মামাতো_বোন_যখন_অফিসের_বস..♥part....10

-- তানহা তুমি এখানে..?
তানহা কথা শুনে মুখ তুলে তাকাতেই ওর মুখটা একদম কালো হয়ে গেল। ইন্টারভিউ দিতে আসা একটি ছেলে অফিসের বসকে কিভাবে নাম ধরে ডাকে..??বিষয়টা আমার কাছে একদম ঘোলাটে লাগছিল।
হঠাৎ তানহা রাগী কন্ঠে বলে উঠল -----









--আপনার সাহস হয় কি করে? যার কাছে ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন তাকে নাম ধরে ডাকার??(তানহা)
-- তানহা তুমি এভাবে কথা বলছ কেন??
-- শাট আপ মিস্টার তানিম....
এটা ইন্টারভিউ দেওয়ার জায়গা। আপনার পার্সোনাল বিষয় নিয়ে ডিসকাস করা জায়গা নয়... বুঝতে পেরেছেন...?
এতক্ষণে আমি সব বুঝতে পারলাম। আসলে ছেলেটা তানিম।
তানহার এক্স-বয়ফ্রেন্ড, যার সাথে তানহার বিয়ে ঠিক হয়েছিল কিন্তু অন্য মেয়ের সাথে অ্যাফেয়ার থাকায় তানহা বিয়েটা ভেঙে দেয়। অবশেষে ব্রেকআপ।
তানহার মুখে কড়া কথা গুলো শুনে তানিম মাথা নিচু করে আছে। কোন কথা বলছে না।
তবে তানহা আর তানিমের রাগারাগির বিষয়ে শুধু আমরা তিনজনে জানি। তানহা, তানিম আর আমি।
তবে আমাদের মধ্যে থার্ড পারসন হলেন ইয়াকুব স্যার। তিনি তো তানহার কান্ড দেখে পুরাই অবাক। ইয়াকুব স্যার রেগে গিয়ে বলল ----
--আরে বেয়াদব, এ কেমন আচরন তোমার?
তুমি ম্যাডাম কে নাম ধরে ডাকছো...
--সরি স্যার. ভুল হয়ে গেছে...
তানিম মাথা নিচু করে ঠিক আছে....
--হুম, এখানে এসে বসো। (ইয়াকুব স্যার)
তানিম এসে চেয়ারে বসলো. আর তানহা খুব রাগী মুড নিয়ে খাতায় পার্টিসিপেন্টদের নাম্বার দিচ্ছে.
এরইমধ্যে ইয়াকুব স্যার তানিমের এই অপ্রত্যাশিত ব্যবহার নিয়ে খুব অসন্তুষ্ট। আর এই অসন্তুষ্ট মুড এর মধ্যেই তানিমকে কয়েকটি প্রশ্ন করল।
তানিম কিছুটা দিতে পারল প্রশ্নের উত্তর আর কিছুটা দিতে পারল না। তানহা ও কিছু প্রশ্ন করলো তানিমকে।
তবে সে পরিবেশটা আমার কাছে এতটা অদ্ভুত লেগেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এমনভাবে তানহা তানিমকে প্রশ্নগুলো করল যেন তানিম ওর চিরকালের শত্রু। ও চায়না, তানিম এ কম্পানি তে জব করুক কিংবা চান্স পাক।
ইন্টারভিউ শেষে তানিম বাইরে চলে গেল। তারপর বাকি যে কজন ছিল তাদেরও ইন্টারভিউ নেওয়া হলো। তানিম সহ 17 জন বাইরে অপেক্ষা করছে এনাউন্সমেন্ট এর জন্য।
তাদের 17 জন থেকে 10 জনকে সিলেক্ট করা হবে। তানহা আর ইয়াকুব স্যার বসে বসে আলোচনা করছেন যে কাদেরকে নেয়া যায়।
আমিও তাদের সাথে বসে আছি। কাজের কাজ তো আমার কিছুই নেই।শুধু তানহার কারণ এখানে আছি।
ঘণ্টাখানেক পর এনাউন্সমেন্ট করা হলো। তবে যে বিষয়টিতে আমি একেবারেই অবাক হইনি সেটা হল,,
যে 10 জনকে নেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে তানিম নেই। তানিম বাদ পড়েছে।
অবশ্য তানহার ঐরকম বিহেভিয়ার দেখে আমি আন্দাজ করেছিলাম যে এমন কিছু একটা হবে।
এনাউন্সমেন্ট শুনে যারা সিলেক্ট হয়েছে তাদের মুখে হাসি আর যারা সিলেক্ট হয়নি তারা গোমরা মুখ নিয়ে বাইরে চলে গেছে।
তবে তানিম কোন পারমিশন ছাড়াই ইন্টারভিউ রুমে আবার ঢুকে পরল। ইয়াকুব স্যার তানিমের বিহেভিয়ার দেখে এতটা রেগে গেলেন যে তানিমকে এবার গালি দিয়ে বসলেন------
-- আরে ইডিয়েট, তোমার এত বড় সাহস। তুমি পারমিশন ছাড়া ভিতরে ঢুকলে কেন??
