঘাত করে আমার সাথে কেন এই জঘন্য খেলাটা খেললেন বলুন??
কথাটা বলেই খুব জোরে ধাক্কা দিয়ে আফসার ভাইয়ের কলার টা ছেড়ে দিলাম। বাড়ি ভর্তি লোকজন সবাই শুধু আমার দিকে চেয়ে ছিল।
হঠাৎ বড় মামা এসে খুব রেগে আমাকে বলল----
-- মেহমেদ.
কি করছিস কি এসব? কি হয়েছে তোর? (রেগে)
--আমি মাথা নিচু করে চুপ করে আছি।
-- তুই কেন তানহার হবু বরের গায়ে হাত দিলি বল আমায়??
বড় মামি, নানু, ছোট মামা, ছোট মামি, বাড়ি ভর্তি সব লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে।
--কি হলো. উত্তর দিচ্ছিস না কেন?
কেন এরকম করলি? (কথাটা বলেই মামা আমায় থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হাত উঠিয়ে ফেলল. আর আমি ভয় পেয়ে চোখটা বুজে ফেললাম)
প্রায় 10 সেকেন্ড চোখটা বুজে ছিলাম। 10 সেকেন্ড চোখ বুঝার পর যখন দেখলাম যে আমার গালে থাপ্পড় পরল না, তখন চোখ মেলে দেখলাম যে মামা মুচকি মুচকি হাসছে।
সেই সাথে আফসার ভাই ও নানু মামি সকলেই। আমি তো ব্যাপারটা কিছুই বুঝতে পারলাম না।
হঠাৎ মামা আমার দু'গালে হাত দিয়ে বললো---
-- তুই কি ভেবেছিলি??
মামা সব সময় রাগ করে, মামা বদ মেজাজী, মামা তোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনো খেয়াল রাখে না, তাই না?
তুই আমার বড় আপার একমাত্র ছেলে। আমাদের সকলের প্রিয়।
তোর মনে কি করে কষ্ট দিব বাবা।
তারপর মামা আমার কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বলল---
--তানহার সাথে ওই ছেলেটার বিয়ে নয়, তোর বিয়ে হচ্ছে বুঝলি??
কথাটা শুনে আমি যে কি বলব। আমি আমার ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমি কি এখনো ঘুমিয়ে আছি? আমি কি স্বপ্ন দেখছি? নাকি আমার কান ভুল শুনছে?
সেটাই বুঝতে পারছি না। তারপর আমার হাতে আলতো করে একটা চিমটি কেটে যখন ব্যথা অনুভব করলাম, তখন আসলেই বুঝতে পারলাম যে না -আমি তো বাস্তবে.
কিন্তু কিভাবে,? কি হলো? কিছুই তো বুঝতে পারছি না.
মামার দিকে প্রশ্নবোধক ভাবে তাকিয়ে বললাম--
--কি বলছ কি মামা?
তানহার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে?
-- কেন?
কিছু ভুল শুনলি নাকি??
--কিন্তু কিভাবে? কিছুই তো বুঝতে পারছি না?
তারপর মামী আমার সামনে এসে আমার কপালে একটা চুমু দিল। বলল ----
--তুই কি মনে করেছিস মেহমেদ?
তোর আনন্দ খুশির কোন খেয়াল আমি রাখবো না?
তোকে আমি বলেছিলাম না যে আমি তোর মায়ের মত।
মা কি কখনো সন্তানের মনের কথা বুঝতে পারে না?বল-
-- আমার মেয়ের একমাত্র সন্তান তুই,
আর তোর ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোন খেয়াল রাখবো না ভেবেছিস??
আমার প্রাণ , আমার মেহমেদ । (নানু কপালে একটা চুমু দিয়ে) তোর খুশিটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি নানু।
-- আরে. সবাই ছেলেটাকে চুমু দিয়ে ছেলের চেহারাটা নষ্ট করে দিচ্ছে,
দেখি সরো সরো সরো,
কিরে সক্ড খেয়েছিস?
আরামসে চেপে যা। চাপ নেওয়ার কোন দরকার নেই। তানহার সাথে তোর বিয়ে হচ্ছে এবং এটাই ফাইনাল।
এখনো কোন ডাউট আছে নাকি? (ছোটমামা হেসে হেসে বলল কথা গুলো)
--কিন্তু মামা.
তানহার সাথে যে আমেরিকা থেকে আসে ছেলেটার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল?
