নতুন করে প্রেমে পড়ার গল্প//notun kore premer porar golpo
নতুন করে প্রেমে পড়ার গল্প:- ভালো থেকো
বনানী মেইন রোড পাড় হতে গিয়ে দেখে একটি ছেলে রাস্তার মাঝ বরাবর দিয়ে টলতে টলতে যাচ্ছে আর তার মুখোমুখি উল্টো দিক থেকে একটা চলন্ত ট্রাক আসছে অথচ সেদিকে কোনো হুঁশ নেই ছেলেটির, সে যেন মরতেই চায়!
বনানী ছেলেটিকে বাঁচাতে ছুটে গিয়ে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয় তাকে !
____
দুবছর আগের কথা।
সুনীল আর আঁখির অনেক দিনের সম্পর্ক। সুনীল আঁখি কে ভালোবাসে আঁখিও সুনীলকে ভালোবাসে। কিন্তু আঁখি বড্ড আবদার করা মেয়ে। রোজই তাকে কিছু না কিছু কিনে দিতে হবে। আর এই কারণেই তাদের সম্পর্ক একদিন শেষ হয়ে যায়।
সুনীল গরীব ঘরের ছেলে। কলেজে পড়ে এখনো আর টিউশন পড়িয়ে যা টাকা পায় তাই দিয়ে মা, বোন নিয়ে সংসার চালায় আর প্রেমিকার নিত্যনৈমিত্তিক আবদার মেটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সবসময় তা হয়ে ওঠে না। আঁখি কি একটিবারও বুঝতে পারে না সুনীলের অসুবিধার কথা?
রোজ তাহলে কি করে এতটা বায়না করতে পারে সে!
না দিতে পারলে আবার রাগ। কিন্তু এই ব্যাপারটা সুনীলকে আহত করত। মাঝে মাঝে মনে হতো ওর ভালবাসার কোনো দাম নেই যেন আঁখির কাছে। আঁখি শুধু টাকা কে ভালোবাসে। কিন্তু সুনীল আঁখি কে অত্যন্ত ভালোবাসে তাই ভালোবাসার মানুষ কে সে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। অথচ আঁখি!
একদিন সুনীল আর আঁখি রবিবার বিকেলে দেখা করতে এসে বসে আছে পার্কে হঠাৎ করেই আঁখি বলে ওঠে, আচ্ছা সুনীল, রোজ রোজ পার্কে না বসে একটু সিনেমা দেখাতেও তো নিয়ে যেতে পারো, নাকি সেই পয়সাও নেই তোমার?
অপমানিত বোধ করেও সুনীল ঠান্ডা স্বরে বলে, এই তো কিছুদিন আগে সিনেমা দেখলে আবার আজ বলছ একথা?
– শোনো আমি তোমার মতো এত লোয়ার মিডিল ক্লাস পরিবারের মেয়ে না, অনেক টাকা আমার বাবার তাই তোমার মতো এত গরীবপনা আমি নিতে পারছি না।
সুনীলের নিজেকে মেরুদণ্ড হীন মনে হয়। কেন সে আঁখির সব খারাপ খারাপ কথা মুখ বুজে সহ্য করে? ভালোবাসা কি এতটাই অন্ধ! হায় রে!
– আচ্ছা তুমি কি আমাকে ভালোবাসো আঁখি?
-কেন বাসবো না শুনি?
পড়ুনঃ- একতরফা ভালোবাসার গল্প- কলেজের সেই মেয়েটি
– না একেকসময় মনে হয় তুমি আমাকে ভালোবাসো না খুব একটা!
– কেন মনে হয়, ও ও বুঝেছি, আমি সবসময় এটা ওটা চাই বলে, বাবা, বললেই হয় সোজাসুজি, গরীব ছেলে হয়ে না প্রেম করার স্বপ্ন দেখো না কেমন! আগে বড়লোক হয়ো তারপর প্রেম করতে এসো। এখন টাকা ছাড়া কিছু হয় না বুঝেছ!