--স্যার প্লিজ আমার কিছু কথা ছিল ম্যাম এর সাথে..
--ইউ রাস্কেল. আবার কথা বলছ?
বের হয়ে যাও এই মুহূর্তে. নইলে সিকিউরিটি দিয়ে বের করে দেবো তোমায়..
--স্যার প্লিজ স্যার. আমার কিছু কথা ছিল ম্যাম এর সাথে. প্লিজ আমাকে একটু কথা বলতে দিন.
-- আবার...
-- ইয়াকুব সাহেব আপনি একটু বাইরে যান. আমি দেখছি ছেলেটার প্রবলেম কি. (ইয়াকুব স্যার কে থামিয়ে দিয়ে তানহা)
-- কিন্তু ম্যাম.......
--আহ, আপনাকে যেটা বলছি সেটা করুন।
ইয়াকুব স্যার তানহার রাগ দেখে বাইরে চলে গেলেন। তানিম দৌড়ে এসে তানহাকে বিনয়ের সুরে বলতে লাগলো ----
--তানহা প্লিজ. আমার সাথে এরকম করোনা.
প্লিজ আমার চাকরিটা খুব দরকার না হলে অনেক প্রবলেম হয়ে যাবে. প্লিজ তানহা একটু দয়া করো আমার প্রতি.
--এ তোমার কেমন বেহাল দশা হয়েছে তানিম....??তোমার বাবার তো ভালোই অবস্থান ছিল.
আর একটা চাকরির জন্য এরকম অনুনয়-বিনয় করছো. ভাগ্য আজ তোমাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে দেখেছো...? (হেসে হেসে)
--(তানিম মাথা নিচু করে আছে)
--তা কি ব্যাপার? আমার কাছে এত রিকুয়েস্ট করার মানে কি?
তোমাকে সিলেক্ট করা হয়নি. সো হয়নি.
কারও সুপারিশ নিয়ে এখানে চাকরি পাওয়া যায় না. তুমি এখন যেতে পারো...
--প্লিজ তানহা. এতটা নির্দয় হয়ো না.
চাকরিটা আমার খুব প্রয়োজন.
--তোমার প্রয়োজন অপ্রয়োজন দেখে আমার লাভ নেই... তুমি এখন যেতে পারো..
--আমাকে কেন সিলেক্ট করনি তানহা??
আমার সব সার্টিফিকেট তো খুব ভালোই. সেটা তো তুমি জানো.. প্লিজ আমাকে একটু দয়া করো তানহা....
-- শাট আপ..( খুব রেগে)









যারা অন্যের মন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদের জন্য আমার মনে কোনো দয়া মায়া নেই.. প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট দিয়ে নয়. মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখে আমি মানুষ বিবেচনা করি..
মনে পড়ে আমাকে ভালোবেসোও অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক রেখেছিলে তুমি।
প্রতারণা করেছিলে আমার সাথে। তুমি ভাবলে কি করে যে আমার মনে তোমার জন্য তিল পরিমানটুকু দয়া হবে।
ঘৃণা করি আমি তোমায়। জাস্ট ঘৃণা। তুমি এখন যেতে পারো।
আমি শুধু নীরব দর্শকের মতো ওদের কথাবার্তা শুনে যাচ্ছি। তানহার মুখে কথা গুলো শুনে তানিম মাথা নিচু করে চলে যেতে লাগল।
হঠাৎ তানহা পেছন থেকে তানিমকে ডাকলো ----
--আচ্ছা তানিম একটা প্রশ্ন ছিল. বাবার পকেটের পয়সা উড়িয়ে দিয়ে যে ছেলেটা আজ এই মেয়ে তো কাল ও মেয়েকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতো,
সেই ছেলেটার এই বেহাল দশা কেন। খুব জানতে ইচ্ছে করছে। আসলে তোমার এই পরিস্থিতি দেখে আমার তো খুব হাসি পাচ্ছে তাই।
---তানিম মাথা নিচু করে বলল,
তুমি বিয়ে ভেঙে দেওয়ার চার মাস পর বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান।
ওদিকে ব্যবসায় আমি অনভিজ্ঞ হওয়ায় ভালো করে সামাল দিতে পারেনি। তাই ব্যবসায় একের পর এক লস হচ্ছিল।
ফলে ব্যবসায় ধস নামলো। অফিস টা নিলাম হয়ে গেল। সেইসাথে বাড়িটাও।
তাই মাকে আর ছোট বোনকে নিয়ে খাগড়াছড়িতে মামার বাড়ি চলে আসি।
এখানে এসে একের পর এক চাকরি খুঁজতে লাগি। কিন্তু কোন চাকরি পাই না।
অন্যদিকে মায়ের খুব অসুখ, ছোট বোনটার লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয়। মামা একসাথে সব কিছু পারেন না। তাই আমার এই চাকরিটা খুব প্রয়োজন ছিল তানহা।(কাদো কাদো গলায়)
--আল্লাহো জানে,,
বেইমান প্রতারকদের কি অবস্থা করতে হয়। তোমার পাপের ফল স্বরূপ আজ তোমার এই অবস্থা তানিম।
বুঝতে পেরেছ তো, কারো মন ভাঙলে তার শাস্তি একদিন না একদিন ঠিক পেতে হয়। (তানিম মাথা নিচু করে আছে)
তুমি এখন যেতে পারো. এ কোম্পানিতে তোমার কোন চাকরি হবে না. তোমার চেহারা আমার আর সহ্য হচ্ছে না. প্লিজ লিভ......