--আরে ওসব সাজানো.
অভিমান করে তোকে বলেছে।
তোকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।
তোকে নাকি অফিসে বিয়ের কার্ড দিয়েছিল, কিন্তু তুই নাকি কার্ডটা খুলেই দেখিস নি।
তাই অভিমান করে তোকে সব সাজিয়ে-গুছিয়ে বলেছিল।
আর আমাদেরকেও বারণ করেছিল তোকে যেন কথাটা না বলি।
জানিস তো, তানহা যা রাগি মেয়ে। ওর কথা না শুনলে কি মহাপ্রলয় বাঁধিয়ে দিতে পারে সেটা তো জানিস।
তাই আমরাও কিছু বলিনি।
-- কিন্তু আফসার ভাই যে এখানে বর সেজে আসল?
-- আফসার ছেলেটাকে তো তানহাই বলেছিল যাতে বর সেজে আসে.
তোকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।
কিন্তু সারপ্রাইজ পাওয়ার বদলে তুই যে এতটা রেগে যাবি, কে জানতো বল।
রেগে গিয়ে ছেলেটার সাথে এত খারাপ ব্যবহার করলি, কাজটা কি ঠিক করেছিস বল?
ছোট মামার মুখে কথা গুলো শুনে আমি আফসার ভাইয়ের কাছে গেলাম। গিয়ে উনার দুই হাত ধরে বললাম---












-- আফসার ভাই,
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি মাথা গরম করে আপনার সাথে যে ব্যবহার করেছি, জানি সেটা ক্ষমার অযোগ্য।
তারপরও ছোট ভাই হিসেবে ক্ষমা দিন। প্লিজ।
--আরে মেহমেদ ভাই...
এত চাপ নিয়েন না তো।
চেপে যান।
যাই হোক আপনাদের ভালবাসাটা সার্থক হতে চলেছে, সেই সার্থক ভালোবাসার বলি হিসেবে আমি না হয় একটু আকটু খেয়ে নিলাম ।
(আফসার ভাই হেসে)
উনার কথা শুনে আমি হেসে দিলাম।
-- হয়েছে হয়েছে.
আর আসতে হবে না। তোমার জন্য শেরওয়ানি টা পরে এসেছিলাম মিয়া.....
আর তুমি কলার ধরে দিলে তো শেরওয়ানি টা নষ্ট করে।
--আই এম সরি.
প্লিজ ক্ষমা করে দিন। আসলে বুঝতে পারিনি।
--আমি বলেছি না. বাদ দেন ওইসব.
নিন শেরওয়ানি টা পড়ে নিন।
তারপর আফসার ভাই নিজের গা থেকে শেরওয়ানি টা খুলে আমাকে পরিয়ে দিল। মিস শায়লা আমাকে দেখে বলল---
-- বাহ...
কি অসাধারণ মানিয়েছে আপনাকে মিস্টার মেহমেদ।
একদম বাংলা ছবির নায়কের মত। সুপার....
-- আর শেরওয়ানি টা যখন আমি পড়ে ছিলাম তখন আমাকে কেমন লাগছিল মিস শায়লা...?
(আফসার ভাই মিস শায়লার চোখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করল)
মিস শায়লা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল---
-- লাগছিল কোনরকম...
--আরেব্বাস..
মিস্টার মেহমদ বাংলা ছবির নায়ক আর আমাকে শুধু কোনরকম।
এটা কেমন বেইণসাফি?
--তাহলে কি শুনতে চান আপনি?
-- এমন কিছু বলুন না.
যা হৃদয় ছুয়ে যাবে?
-- হৃদয়কে কন্ট্রোলে রাখুন মিস্টার আফসার,,
না হলে কাঁচের মতো ভেঙ্গে যাবে।
--এ হৃদয় তো আপনার মিস শায়লা.
যদি গড়তে চান আপনিই গড়বেন, ভাঙলেও আপনি।
মিস শায়লা কথাটা শুনে একটু লজ্জা পেয়ে চলে গেলেন ওখান থেকে। এরপর আফসার ভাই বলে উঠলো ---
--আরে কাজী. কাজী কই ?
কাজীর কোন পাত্তাই নাই দেখি।
বর এখানে রেডি হয়ে বসে আছে আর কাজী ঘুরে বনে বনে.