এই বলে উঠে চলে যায় আঁখি। সুনীল আটকায় না তাকে। আঁখির এত অবহেলা, তার সাথে আঁখির এমন অমানুষিক ব্যবহার এর পরেও সুনীল প্রচন্ড ভালোবেসেছিল আঁখি কে।
প্রচন্ড রকমের কষ্ট হতো তার আর ভাবত যাকে সে এত ভালোবাসে তার কাছে তো সুনীল ফেলে দেওয়া ঠোঙার থেকেও মূল্য হীন। কষ্টে ,যন্ত্রণায়, অবহেলায়, অপমানে বুক ফেটে যায় তার, তবুও সে ভালোবাসায় অন্ধ, তার ভালবাসা যে আকাশের মতো খাঁটি তাই শত কষ্টের পরেও তার হৃদয়ে একটাই নাম, আঁখি।
অনেক দিন ধরে আঁখি সুনীলের সাথে কথা বলেনি, ফোন ধরেনি। অবশেষে আঁখি নিজেই দেখা করতে আসে।
সুনীলকে চেনা যাচ্ছে না। পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব, পড়াশোনার চাপ, চাকরির জন্য অক্লান্ত চেষ্টা আর সবশেষে পাগলের মতো ভালোবাসে যাকে তার কাছে হতকুৎসিত ব্যবহার সুনীলের সুন্দর, মায়াবী মুখ টা বিবর্ণ করে তুলেছে, চেহারাতেও ছাপ পড়েছে তার। সুনীল অভিমানী কন্ঠে বলে, আঁখি তুমি কেন আমার সাথে এমন করছ, কতবার তোমাকে ফোন করেছি খেয়াল আছে তোমার!
হুম করেছ তো আমি কি করবো! অবজ্ঞা সূরে বলে ওঠে আঁখি।
আচ্ছা আঁখি, তুমি তো প্রথমে এমনটা ছিলে না!
এমনটা ছিলাম না বলতে কি বোঝাতে চাইছ! ও ও আচ্ছা এবার বুঝলাম, তোমার কাছে আমি বায়না, আবদার করি আর তাই তুমি এসব কথা বলছ, বেশ তো তোমার যখন এতোই সমস্যা তখন আমি তোমাকে ব্রেক আপ করে দিচ্ছি।
সুনীল আঁখি কে ভালোবাসে ঠিক কিন্তু আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নয়। সে নীরব হয়ে চেয়ে থাকে।
শুধু বলে, তুমি কিসের পেছনে ছুটতে গিয়ে কি হারালে তা তুমি আজ বুঝবে না আঁখি কিন্তু এমন একটা দিন ঠিকই আসবে, যেদিন পৃথিবীর সবকিছু পেয়েও তোমার মনে পড়বে এই আমি টার কথা। তুমি ভালো থেকো।
আঁখির চলার পথে উদাস ভাবে তাকিয়ে থাকে সুনীল।
পড়ুনঃ- প্রেমের গল্প- বিবাহ-অভিযান
প্রচন্ড ভাবে ভেঙে পড়ে সে। কারণ আঁখি তাকে ভালো না বাসলে সে তো আর আঁখির মতো ছিল না। হৃদয়ের সবটুকু জুড়ে শুধু আঁখি ছাড়া আর কেউ ছিল না।
পড়াশোনায় বা কর্ম ব্যস্ত থেকে সে যতটা সম্ভব ভোলার চেষ্টা করত আঁখিকে কিন্তু ভোলা তো দূরে থাক, বারবার তীব্র ভাবে বিদগ্ধ করত পুরোনো স্মৃতি গুলো।
এইসব ভাবতে ভাবতে নেশায় চুর হয়ে যায় সুনীল। যে ছেলে সামান্য কোনো নেশা পর্যন্ত করত না সেইই কিনা আজ মদের গ্লাস খালি করে দিচ্ছে একটার পর একটা।
আর তারপরেই সেখান থেকে বেরিয়ে টলতে টলতে হাঁটতে শুরু করে রাস্তায়। কোনো হুঁশ নেই তার। কি করছে, কোথা দিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই।
হঠাৎ নেশার ঘোরে একটা তীব্র ধাক্কা অনুভূত হয়েই অচেতন হয়ে যায় সুনীল।
বনানী কোনোরকমে সুনীল কে বাঁচিয়ে তাকে ডাকতে থাকে।
এই যে শুনছেন। হ্যালো। শুনছেন।
সাড়া নেই তবে ক্ষীণ স্বরে একটা নাম যপে চলেছে ছেলেটা ” আঁখি “। তাই দেখে বনানী নিজের ব্যাগ থেকে জল বের করে চোখে মুখে ছেটায়। ততক্ষণে সেখানে কিছু লোকজন এসে হাজির হয়েছে। বনানী তাদের কাছে সাহায্য চায়। কিছু লোক সুনীল কে দেখে চমকে উঠে বলে, আরে এ তো সুনীল! ও এখানে কি করছে!