তানিম ওর কথা শুনে চলে যেতে লাগল। তানিমের পরিবারের কথা শুনে আমার খুব মায়া লেগে গেল তানিমের প্রতি। হঠাৎ আমি পেছন থেকে তানিমকে ডাক দিয়ে বললাম --------
--এই যে শুনুন, একটু দাঁড়ান....
তানহা আমার ব্যবহারে খুব অবাকই হল---
-- কি ব্যাপার তুই ওকে থামতে বললি কেন.? (তানহা)
-- ম্যাম. আমি বলছিলাম কি তানিম কে চাকরি টা দিয়ে দিন।
--তোর মাথা ঠিক আছে মেহমেদ? এই ছেলেটা আমার সাথে প্রতারণা করেছে.
আর তুই বলছিস ওকে চাকরি দিতে।
--ম্যাম ও যাই করুক না কেন. ওর জন্য ওর পরিবার সাফার করবে..?
এটা তো ঠিক নয়... প্লীজ ম্যাম ওকে চাকরি টা দিয়ে দিন..
--আই এম সরি মেহমেদ..
আমি তোর রিকুয়েস্ট রাখতে পারলাম না। এই ছেলেটাকে আমি সহ্য করতে পারছি না,
সেখানে ওকে চাকরি দেওয়ার তো কোন প্রশ্নই আসে না..
-- ম্যাম প্লিজ. বোঝার চেষ্টা করুন.
তানিম অপরাধ করেছে কিন্তু তার জন্য ওর পরিবার তো শাস্তি পেতে পারে না.
--আমি তো ওর পরিবারকে কোন শাস্তি দিচ্ছি না।
-- তানিমের এই চাকরীটার উপর ওর পরিবারের ভবিষ্যৎ ডিপেন্ড করছে. ওর ছোটবোনের ভবিষ্যৎ ডিপেন্ড করছে. ওর অসুস্থ মা.....
প্লিজ বোঝার চেষ্টা করুন...
-- কিন্তু..........







--প্লিজ ম্যাম প্লিজ. আমার জন্য.....
তানহা আমার কথা শুনে কিছুক্ষণ ভাবল। ভাবার পর তানিমকে বলল --****
-- মিস্টার তানিম. তোমাকে এই চাকরিটা দেওয়া হলো।
--থ্যাংক ইউ ম্যাম(তানিম)
-- আমার বাড়ির সামনে একটা কুকুর আসলেও তাকে ফিরিয়ে দেই না।
তোমাকে ঠিক সেই দয়া' টাই করলাম। আর হ্যাঁ, এই যে দেখছো মেহমেদ. ওর রিকুয়েস্টই তোমাকে চাকরিটা দিয়েছি.
মেহমেদ আমার হবু বর. (কথাটা শুনেই আমি ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম)
কিছুদিন পর আমরা বিয়ে করছি. কথাটা আগে তোমাকেই জানালাম।
চলে এসো বিয়ে দিন। দুমুঠো ডাল ভাত খেয়ে যেও। সরি সরি,
বিয়ে বাড়িতে তো আর ডাল ভাত রান্না করা হয় না। পোলাও গোশতই খেয়ে যেও।
অবশ্য তোমার যা আর্থিক অবস্থা, তাতে ফ্রিতেই খাইয়ে দেবো। তোমায় আর হাতে করে গিফট আনতে হবে না।
তুমি এখন যেতে পারো...