--সত্যি তো।
কাজী সাহেব কোথায়?( বড় মামা)
--কিছুক্ষণ আগেই তো এখানে ছিল।
কোথায় গেল এখন? (ছোট মামা)
--তোমরা ব্যস্ত হচ্ছ কেন?
কাজী সাহেব তানহার কাছে গেছেন.
ওর সম্মতি নিতে।( বড় মামী)
--ও তাই বল.
আমি তো ভেবেছিলাম চলেই গেছেন।
--কি অনুক্ষণে কথাবার্তা বলছিস তুই.?
চলে যাবে কেন? (নানু)
--আচ্ছা তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত না কাজী সাহেব আসছেন আমরা অপেক্ষা করি.
আর আপনি মিয়া এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
জামাই কখনো দাঁড়িয়ে থাকে?
আসেন আসেন, বসেন এখানে।
নতুন দুলা বলে কথা ।
(আফসার ভাই)
তারপর আফসার ভাই আমার হাত ধরে বিয়ের স্টেজে নিয়ে বসাল। মামারা ব্যস্ত হয়ে গেলেন মেহমানদের আপ্যায়নে। আর মামীরা গেলেন তানহার কাছে।
-- তা মেহমেদ ভাই...
কেমন লাগছে এখন???
চেহারাটার কি অবস্থা করেছেন মিয়া?
বুঝতেই পারছি খুব কেঁদেছেন।
( আমি আফসার ভাইয়ের কথা শুনে শুধু মুচকি মুচকি হাসছি)
আমার হাসি দেখে আফসার ভাই বলল----
-- হাসেন হাসেন.
এখন তো হাসারই সময়।
আমার এক পাশে আফসার ভাই আরেক পাশে মিস শায়লা বসে আছেন। অফিসের আরো সহকর্মীরাও বসে আছেন আমার সাথে।
আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছেন, মজা করছেন।
কিছুক্ষণ পর কাজী সাহেব এলেন। বড় মামা নিয়ে আসলেন তাকে। এসে আমাকে বললেন ----
--নাও তো বাবা...
এইখানে একটা সই দাও।
( আমার হাতে রেজিস্ট্রি খাতা ধরিয়ে দিয়ে)
আমি দেখলাম যেখানে আমি সই দেবো, তার পাশেই তানহার সিগ্নেচার। ব্যাপারটা খুব উত্তেজনাময় লাগছিল আমার কাছে।
তারপর আমি সই দিলাম। আইন অনুযায়ী বিয়ে হওয়ার পর শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হলো এবার।
আমাকে তিন কবুল বলতে বললো আমিও তিন কবুল বললাম।
এরপর কাজী সাহেব ঘোষণা করলেন শরিয়া মোতাবেক আজ থেকে আমি আর তানহা স্বামী-স্ত্রী.
এরপর আমাদের নবদম্পত্তির সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রত্যাশায় দোয়া হলো। আমি লক্ষ্য করলাম দোয়ার সময় আফসার ভাই মিস শায়লার সাথে চোখে চোখে কথা বলছেন।
আবার মাঝেমধ্যে জোরে জোরে "আমিন" বলে উঠছে। সবটাই মিস শায়লাকে উদ্দেশ্য করে বুঝতেই পারছি।
মিস শায়লার সাথে উনার ঘনিষ্ঠতা এবার বাড়বে।
এরপর দোয়া শেষ হল। দোয়া শেষ করে সবার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলো।
আমার সামনে আস্ত একটা মুরগি দেওয়া হল। অবশ্য সেই মুরগি আমি একা খাইনি। আফসার ভাই, মিস শায়লা এবং অফিসের অন্যান্য সহকর্মীরা মিলেই খেয়েছি।
খাওয়া শেষ করে সবাই একসাথে বসে গল্প করতেছি। কিন্তু একটি বারের জন্যও তানহাকে দেখলাম না। ও বাড়ির ভেতরেই রয়ে গেল। ওকে বাইরে আনেনি।
ওকে দেখার জন্য মনটা এত ছটফট করছে। নিজেকে আর সামলাতে পারছি না। শুধু একটু পলক দেখতে চাইছি।










আফসার ভাই আমার ব্যাপারটা বুঝে বলল ----
--আরে মিয়া..
এত তাড়াহুড়া কিসের।
আস্তে আস্তে। মাত্র তো বিয়েটা হলো।
এখনই বাসর ঘরে যাওয়ার জন্য ছটফট করছেন।
-- আফসার ভাই.