বনানী দেখে উপস্থিত অনেকেই এই ছেলেটা কে চেনে। কি যেন নাম, হ্যাঁ সুনীল।
সুনীলের জ্ঞান ফেরে একসময়। সে চোখ মেলে দেখে তার মাথা একটা অচেনা , অজানা মেয়ের কোলে। আর তাকে ঘিরে রয়েছে কিছু লোক।
সুনীল এর মাথায় কিছু ঢোকে না, সে কি হয়েছে মনে করতে না পেরে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনই বনানী বলে, আপনি এখন কোনো কথা বলবেন না। সোজা আপনার বাড়ি যাবেন। উঠুন আস্তে আস্তে।
আমি কোথায়? বলে সুনীল।
আপনি অ্যাক্সিডেন্ট করার জন্য নেশা করে মাঝরাস্তা দিয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো হাঁটছিলেন। উঠুন বলছি। বনানী কড়া স্বরে বলে এবার।
সুনীল আস্তে আস্তে ওঠে কোনোরকমে। কিছু লোক বলে, ইস! ভালো ছেলেটার কি অবস্থা! সত্যিই কি দিনকাল এসে গেল গো! খারাপ গুলো কি সুন্দর দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে আর সুনীলের মতো ছেলেদের…!
পড়ুনঃ- প্রেমের যন্ত্রণার গল্প
বনানী ওই লোকগুলো কে উদ্দেশ্য করে বলে, আপনারা কি ওনাকে ওনার বাড়িতে পৌঁছে দিতে পারবেন? নাকি আমি…
না না মা, আমরা ওকে ওর বাড়ি দিয়ে আসব। তবে তোমাকে অনেক ধন্যবাদ, তুমি আজ যদি তখন ওভাবে ওকে না টেনে নিতে তাহলে হয়ত…
তুমি সাবধানে যাও মা। আমরা সুনীল কে নিয়ে চলে যাবো।
বনানী আর বাকিদের কথা কানে যেতেই সুনীল আস্তে আস্তে বলে ওঠে, আমি চলে যেতে পারব একাই, কাউকে যেতে হবে না।
একদম চুপ করুন আপনি! আপনি এখনো যে নেশার ঘোরে আচ্ছন্ন তা আমাদের কারোর বুঝতে বাকি নেই। আপনি ওনাদের সাথেই ফিরবেন। ধমক দিয়ে বলে বনানী।
এরপর সুনীল কে নিয়ে ফিরে যায় ওই লোকজনেরা আর বনানীও ফিরে যায় ওর পথে।
সুনীল সকালে ঘুম থেকে উঠে সবকিছু জানতে পারে মায়ের কাছে। মা বুক ফাটা কান্না নিয়ে বলে, এ তুই কি করছিলিস বাবা, আমি কি তোর কেউ নই ! তোর কিছু হলে আমার কি হবে একবারও ভাবলি না তুই!