কথাটা বলেই তানহা মুখ ফিরিয়ে নিল। আর তানিম এতগুলো অপমানমূলক কথা মুখবুজে সহ্য করে আস্তে করে চলে গেল। কিই বা বলত ও..?
তানিম রুম থেকে বের হয়ে যেতেই তানহাকে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম----
-- হবু বর মানে? কি সব বলেছেন আপনি তানিমকে..?????
আপনার মাথা ঠিক আছে???
--তানহা মুচকি মুচকি হাসছে..
--আশ্চর্য এতে হাসার মত কি বললাম?
আপনি তানিমকে বললেন কেন, আমি আপনার হবু বর?? কিছুদিন পর আমার বিয়ে করছি??
-- তানহা এখনও মুচকি মুচকি হাসছে.
--আশ্চর্য তো, আপনি এখনও হাসছেন??
বলুন এ কথাটা কেন বললেন ওকে..?
--কেন? আমাকে যদি তোর বিয়ে করতে হয়. করবি না আমায় বিয়ে..?
ওর মুখের কথাটা শুনে থমকে গেলাম আমি। কি বলছে মেয়েটা? আমার কাছে যেন মেঘ না চাইতে জল. কিন্তু যে পরিস্থিতিতেও কথাটা বলেছে আদৌ ও সিরিয়াস কিনা এ বিষয়ে আমার সংশয় আছে।
--কি সব যাতা বলছেন আপনি? দেখুন আমাকে টেনশন- এ ফেলবেন না.
--আরে তুই এত চাপ নিচ্ছিস কেন?
ওকে জাস্ট জেলাস ফিল করার জন্য কথাটা বললাম?? এটুকুই.....
কথাটা শুনেই মনের মধ্যে কেমন যেন একটা হতাশা চলে এলো। সত্যি সত্যি যদি ও বলতো যে ও আমাকে বিয়ে করতে চায়।
তাহলে বোধহয় আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম এই মুহূর্তে।
--ও. আমি তো ভেবেছিলাম....
-- কি ভেবেছিলি তুই?? (মুচকি হেসে)
-- কিছু না..
--আচ্ছা চল. অনেক ক্ষুদা লেগেছে. রাতও হয়েছে অনেক।
আজকে তো আর তেমন করে ঘুরতে পারলাম না। চল বাইরে গিয়ে কিছু খেয়ে নিই।
--জি চলুন.
আমরা দুজনেই বাইরের একটি খোলা রেস্টুরেন্টে খেতে বসলাম। তানহা আর আমি একই সাথে বসলাম। ও ঠিক আমার সামনে আমাকে দেখেই শুধু মুচকি মুচকি হাসছে।
তবে আমার খুব নার্ভাস ফিল হচ্ছে ওই হাসি দেখে। কিন্তু মেয়েটা যে এত সুন্দর করে হাসে চোখটা ফিরাই কি করে আমি..??






--আচ্ছা বল কি খাবি?
--যা অর্ডার করবেন তাই খাব.
--তাই বুঝি?( গালে হাত দিয়ে মুখে হাসি নিয়ে)
যেভাবে প্রতিনিয়ত মেয়েটা আমার সাথে এরকম আচরণ করছে। যেন ও আমার গার্লফ্রেন্ড।
হঠাৎ করে বৃষ্টি চলে এলো। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশে আর চারিদিক বৃষ্টির শব্দে মুখরিত।
-- ইস. কি সুন্দর বৃষ্টি দেখেছিস।।।
--বৃষ্টি আবার সুন্দর হয় কিভাবে??
--আরে হয়, তুই জানিস না....
চল না ভিজি।।
-- আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে. রাত্র কটা বাজে??
এ সময় আপনি বৃষ্টিতে ভিজবেন??
--- আরে রাত দিনে কি আছে..?
বৃষ্টিতে তো যখন তখন ভেজা যায়। আমার না দারুন লাগে।
--দেখুন রাত বিরাতে বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লেগে যাবে. পরে ট্যুরে এসে বিছানাই হবে আপনার খাগড়াছড়ি।।
-- আরে ধুর কিচ্ছু হবে না একটু ভিজলে...
চল ভিজি একসাথে।।
-- দেখুন আমার এসব বৃষ্টিতে ভেজা টেজার অভ্যাস নেই।
--তাহলে তুই থাক. আমি ভিজি...