কি যে বলেন? (আমি একটু লজ্জা পেয়ে)
--কি যে বলেন..? কচি খোকা..?
সবই বুঝি।
একটি বারের জন্য ম্যাডামকে দেখেন নি এখানে আসার পর থেকে।
এখন ভাবছেন, বিয়ে হয়ে গেছে বউকে এখনো দেখছি না। মনটা ছটফট করছে তাই না???
বুঝি বুঝি সবি বুঝি।
যাবেন, একটু অপেক্ষা করেন। একটু পরেই আপনাকে বাসর ঘরের সিংহ দরজায় নিয়ে যাব।
তখন যত খুশি বউর সাথে বসে বসে গল্প কইরেন।
আপনাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না।
যত সময় যাচ্ছে তানহাকে দেখার ইচ্ছাটা যেন আমার প্রবল ভাবে বাড়ছে। রাত হওয়ার সাথে সাথে আস্তে আস্তে বাড়ি থেকে সব মেহমান চলে গেলেন।
মিথ্যে বলব না। সত্যি আর তর সইছে না আমার তানহা কি একটি বার দেখার জন্য। মনটা যেন চাতক পাখির মতো ছটফট করছে।
রাত প্রায় 11 টা, আমি বসে আছি। শুধু আফসার ভাই মিস শায়লা আর অফিসের সহকর্মীদের সাথে।
যতই সময় যাচ্ছে আমি খুব অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছি ওদের মাঝে। ওদের কাছে আর থাকতে ইচ্ছে করছে না। শুধু তানহা কে দেখব বলে।
আফসার ভাই আমাকে একটু খোঁচা মেরে বললেন--
-- আহারে.
আমাদের মেহমেদের অবস্থাটা দেখেন।
যেন খাঁচায় বন্দি পাখিটা।
মুক্ত হওয়ার জন্য ছটফট ছটফট করছে। (হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে)
--আপনি একটু চুপ করবেন মিস্টার আফসার?
আপনি বুঝবেন কি ভালোবাসার যাতনা কি হয়? (মিস শায়লা)
--না বুঝলে বুঝিয়ে দিন না.
বোঝার জন্যই তো অপেক্ষা করছি। (একটু ভনিতা করে)
-- ইস,
আমার বয়েই গেছে আপনাকে বুঝিয়ে দিতে.
তাদের কথা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করছে। এরপর নানু এসে বলল--
-- এই তোমরা কি করছো?
তোমরা বসে থেকো না।
তানহাকে বাসর ঘরে দিয়ে এসেছি।
তোমরা মেহমেদ কে বাসর ঘরে দিয়ে এসো।
কথাটা বলেই নানু চলে গেল।
-- উঠেন উঠেন উঠেন.
আপনার অপেক্ষার প্রহর গোনা এবার শেষ।
আর ছটফট করতে হবে না।
(আফসার ভাই)
এরপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হল আমার ঘরে। মানে বিয়েটা তো আমার আম্মুর বাড়িতে হয়েছে, মানে আমার বাড়িতে।
যেই ঘরে আমি ছোটবেলা থেকেই ছিলাম, যেই ঘরে থেকে পড়াশোনা করেছি এবং যেই ঘর থেকেই একদিন চলে গিয়েছিলাম। সেই ঘরেই আমার রুমে বাসর সাজানো হয়েছে।
আমাকে দরজার সামনে এনে আটকে দিল আফসার ভাই।
--আরে দাঁড়ান দাঁড়ান. কোথায় যাচ্ছেন?
--মানে?
--মানে প্রথমবার বাসর ঘরে যাচ্ছেন.
বড় ভাইয়ের কাছ থেকে একটু টিপস নেবেন না।
--মানে কি মিস্টার আফসার?
আপনি এর আগে আর কতবার বাসর করেছেন শুনি?
( মিস শায়লা খুব রেগে)
--তওবা আস্তাগফিরুল্লাহ...
কি সব বলছেন?
--কি সব বলছি.
আপনি মিস্টার মেহমেদ কে টিপস দিতে যাবেন কেন???
আপনার কি এর আগে অভিজ্ঞতা আছে নাকি বাসর করার? ??
--কিযে বলছেন মিস শায়লা?
-- চুপ. একদম চুপ.
সরেন সরেন মিস্টার মেহমেদকে যেতে দিন।
-- আচ্ছা ঠিক আছে.