মা কে জড়িয়ে ধরে সুনীল কাঁদে। সত্যিই তো, এ সে কি করছিল! ছিঃ ছিঃ। আর নয়। এবার আঁখি কে জীবন থেকে পুরোপুরি ভুলে যেতে হবে।
কিন্তু যত চেষ্টাই করুক, ভোলা কি অত সহজ। ভুল করে ভালোবেসে ফেলা যায় কিন্তু ভুল করে ভুলে থাকা যায় না!
এরপর কাকতালীয় নাকি ভাগ্যবশত বহুবার দেখা হতে থাকে সুনীলের সাথে বনানীর। তবে এমন ভাবেই দেখাটা হয় যাতে কথা হওয়া সম্ভব হয় না।
তবুও একদিন কথা হলো তাদের মধ্যে। বনানী কে সুনীলের ভাল করেই মনে আছে। সেদিন হঠাৎ করেই মুখোমুখি দুজনের দেখা। বনানীই প্রথম কথা বলে।
পড়ুনঃ- কয়েক লাইনের টুকরো প্রেমের গল্প
-ভাল আছেন তো?
-হুম। আপনি?
-হুম আমিও ভালো আছি।
-ভাল থাকার চেষ্টা সবসময় করবেন কেমন। একদম ভেঙে পড়বেন না কোনো অবস্থাতেই।
বনানীর এই কথাটা শুনে ওর দিকে সুনীল চেয়ে থাকে উদাস ভাবে। মনে মনে ভাবে মানুষ কত ধরণের ই না হয়। কেউ ভালোর আড়ালে খারাপ কেউ খারাপের আড়ালে ভালো। কেউ চেনার আড়ালে পর আবার কেউ অচেনার আড়ালে আপন।
হ্যালো। কি ভাবছেন? বলে ওঠে বনানী।
না না তেমন কিছু না। সুনীল হালকা হেসে বলে।
এরপর আস্তে আস্তে বনানী ও সুনীলের মধ্যে খুব সুন্দর একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হ্যাঁ বন্ধুত্বই। সুনীল চায় না আর কাউকে ভালবাসতে। সে আঁখি কে ভুলতে পারবে না কারণ তাকে সে ভালোবাসে এখনো। কিন্তু আঁখি তার হৃদয় টাকে পুরো টুকরো করে দিয়েছে, তাই ওকে ভুলে গিয়ে নতুন করে আবার কারোর প্রতি ভালোবাসা জন্মানো খুব কঠিন। আর অপ্রিয় লাগলেও কথাটা তো সত্যি যে প্রেম ভালোবাসার চেয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অনেক বেশি শক্তিশালী ।
তাই সুনীল সেই শক্তিশালী সম্পর্কের বাঁধন দিয়েই বনানী কে আগলে রাখবে।
কিন্তু বনানী কখন নিজের অজান্তেই যে সুনীলকে ভালোবেসে ফেলে তা সে বুঝতেই পারে না। তবে তার মনে একরাশ দুঃখ জমে অভিমানের রূপ নেয়। সুনীল যে এখনো আঁখি কে ভুলতে পারেনি, ওকে যে এখনো মনে মনে ভালোবাসে। আর তাই তো বনানীকে পুরোপুরি বন্ধুই ভাবে। কোনোদিনও হয়তো ওকে সুনীল ভালোবাসবে না। একতরফা ভালোবাসা হয়েই হয়ত থাকবে বনানীর হৃদয়ে থাকা প্রথম ভালবাসা টা।
ভালো থাকতে নয়, ভালো রাখতে ভালোবাসা হোক বা বন্ধুত্ব করতেই বনানী এসেছে সুনীলের জীবনে। সুনীল যদি বন্ধুত্ব নিয়ে ভালো থাকে তো থাক না, তাই হবে। সুনীলের ভাল থাকাতেই তো বনানীর ভাল থাকা। ও না হয় মনে মনে ভালোবেসে যাবে চিরটাকাল, যেখানে থাকবে না পাওয়ার আশা, থাকবে না কোনো প্রকাশ, থাকবে না চোখে চোখ রেখে বলা, আমি তোমাকে ভালবাসি সুনীল। শুধুই বন্ধুর মতো…
চোখ কে ভিজতে দেয় না বনানী।