কথাটা বলেই এক সেকেন্ডও দেরী করলো না। সোজা বৃষ্টির মধ্যে বাইরে চলে গেল তানহা।
বৃষ্টিতে ভিজে ওকে যেন আরো সুন্দর লাগছে। সে এক অপরূপ সৌন্দর্যময়ী তানহা।
বৃষ্টিতে পাগলের মতো ঘুরছে। বৃষ্টির ফোটা ফোটা জল অনুভব করছে ও।
চুল গুলো একদম ভিজে গেছে। শাড়িটাও । এ অবস্থায় যেন পরীর মত লাগছে তানহাকে।
খুব ইচ্ছে করছিলো ওর হাতটা ধরে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজি। ওকে কোলে তুলে নেই। ওর মুখের এলোমেলো চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দেই। ওর নরম গালে আলতো করে হাতটা দিয়ে -ওকে স্পর্শ করি। কপালে একটি ভালবাসার চিহ্ন এঁকে দেই। আর হৃদয়ে থাকা ওর জন্য ভালোবাসার অনুভুতিগুলো ওকে জানিয়ে দেই।
আমি দুচোখ ভরে ওকে দেখছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টির মধ্যে ও মাটিতে লুটিয়ে পড়ল.......
ওর পড়ে যাওয়া দেখে আমি দৌড়ে ওর কাছে ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখলাম ও অজ্ঞান হয়ে গেছে।
ওকে সাথে সাথে কোলে তুলে নিয়ে ডাকতে লাগলাম--
-- ম্যাম. ম্যাম কি হয়েছে আপনার? ম্যাম প্লিজ উঠুন. ম্যাম....
কত ডাকলাম। তারপরেও উঠলো না। আমার খুব ভয় লাগছিল। ওর জটিল কোনো অসুখ হলো না তো??
বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতে হঠাৎ করে কেন পড়ে গেল তানহা..? আমি চার পাঁচ না ভেবে ওকে কোলে তুলে নিলাম..
সোজা হোটেলে ওর রুমে নিয়ে গেলাম। তিন ঘন্টা পর ওর জ্ঞান ফিরলো। জ্ঞান ফিরতেই ও তাকিয়ে দেখে আমি পাশে বসে আছি।
ওর জ্ঞান ফিরতে দেখেই খুব আগ্রহের সাথে প্রশ্ন করলাম---
-- কি হয়েছে আপনার..? কেমন আছেন এখন..?
--হুম. ভালো আছি.
--আপনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলেন কেন...?কি হয়েছিল..?
--বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হঠাৎ মাথাটা ঘুরতে লাগল.
তারপর আর কিছু মনে নেই। অজ্ঞান হয়ে যাই..
আমাকে এখানে কে নিয়ে এসছে..?
--আমি নিয়ে এসেছি আপনাকে এখানে..
--ও. খেয়েছিস কিছু??
-- আপনাকে এ অবস্থায় রেখে আমি খেতে পারি??
--অনেক রাত হয়েছে তো.. এবার কিছু খেয়ে নেয়।
-- প্রথমে আপনি খেয়ে নিন.. আপনার জন্য খাবার অর্ডার দিয়েছি.... এখনি চলে আসবে...
তানহা একটু উঠে বসতে চাইলো। আমি ওকে সাহায্য করলাম উঠতে।
উঠেই ও দেখল যে ওর কাপড় কেউ চেঞ্জ করে দিয়েছে। ও যে শাড়ি পড়েছিল সেই শাড়ি ওর গায়ে নেই.. ওর গায়ে অন্য একটি কাপড়... তৎক্ষণাৎ খুব রাগী কন্ঠে আমাকে প্রশ্ন করল----
--মেহমেদ. আমার কাপড় কে চেঞ্জ করেছে..?
--ম্যাম আপনি এখন কথা বলবেন. আপনার শরীর খারাপ...
-- তুই আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে.( খুব রেগে)
-- ম্যাম........
--ঠাসসসসসস........( তানহা আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিল)
আমি নিজের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তানহা যে আমার গায়ে হাত তুলতে পারে, সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
তানহা খুব রেগে রেগে বলছিল--










-- দূর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে....
তুই যে এতটা জঘন্য কাজ করবি, এতটা নিচু মনের কাজ করবি- সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি....
আমি শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে কথা শুনছিলাম। আর চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছিল।
ওর আঘাতটা অতটা জোরে ছিল না। কিন্তু না জানি কেন বুকটা ফেটে যাচ্ছে ওর এই আচরনে।
--তোকে আমি কত ভালো জানতাম.
কত পরিষ্কার মনের মানুষ ভাবতাম তোকে।
কিন্তু তুই যে এমন একটা কাজ করবি আমার সাথে, আমি ভাবতেও পারিনি।
বেরিয়ে যা আমার রুম থেকে। জাস্ট গেট লস্ট....