আপনারা যান আমি আসছি।
তারপর মিস শায়লা এবং বাকিরা সবাই চলে গেল।
-- এবার আপনি ভেতরে যেতে পারেন স্যার.( আফসার ভাই)
তারপর আমি যেই ভেতরে ঢুকতে যাবো অমনি আফসার ভাই আমার হাত টেনে ধরে বললো-
-- মেহমেদ ভাই।
বাসর রাতেই বিড়াল টা মাইরা ফেইলেন , বুঝছেন?
--কি সব বলছেন আফসার ভাই?
--ওই দেখো.
কি সব বলছি মানে?
বাসর রাতে বিড়াল না মারলে সকালবেলা উঠে দেখবেন মেও মেও করতেছে।
তখনও সারা জীবনও সেই মেও মেও থামবে না। তাই বলতেছি বাসর রাতেই বিড়াল টা মাইরা ফেইলেন।
-- আপনি আমাকে যেতে দেবেন? (একটু বিরক্ত হয়ে)
-- ওরে বাবারে..
স্যারের দেখি আর ধৈর্য মানছে না।
ঠিক আছে যান যান। গেলেই বুঝতে পারবেন।
কথাটা বলেই আফসার ভাই চলে গেলেন।
তারপর আমি দরজাটা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকেই দেখলাম আমার ঘর সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।তা কি বলব,,,













তারপর লক্ষ করলাম আমার বিছানার ওপর এক সুন্দরী ডানা কাটা নীল পরী বসে আছে। হ্যাঁ আমার তানহা বসে আছে। নীল শাড়ি পড়ে।
কিন্তু ওকে তো আমি লাল শাড়ি কিনতে বলেছিলাম এবং আমার সামনেই লাল শাড়ি কিনেছিল। হয়তো ঐ লাল শাড়ির ভেতর নীল শাড়িটা কিনে ছিল।
আমি হাটি হাটি পা করে তানহার পাশে গিয়ে বসলাম। একটু কাশির আওয়াজ দিলাম। তানহা একটু নড়েচড়ে বসলো। তারপর আমি সাহস করে ওকে বললাম--
-- ভালো আছেন?
তারপর ও লেডি অফিসার এর মত ঘোমটা তুলে বললো,
-- ভালো থাকবে না কেন?
ভালো থাকার জন্যই তো এত সব করলাম। (একটু মুচকি হেসে)
মাই গড, ঘুমটা তোলার পর ওকে যেন আরো সুন্দরী লাগছে। যাকে পরীর সাথে তুলনা করলেও খুব কম হয়। নজরকাড়া সৌন্দর্য। চোখ ফেরাতেই পারছি না।
-- এই কী দেখছিস এভাবে.?
(আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বললাম-
-- কিছু না.
-- সকালে খেয়েছিস কিছু?
-- বাসর রাতে কি এসব বলবেন?
-- কি বলবো স্যার কে শুনি?
জানি তো সকালে কিছু খাসনি।
মনমরা হয়ে ছিলি। মন খারাপ করেছিলি।
--আমার মন খারাপের কারণটা কি আপনি জানেন না???
-- জানি তো..
এজন্যই তো আমার বাবুটাকে কষ্ট দিতে চাইনি। (আমার গাল টেনে)
-- কষ্ট দেননি বলছেন.?
এই ছয় দিনে কতটা কষ্ট পেয়েছি জানেন আপনি?
-- একটা থাপ্পর এর সাথে গালের 32 টা দাঁত ফেলে দেবো.
কে বলেছিল তোকে কষ্ট পেতে? (হাত উঠিয়ে)
-- কষ্ট দিয়ে আবার বলছেন কে বলেছিল কষ্ট পেতে?
--বুদ্ধ একটা.
তুই সেই বুদ্ধটাই রয়ে গেলি।
--কি বোকামি করেছি আমি?
--তোকে সেদিন অফিসে আমি বিয়ের কার্ডটা দিয়েছিলাম না?
তোকে কতবার বলেছি বিয়ের কার্ড টা খুলে দেখতে, দেখেছিস একবারও?
বুক ভরা শুধু অভিমান,? তাই না?
এত অভিমান নিয়ে থাকিস কিভাবে তুই?
--অভিমান তার সাথেই করা যায় যাকে মানুষ ভালোবাসে।
-- জানিস.
সেদিন অফিসে তোকে খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল।
কিন্তু তুই কার্ড টা খুলে একবার দেখলিও না।
বুদ্ধ একটা।
--আজ ইচ্ছে করছে না জড়িয়ে ধরতে?