এই বন্ধুত্বই বা কম কিসের, সুনীলের মন খারাপ বা কষ্টের দিনে ওর পাশে থেকে ওকে সাহস দেওয়া, ওর পাশে থেকে ওকে লড়াইয়ের জন্য মোটিভেট করা আবার উল্টো দিকে সুনীলও বনানীর মনে কি চলছে ওর মুখ দেখেই বুঝে যায়, যেন কতদিনের চেনা। শুধু বুঝতে পারে না একটা কথাই যেটা হলো বনানীর হৃদয়ে সুনীলের জন্য থাকা ভালবাসা।
এছাড়াও দুজনের মধ্যে ছেলেমানুষী, হাসি ঠাট্টা, একে অপরের সাথে ছোটদের মতো ঝগড়া, রাগ, অভিমান, শাসন, খেয়াল রাখা, অধিকারবোধ সবটাই আছে।
বনানী খুব খুশি, সুনীল আগের থেকে এখন অনেক ভালো আছে দেখে।
পড়ুনঃ- প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার গল্প
একদিন বিকেলে সুনীল চুপ করে বসে আছে পার্কে বনানী ওর পাশে দাঁড়িয়ে বলে, সুনীল কি হয়েছে চুপচাপ কেন?
আঁখি কে খুব মনে পড়ছে জানো বনানী। ওর সাথে এই পার্কেই আসতাম দেখা করতে।
তুমি আঁখি কে এখনো ভালোবাসো তাই না? বুকে কষ্ট চেপে রেখে এই কথাটা বলে বনানী।
আমি বুঝতে পারি না ঠিক। ওকে আমি ভুলতে পারবো না কিছুতেই। ওকে আমি সত্যিই খুব ভালোবাসতাম বিশ্বাস করো, আজকেও ওকে ঘৃণা করতে পারি না আমি। ওর ভালবাসার সত্যি মিথ্যে আমি জানি না কিন্তু আমার ভালোবাসা টা তো মিথ্যে ছিল না তাই আজও বড় কষ্ট হয় ঐ পুরোনো স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলে।
সুনীল আপন মনে বলে যাচ্ছিল কথাগুলো, বনানী চুপ করে স্মিত হাসি মুখ নিয়ে শুনছিল। মনে যাই থাক সুনীলের জানতে হবে না। ভালোবাসা মানে পাওয়ার আশা নয়, ভালো রাখার চেষ্টা। সুনীল যদি আঁখি কে পেয়ে ভাল থাকে তাহলে তো সেটাই বনানীর কর্তব্য, করা উচিত।
তাই সে সুনীলের কাছ থেকে ছলে বলে কৌশলে আঁখির ঠিকানা নিয়ে নেয়। আর আঁখির বাড়ি যায় সুনীল কে না জানিয়ে।
প্রথম দিন দেখা হয়না তার সাথে। কিন্তু পরেরবার আঁখির সাথে বনানীর দেখা হয়ে যায়।
কিন্তু এ কোন আঁখি! সুনীলের বলার সাথে তার যে কোনো মিল নেই। সে সুনীলের সাথে সম্পর্ক ভেঙে নতুন একজনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছিল যে ছিল বিরাট হায়ার ক্লাস, বিরাট বড়লোক। আঁখি যা চাইত তাই দিত কিন্তু আঁখি কে সম্মান কখনো দিত না সেই ছেলে। এক দেহলোভী প্রেমিকের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে আঁখি এখন।
বনানী সবটা শোনার পর আঁখি বলে, আমি এখন বুঝতে পারছি আমি অনেক ভুল করেছি। আমি সুনীলের সাথে অন্যায় করেছি, ওর কাছে আমি আবার ফিরে যেতে চাই বনানী। আমি ওকে খুব ভালোবাসি। সুনীলের মতো ছেলে সত্যিই এখন পাওয়া মুশকিল আর আমি পেয়েও তাকে হেলায় হারাচ্ছি। না না আর নয়।