( চিৎকার করে)
আমি চাইলে ওর এই আচরণের প্রতিবাদ করতে পারতাম। কিন্তু জানি এখন কোন লাভ হবে না ওর সাথে কথা বলে।
ও খুব রেগে আছে।
আমি নিশ্চুপ হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই মিস শায়লার মুখোমুখি হলাম।
আমার চোখে পানি দেখে প্রশ্ন করল ---
--মিস্টার মেহমেদ.. আপনি কাঁদছেন কেন?? কি হয়েছে??
আমি মিস শায়লার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে চলে আসতে লাগলামম। পেছন থেকে মিস শায়লা ডাকছিল আমায় কিন্তু তার কথায় কোন কর্ণপাত না করে আমি চলে গেলাম।।
মিস শায়লা ব্যাপারটা জানতে তানহা রুমে ঢুকলো--
-- ম্যাম. আসতে পারি??
-- কারো আসার দরকার নেই আমার রুমে. বেরিয়ে যান এখুনি...(খুব রেগে)
মিস শায়লা না গিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল। তানহা দেখে বলল ---
--আপনাকে না বলেছি চলে যেতে. কি জন্য এসেছেন এখানে???
--ম্যাম স্যরি..
কিন্তু একটি বিষয় জানার খুব ইচ্ছে করছে...
--আপনার ইচ্ছা অনিচ্ছা আপনার কাছেই রাখুন।
আমাকে প্লিজ একা থাকতে দিন.
জাষ্ট লিভ মি এলন.. (চিৎকার করে)
--ম্যাম. মিস্টার মেহমদকে দেখলাম কাঁদতে কাঁদতে আপনার রুম থেকে বেরিয়ে যেতে।
কিছু কি হয়েছে আপনাদের মাঝে??
তানহার রেগে চুপ করে আছে....











-- ম্যাম..
প্লিজ। বলুন কি হয়েছে আপনাদের মাঝে?
কেন মিস্টার মেহমেদ কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেল...
-- মেহমেদ যে এরকম একটা কাজ করতে পারবে
আমি কল্পনাও করতে পারিনি??
--কি করেছেন মিস্টার মেহমেদ???
-- ও আমার সাথে এমন একটা কাজ কি করে করতে পারল...?( ওদিক ফিরে)
--ম্যাম প্লিজ আমাকে বলুন কি করেছে মিস্টার মেহমেদ..??
এবার মিস শায়লার দিকে তাকিয়ে তানহা বলল--
-- মেহমেদ আমার পারমিশন না নিয়ে আমার.....( কথাটা বলেই থেমে গেল তানহা)
-- আপনার কি ম্যাম? বলুন..
--ও আমার পারমিশন না নিয়ে আমার কাপড় চেঞ্জ করেছে..(খুব রেগে)
কথাটা শুনে মিস শায়লা খুব অবাক হলেন। অবাক দৃষ্টিতে তানহা কে প্রশ্ন করল --
--কি বলছেন কি ম্যাম?
তারপর আপনি কি করেছেন মিস্টার মেহমেদ এর সাথে???
--ওকে একটা চড় মেরেছি... (ওদিক ফিরে)
-- কিহ...
ম্যাম আপনি কি করলেন এটা?
-- কি করলাম মানে?
ও এমন একটা জঘন্য কাজ করল আমার সাথে আর আপনি বলছেন কি করেছি??
-- ম্যাম আপনি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছেন.
বড্ড বড় ভুল করে ফেলেছেন
-- কি বলতে চাইছেন মিস শায়লা??
আমি ওকে থাপ্পর মেরে ভুল করেছি??
-- হ্যাঁ ম্যাম.
আপনি ওকে থাপ্পর মেরে ভুল করেছেন..
কারণ মিস্টার মেহমেদ আপনার কাপড় চেঞ্জ করে নি, আপনার কাপড় চেঞ্জ করেছি আমি।
তানহা মিস শায়লার মুখে এই কথাটা শুনে এবার রীতিমত সক্ড হল।
--কি বলছেন কি মিস শায়লা?
মেহমেদ আমার কাপড় চেঞ্জ করে নি.(অবাক হয়ে)
-- না ম্যাম,
মেহমেদ আপনার কাপড় চেঞ্জ করেন নি। আপনি যখন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন, মিস্টার মেহমেদ আপনাকে রুমে এনে আমাকে ফোন করে।
ফোন করে এখানে আনায়। তারপর আপনার শাড়ি ভেজা দেখে আমাকে বলেন যে আপনার শাড়িটা চেঞ্জ করে দিতে।
তারপর উনি হোটেল থেকে ডাক্তার নিয়ে এসে আপনাকে দেখান। ডাক্তার আপনাকে একটা ইনজেকশন দেন।
তারপর তিন ঘন্টা পর আপনার জ্ঞান ফিরে। এই তিন ঘন্টা মিস্টার মেহমেদ আপনার পাশেই বসে ছিল।
মিস শায়লার মুখে কথা গুলো শুনে তানহা বিছানায় বসে পড়ে। চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। নিজেকে খুব অপরাধী মনে করছে এখন।
--এটা আমি কি করলাম মিস শায়লা?