--আমার বয়েই গেছে তোকে জড়িয়ে ধরতে.
কথাটা বলেই ও আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। আমিও ওর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তারপর হঠাৎ করে ও আমায় জাপটে ধরল। আমিও জড়িয়ে ধরলাম ওকে।
আপন করে নিলাম এই বুকের মাঝে। তানহাকে পাওয়া যেন আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল।
।কিছুক্ষণ এভাবে জড়িয়ে রইলাম ওকে। তারপর লক্ষ্য করলাম তানহা বোধহয় কাঁদছে। আমি ওকে ছাড়িয়ে দেখলাম সত্যি সত্যি ও কাঁদছে।
--আপনি কাঁদছেন কেন?
ও কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে, আমার চোখে একটা চুমু দিল বললো -
--খুব কষ্ট হয়েছে নারে তোর?
খুব কষ্ট পেয়েছিস তাই না?
আই এম রিয়েলি সরি,
এম রিয়েলি ভেরি সরি রে, প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে।
--হুম, কষ্ট পেয়েছিলাম. আপনাকে হারানোর ভয়ে।
-- বিশ্বাস কর.
গায়ে হলুদের দিন তোর খুব কষ্ট হচ্ছে দেখে আমি বলতে চেয়েছিলাম সত্যিটা।
কিন্তু তুই শুনতেই চাইলিনা । চলে গেলি।
--কি করতাম?
আপনাকে এতটাই ভালবেসে ফেলেছিলাম, যে নিজেকে সামলে উঠতে পারছিলাম না।
--খুব কষ্ট হয়েছিল তাই না (আমার দু গালে হাত দিয়ে)
-- এখন আর নেই তো.
আপনাকে বুকে পেয়ে কষ্টগুলো শূন্যে উড়ে গেছে। (ওর হাতে একটা চুমু দিয়ে)
-- সত্যি?( মুচকি হেসে)
-- হুম, সত্যি.
তারপর আমার গলাটা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তানহা।
-- আর কখনো তোকে কষ্ট দেবো না রে,
প্রমিস. কোনদিন তুই কষ্ট পাবি না দেখে নিস.?
--জানি তো.
আপনি কোন দিন আমায় কষ্ট দিতে পারবেন না।
কারণ আমার সুখের উৎস, আনন্দের উৎস টাই আপনি।( ওকে জড়িয়ে ধরে)
--ইস.














কি কথা ?
--কেন আপনার পছন্দ হয়নি আমার কথা?
মিস শায়লা তো আমার কথাগুলো খুব পছন্দ করে।
এরপর তানহা আমায় ছেড়ে বললো,,
-- কি বললি তুই?
এই শোন, আমায় ছাড়া যদি অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকিয়েছিস না।
একদম চোখ তুলে নেবো।(চোখে আঙুল দিয়ে)
-- তাকাবো না কেন?
আপনি কি বলেছেন কোনদিন আমায়, যে ভালোবাসেন?
--বুদ্ধ টা বলে কি?
মেয়েরা কখনও আগে ভালোবাসার কথা বলে গাধা একটা? (মুখটা বেকিয়ে)
-- কেন?
কোন দলিলে লেখা আছে, যে মেয়েরা আগে ভালোবাসার কথা বললে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে?
-- দেখ, ছেলেরা আগে ভালোবাসার কথা জানায়, মেয়েরা নয়।
-- জানাবে কি করে?
কারন ছেলেদের ভালোবাসা সাগরের মত হয়।
অনেক বিশাল।
--কি বলতে চাস তুই?
মেয়েরা ভালবাসতে জানে না?
--সত্যি করে বলুন তো.
আমার থেকে, আপনি আমায় বেশি ভালোবাসতে পারবেন?
কখনো না?
আমি আপনাকে যে কতটা ভালোবাসি, তা কখনই কোনভাবেই প্রকাশ করা যাবে না।
এতটাই গভীর ভালোবাসা।
তারপর তানহা আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল--
-- জানি তো.
আমার বাবুটা অনেক ভালোবাসে আমায়।
--কি বাবু বাবু করতেছেন?
--বাবু নয়তো কি?
সবসময় অভিমান করে থাকিস বাচ্চাদের মত(আমার গাল টেনে)
--আচ্ছা একটা কথা বলুন তো?