বনানীর বুকটা আরো ভেঙে যায়। সুনীলও আঁখি কে এখনো ভালোবাসে আর আঁখিও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাহলে তার তো দুজনকে মিল করিয়ে দিয়ে বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে গেল।
মনকে মানিয়ে নেয় এটা ভেবে যে এতে সুনীল ভালো থাকবে।
বনানী তাই আঁখি কে নিয়ে যায় সুনীলের সামনে। সুনীল আঁখি কে এতদিন পর দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায়। একদৃষ্টে চেয়ে থাকে আঁখির দিকে।
আঁখি বলে, আমি তোমাকে ভালবাসি সুনীল, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও আর ফিরে আসতে চাই আমি তোমার কাছে।
সুনীল চুপ করে চেয়ে আছে দেখে বনানী মুখ ঘুরিয়ে নেয় কষ্টে। ও তো জানে একটু পরেই সুনীল আঁখি কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলবে, আমিও তোমাকে ভালবাসি আঁখি।
অনেকক্ষণ পর নীরবতা ভঙ্গ করে সুনীল গম্ভীর গলায় বলে ওঠে, আমি জীবনে একজনকেই চাই, সারাজীবনের জন্য আর সে হলো ” বনানী “
আঁখি ও বনানী দুজনেই চমকে ওঠে, বিশেষ করে বনানী। সুনীল এসব কি বলছে।
সুনীল বলতে থাকে, আমি বনানী কে ভালোবাসি। আমার প্রতি বনানীর ভালবাসার কাছে তোমার প্রতি আমার ভালবাসা হেরে গেছে। আমি আমার কাছ থেকে কোথাও যেতে দেবো না বনানী কে। আমি অন্যায় করছি দিনের পর দিন। আমি বনানী কে কষ্ট দিয়েছি বারবার আর ও নীরবে সব সহ্য করেছে। কিন্তু একটা সময় পর অপরাধীও নিজের অপরাধ বুঝতে পারে। অতীত আঁকড়ে বেঁচে থাকা ঠিক নয়।
জীবনকে জানতে চাইলে পেছনে তাকানো উচিত আর জীবনে বাঁচতে গেলে সামনে তাকানো উচিত। সময়ের সাথে সাথে আমার সাথে তোমার সম্পর্ক বদলে গেছিল আর সময়ের সাথে সাথে যে সম্পর্ক বদলে যায় সেখানে ভালোবাসা নয়, প্রয়োজন থাকে। তোমাকে দোষারোপ করা হয়তো উচিত নয় কিন্তু তোমার অন্যায় গুলো তো আর অস্বীকার করতে পারি না আঁখি । তুমি আমাকে যেভাবে দিনের পর দিন অপমান করেছ, আমার ভালোবাসা কে পায়ে মাড়িয়ে দিয়ে সেগুলো তো তুমি চাইলেও আর ঠিক করতে পারবে না।
তুমি ফিরে যাও আঁখি আর আমাকে যার জন্য ছেড়ে গেছিলে তার সাথে ভালো থেকো। আমি বনানীকে ভাল রাখতে চাই ওকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই।
তুমি ভালো থেকো…।।
গল্পের প্লটে রয়েছে যার ভাবনা-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ- নষ্ট ভালোবাসা গভীর প্রেমের গল্প- অভিযোগ
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
নতুন করে প্রেমে পড়ার গল্প। পুনরায় ভালোবাসার গল্প। 1 new bengali love story.
from ছাড়পত্র https://ift.tt/12YMwr4
via IFTTT
0 Comments