কি করলাম আমি??(কেদে কেদে)
-- ম্যাম....








--মেহমেদ কি আমায় কখনো মাফ করতে পারবে?
--ম্যাম. আপনি হয়তো মিস্টার মেহমেদের গালে চড় মেরেছেন.. কিন্তু জানেন উনার আঘাতটা কোথায় লেগেছে????
উনার আঘাতটা বুকে লেগেছে ম্যাম...
--আমি এখন কি করবো মিস শায়লা??
আমি কি করে পারলাম একটি মা মরা ছেলের গায়ে হাত তুলতে??
আমি কি করে পারলাম??( কাঁদতে কাঁদতে)
--ম্যাম নিজেকে সামলান
--আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবোনা.. কখনো না....
--ম্যাম নিজেকে কন্ট্রোল করুন..
আপনি মিস্টার মেহমেদ এর কাছে যান। উনার কাছে ক্ষমা চান।
আমার বিশ্বাস উনি আপনাকে ফিরিয়ে দেবেন না।
তানহা শুধুই কাঁদছে।।
--আমি পারবো না এই মুখ নিয়ে ওর সামনে দাঁড়াতে মিস শায়লা..
আমি পারবো না। ও আমাকে ক্ষমা করবে না।
-- মিস্টার মেহমদকে আমি যতটা কাছ থেকে দেখেছি.
উনি ওরকম মানুষই নন।
উনার মনটা খুব ভালো। আপনি ওনার কাছে যান। উনি আপনাকে নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দেবেন।
-- আর যদি ক্ষমা না করে.??
-- আমার বিশ্বাস উনি আপনাকে ক্ষমা করে দেবেন..
আপনি প্লিজ যান।।
-- কোথায় মেহমেদ? কোথায় আছে ও?
--আমিতো আসার সময় দেখলাম কাঁদতে কাঁদতে উনি বাগানের দিকে গেলেন.
তানহা কথাটা শুনেই দৌড় দিয়ে বাগানের দিকে গেল।
আমি বাগানে দাঁড়িয়ে আছি। বাগানটা পুরো খালি। অবশ্য এত রাতে কেউ বাগানে থাকার কথা ও না।
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি এক দৃষ্টিতে। চোখটাও আজকাল আমার কথা শুনে না। আমার অনুমতি ছাড়াই কেঁদে দেয় অযথা।
বুকের বাম পাশটা আজ খুব ব্যথা করছে। বড্ড বেশি। আমি লক্ষ করেছি। যখনই প্রিয়জনের কাছ থেকে আঘাত পাই, তখনই বুকটা খুব ব্যথা করে।
আজ আম্মুর কথা বড্ড বেশি মনে পড়ছে। এ কদিন তানহার সাথে যতদিন ছিলাম, আম্মুকে একটু কমই মিস করেছি, বলতে গেলে মিসই করিনি।
কারণ তানহা আমার সব কষ্টগুলো মুছে দিয়েছিল। আমার যত্ন নেয়া, আমার ভালো মন্দের খেয়াল রাখা, ঠিকমতো খাওয়ার খবর রাখা, সব।
কিন্তু আজ ও আমাকে এমন একটা অপবাদ দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, যা আমি কখনও কল্পনাও করিনি। নিজেকে খুব একা লাগছে। এখন বড্ড একা,
এসব কথা ভাবতে ভাবতেই চোখটা ঢেকে গেল নোনা জলে.. গাল বেয়ে ফোটা ফোটা পানি পড়ছে। এই চোখের পানি আমার একাকীত্ব আর কষ্টের প্রকাশ করছে.....
হঠাৎ কেউ একজন আমার সিনাতে হাত দিল। মুখ ঘুরিয়ে দেখি তানহা অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছে। আর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। আমি ওকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।
ও আমার দু গালে আলতো করে হাত দিয়ে আমার মুখ ফিরিয়ে আনল ওর মুখের দিকে।। হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে চোখের পানিগুলো মুছে দিল।
কাঁদো কাঁদো গলায় বলতে লাগল --
--সরি রে. আই এম রিয়েলি সরি.
আমি বুঝতে পারিনি।।
--আমি চুপ করে আছি
--প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে.