আপনি তো আমার সামনে লাল শাড়ি কিনে ছিলেন। তাহলে নীল শাড়ি পড়েছেন যে?
-- তুই চলে যাওয়ার পর আমি শাড়িটা চেঞ্জ করে নেই?
কেমন লাগছে আমায়?
-- কিভাবে প্রকাশ করব বলেন?
আপনিকে এতটাই সুন্দর লাগছে,
যে ভাষাই হারিয়ে ফেলেছি।
--কেন?
তোর সাহিত্য দিয়ে প্রকাশ কর। (হেসে)
তারপর আমি ওর গালে আলতো করে হাত দিয়ে বললাম ---
এ হৃদয়েকে তোমার নামে শূন্য রেখেছি,
তুমি আসবে বলে। তোমার হাসি মাখা ঐ মুখটি আমার হাসির যেন একমাত্র কারণ একমাত্র উৎস।
তোমার কোমল স্পর্শ আমার হৃদয়ে আনন্দের বন্যা তুলে দেয় হে প্রিয়তমা।
তোমার মুখটি দেখে আমি ভুলে যাই পৃথিবীর সকল কষ্ট, বেদনা।
এই হৃদয় প্রশান্তি পায় তোমার উপস্থিতিতে। আমার এই মন প্রশান্তি খুঁজে বেড়ায় তোমার মাঝে.
তোমার মাঝে খুঁজে পাই আমার চিরচেনা ভালোবাসা.
হে অপরিচিতা আজ তুমি আপনের চেয়েও আপন. এ হৃদয়ে তোমারি আধিপত্য, তোমারি রাজত্ব,।
তোমার কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসা টুকু আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা।
মরে যাব সেদিন,শেষ করে দেবো নিজেকে , যেদিন অবহেলা করবে আমায়। আর ভালবাসবে না আমায়।
যদি কেউ প্রশ্ন করে আমায় কোনদিন হে প্রিয় তমা- আমার কাছে তোমার গুরুত্ব কতটুকু?
আমি তাকে বলব -
আত্মা ছাড়া যেমন দেহ বাঁচে না, ঠিক তেমনি তোমার গুরুত্ব আমার কাছে ততটুকু।
তুমি আমার আত্মার সাথে মিশে গেছো মিশে গেছো। আমার হৃদয়ের মাঝে। তাই তোমায় ছাড়া এ জীবন মূল্যহীন। কোন দাম নেই জীবনের তুমি ছাড়া।
কখনো ছেড়ে যেও না আমায়। এ হৃদয় কি সামলাতে পারবো না তুমি ছাড়া।
যদি যেতেই হয় কোন দিন, নিজ হাতে আমাকে হত্যা করে যেও হে মায়াবিনী। বেঁচে থাকার শাস্তি দিয়ে যেও না হে প্রিয়তমা।
তুমি আমার সবচেয়ে কাছের। সবচেয়ে প্রিয়। আমার প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা। আমার প্রেম তুমি তানহা,,,
তুমি....
বড্ড ভালোবাসি তোমায়...
বড্ড বেশি...
আমার সাহিত্য শুনে তানহার চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছিল। আঙুল দিয়ে ওর চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে বললাম ---
--আপনি কাঁদছেন?
-- এত বেশি ভালোবাসিস আমায়?
-- বললাম না.
আমার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কোনভাবেই করা যাবেনা।
এতটাই গভীর( তানহার কপালে একটা চুমু দিয়ে)
তারপর ও আমায় আবার জড়িয়ে ধরলো। আমিও ওকে জড়িয়ে আছি।এত কষ্টের পর, এত হতাশার পর ওকে কাছে পেয়েছি। সহজে ছাড়বো না।
-- আচ্ছা একটা কথা বলব?
--হুম বল.
-- আপনার সাথে দেখা হওয়ার পরই আমার পছন্দ-অপছন্দের সব কথাগুলো আপনি জানতেন.
আমার প্রিয়, খাবার প্রিয় পোশাক,
আরো অনেক কিছু।
কিভাবে জানলেন?
আম্মু বলেছিল আপনাকে?
--না.
ফুপু আমাকে বলেনি।
-- আচ্ছা আরেকটা প্রশ্ন.
আমি যে আপনাকে ভালোবাসি, আপনি কিভাবে বুঝতে পারলেন সেটা?
কে বলল আপনাকে?
তারপর আমায় ছেড়ে দিয়ে বলল --
--এক মিনিট.
একটা সারপ্রাইজ আছে তোর জন্য?
-- সারপ্রাইজ?
তারপর তানহা বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে কিছু একটা বের করে আমায় দিলো --
--এই নে.
তোর জন্য একটা গিফট।
-- কিসের গিফট এটা?
-- খুলেই দেখ না.
শুধু প্রশ্ন করে?
তারপর আমি গিফট টা খুললাম। কিন্তু খুলে যা দেখলাম তা দেখে আমার মাথা থেকে যেন ধোঁয়া বেরোচ্ছিল।আমার ডায়েরী টা ।
যে ডায়েরীটা চুরি হয়ে গিয়েছিল। আমি ওকে বললাম---
-- একি এটাতো আমার ডায়েরি.
আপনি পেলেন কোথায়?
তানহা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
-- বুঝেছি তারমানে আপনি আমার ডায়েরী টা চুরি করেছেন?
--করেছি. আমার বরের টা করেছি.
তোর কি?
--আপনি যে একটা চুন্নি. সেটা তো আগে জানতাম না.
-- এই চুন্নি কি?
-- চোর. আমি একটা চোর. (ও ওর নাক টেনে)
--একদম না.
ডায়রিটা না নিলে তোর মনের কথাগুলো জানতাম কিভাবে বল?
তুই তো কিছুই বলতে চাস না। সবসময় মুখ গোমরা করে থাকিস।
--তাইতো বলি,,,এত ঘন ঘন পায়েস খাওয়ানোর মানে কি?
--কি বললি?
বেশ করেছি, নিয়েছি।
--তাই বলে আমার ব্যক্তিগত জিনিসে না বলে হাত দেবেন?
--তোর ব্যক্তিগত জিনিস কিরে?
আজ থেকে তোর সবকিছু আমার।
তুইও আমার। (আমার নাকে একটা কামড় দিয়ে)
-- উফ. লাগছে তো?
--লাগুক. (আরেকটা কামড় দিয়ে)
--কি করছেন কি?
ব্যথা পাচ্ছি তো.
-- এটা তোর শাস্তি.
-- শাস্তি?












কিসের শাস্তি?
-- এটা আমাকে প্রপোজ না করার শাস্তি.
ওর কথা শুনে বাসর ঘরের সাজানো ফুল গুলো থেকে একটা গোলাপ ফুল ছিঁড়ে নিলাম. তারপর ওর হাত দুটো আলতো করে ধরে ওকে দাড় করালাম.
তারপর হাঁটু গেড়ে বসে পড়লাম. মাথা নিচু করে ফুলটা ওর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম --
""আমি তোমাকে ভালোবাসি তানহা, তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। তুমি কি হবে আমার ভালবাসার মানুষ টি?
তুমি কি হবে আমার শূন্য বুকটা ভরিয়ে দেওয়ার একজন?
তুমি কি হবে আমার গভীর রাতের চাঁদ দেখার সঙ্গী? তুমি কি হবে আমার এই শূন্য কাঁধে মাথা মাথা রাখার ভালোবাসার মানুষটি?
তারপর তানহা আমার মাথাটা উঠিয়ে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বলল --
--সত্যিই রে.
আমি তোকে তোর থেকে বেশি ভালবাসতে পারব না।
আমার জীবন সার্থক, তোর মত ভালবাসার মানুষ পেয়ে।
--আর আমি সার্থক আপনাকে পেয়ে.
-- এই একটু আগে না তুমি করে বললি.
এখন আবার আপনি করে বলছিস কেন? (আমার কানটা টেনে)
--উফ, লাগছে তো.
আপনি আমাকে তুই করে বলছেন কেন? আমি আপনার স্বামী না?
স্বামীকে কেউ তুই করে বলে?
-- ইসস, এসেছে আমার স্বামী রে?
তুই তো একটা বাচ্চা।
তোকে আমি তুই করেই বলবো।
--তাহলে আপনাকেও আমি আপনি ছাড়া কিছু বলতে পারব না.
আপনি করেই বলব। (তানহাকে কাছে টেনে, খুব জোরে জড়িয়ে ধরে)
তানহা আমার বুকে মুখ লুকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। আমি যেন ওকে বুকে পেয়ে এই জীবনের সকল সুখ পেয়ে গেছি।



শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য সবাই অনেক অনেক ধন্যবাদ, খোদাহাফেজ।


Post a Comment

0 Comments