প্লিজ মেহমেদ মাফ করে দে। আর কখনো তোর সাথে এমন করব না। প্রমিস...
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে শুধুই কাঁদছি.ও আমার গালদুটো এবার শক্ত করে ধরে বলল --
--দেখ আমার দিকে তাকা,
দেখ আমিও কাঁদছি। প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে। আমি বুঝতে পারিনি।
আসলে তখন মাথা ঠিক ছিল না। তুই ছাড়া ওখানে কেউ ছিল নাতো,
তাই মাথা গরম করে তোকে কি না কি বলে ফেলেছি। তোর খুব লেগেছে না রে??
বল, লেগেছে তাই না???
ওর কথাগুলো শুনে আমার খুব বেশি কান্না পাচ্ছিল। তাই মুখ ফিরিয়ে ঘুরে গেলাম।
কিন্তু ও আমার সামনে এসে আবার কাঁদো কাঁদো গলায় বলতে লাগল --
--কিরে তুই এখনো রেগে আছিস আমার প্রতি??
আমায় ক্ষমা করবি না??
দেখ, আগে যখন তুই অন্যায় করতে আমি কিন্তু তোকে ক্ষমা করে দিতাম। তুই কিন্তু আমার সাথে ঠিক করছিস না।
আমি চুপ করে আছি কি বলবো বুঝতে পারছি না।
-- আচ্ছা ঠিক আছে,
এই কানে ধরলাম আর কক্ষনো তোর সাথে এমন করব না প্রমিস....
এবার ক্ষমা করে দে..( দু কানে হাত দিয়ে)
আমি এবার ওর দিকে তাকালাম। ওর এই কান্না মাখা চেহারাটা দেখে আমার বড্ড মায়া লেগে গেল ওর প্রতি।










যেন আমার সমস্ত অভিমান হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। আমি ওর কান থেকে হাত দুটো ছাড়িয়ে বললাম ---
--মাফ চাওয়ার কি আছে. আপনি যা করেছেন ঠিক করেছেন..
আপনার জায়গায় আমি থাকলে তাই করতাম।
--দেখ একদম ঢং করবি না আমার সামনে..
আমি জানি, তুই আমার জায়গায় থাকলে এটা করতি না। তুই খুব ট্যালেন্টটেড..
আমি জানি আমি ঠিক করিনি। অন্যায় করেছি। এবার বল মাফ করেছিস কী না...
--বললাম তো.. মাফ করার কিছু নেই.
-- দেখ তুই যদি আমায় মাফ না করিস আমি কিন্তু এবার সত্যি সত্যি কেঁদে দেব..
--এতক্ষন কেঁদে আপনার চোখের পানি ফুরোয়নি?? (একটু হেসে)
--না ফুরোয়নি..
তুই মাফ না করলে আমি কিন্তু এবার সত্যিই কেঁদে দেব (বাচ্চা মেয়ের মত)
--আচ্ছা ঠিক আছে.
মাফ করেছি। হয়েছে??
--লক্ষী ছেলে( আমার নাক টেনে)
আমায় জড়িয়ে ধরবি না.. (হাতদুটো বাড়িয়ে দিয়ে)
সত্যিই খুব ইচ্ছে করছিল ওকে জড়িয়ে ধরার। মেয়েটাকে এতোটাই ভালোবেসেছি, যে ওর দেওয়া সমস্ত কষ্ট গুলো হাসিমুখে সহ্য করে নিতে পারব এখন।
তাই আর বেশি না ভেবে হালকা করে জরিয়ে ধরলাম ওকে। আমার মনের মাঝে যেন কালো মেঘগুলো সরে গিয়েছে। আলাদা প্রশান্তি চলে এসেছে মনে।
--- মেহমেদ...
-- হুম,
--তোর খুব লেগেছে না রে..?
--একটু লেগেছে...বুকের মধ্যে...
-- আমি সরি রে.. আর কক্ষনো হবে না.
--আর কতবার সরি বলবেন..?
হয়েছে তো....
তানহা এবার খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে আমায়। ওকে বুকের মাঝে পেয়ে আমার সমস্ত কষ্ট গুলো ভুলে গেছি। এভাবে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে ছিলাম আমরা একে-অপরকে।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ কাশির আওয়াজ দিল। আওয়াজ শুনেই তানহাকে হুট করে ছেড়ে দিলাম। চেয়ে দেখি আফসার ভাই। আফসার ভাই কে দেখে সে কি লজ্জায় যে পড়েছিলাম, তা বলে বুঝাতে পারব না..
-- হঠাৎ আফসার ভাই বলে উঠলো....
চলবে....

Post a Comment

0 Comments