ভালো হাসির গল্প। মজার গল্প। 1 awesome funny story in bengali.

আজকের ভালো হাসির গল্প টিতে রয়েছে কিছু বই ছিঁচকে আর বই চোরের কীর্তি কলাপ। গল্পটি পছন্দ হলে জানাবেন কিন্তু!

ভালো হাসির গল্পঃ- ‘পটলা কোম্পানি আর বীশু চোর’

লোকে বলে চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনী। বিশু চোর চুপ করে রাঙা দিদার লক্ষীর পাঁচালী পড়া শোনে। আর ভালো ভালো মিষ্টি, মন্ডা গুলো খেয়ে নেয় আমাদের আগে। আমরা প্রতিবাদ করেছি অনেক বার। কিন্তু প্রসাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাঙা দিদা কৃপণতা করবে কেন? যে আগে আসবে সেই পাবে।

বাপি বললো ” তাই বলে একটা চোরের সাথে আমাদের তুলনা!”
রাঙা দিদার যুক্তি ” আমার গোপাল নোনী চোর তো। চুরি করে ধরা পড়লে তবে সে দোষী। তোরা বা কোথায় সাধু পুরুষ , তোরা তো লোকজনের বাড়ির পিয়ারা, আম চুরি করো। ”

আপ্পু প্রতিবাদ করে। ” গাছ কারো সম্পদ হয় কি করে। মানুষ পাঁচিল তুলে দিলেই জমি তার হয় গেলো। কিন্তু বাতাস আলো ছাড়া ফল ফুল আসবে কি করে। সুতরাং গাছের ফলের ওপর সবার অধিকার আছে।”

ভালো হাসির গল্প
ভালো হাসির গল্প

রাঙা দিদা বললো “সে অত যুক্তি তর্ক জানি না বাপু। গাছের ফল না হয় প্রকৃতির সম্পদ। অমিতের মায়ের আচার চুরি করা , পড়ার বইয়ের নিচে গল্পের বই চুরি করার বেলায়! তখন, তখন তোমরা কি চোর হয়ে যাও না। তাছাড়া যে অন্যায় করে, আর যে অন্যায় করায় তারা সমান দোষী। আগের বছর , সরস্বতী পূজাতে বীশুকে দিয়ে নিপেন বাবুর সব ফুলের টব গুলো চুরি করিয়েছিল সেটাকি আমি জানি না। তোরা সব চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।”

বীশু সব কথা শুনে হিহি করে হাসতে থাকলো।
আপ্পু হঠাৎ ডিগ বাজি খেয়ে বলে উঠলো ” সেটা ঠিক সেটা ঠিক। চুরি তো সবাই করে, নেতা মন্ত্রী সবাই। রাঙা দিদা লুডু খেলাতে চুরি করে। সান্তা পিসি রা ভোরে উঠে ফুল চুরি করে। কিন্তু বীশু দা সৎ চোর। অলোক দের বাড়িতে লাউ চুরি করেছে কিন্তু নীচের থেকে অর্ধেক নিয়েছে।”

বীশু লজ্জায় লাল হয়ে ” হুঁ আপ্পু দাদা বাবু আমার যতটুকু দরকার অতটুকু নিয়েছি আসলে।”
আপ্পু বলল ” জানি জানি তুমি খুব উপকারী চোর। নয়তো পাড়ার পুজোতে বলি বন্ধ করতে , আমাদের কথা মতো পাঠা চুরি করার ঝুঁকি তুমি নিতে?”

রাঙা দিদা বললো” মানে এটা তোদের কান্ড ছিলো, চোরে মায়ের বড় গলা। তোরা তারমানে কতো অপরাধী আমার ঠাকুর দালানে তোরা উঠবি না। পূজার পাঠা চুরি ষড়যন্ত্র করেছিলি তোরা। হায় কপাল “

আমি আর চুপ থাকতে পারলাম না বললাম ” হুঁ পাঠা চুরি করেছিলাম ভালো করেছি। বলি দিলে মা কিভাবে খুশি হয়। পাঠা টাতো মা কালির সন্তান। চুরি করে আমরা কোনো অপরাধ করি নি। নেতারা দেশের সম্পদ চুরি করে তবুও তাদের কেউ অপরাধী বলে না। আমরা ভালো কাজ করেও অপরাধী। তাছাড়া তুমি বললো না ঈশ্বরের ইচ্ছে ছাড়া কিছুই হয়না। তাই তো আমরা সেই দিন বলির পাঁঠা চুরি করতে পেরেছি।”

রাঙা দিদা আমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, ঘরে চলে যেতেই। আমি আপুকে বললাম ” কি ব্যাপার বলতো হঠাৎ বীশুদার সুখ্যাতি করছিস । কোন কাজ আছে।”

আপ্পু বললো ” চুপ পরে বলছি।”
কিন্তু বীশু দার কানে কথাটা চলে গেলো। বীশুদা লুকোচুরি না করে আগে বললো” ‌কি দরকার, আমাকে তেল দিচ্ছো।”

আপ্পু আমতা আমতা করে , বলল ” ঐ একটা জিনিস দেখাতে চাই। ওদিকে দেখো।”

আমরা দেখলাম পল্টূ মামা। দুই বড় বড় ব্যাগ ভর্তি করে বই নিয়ে রিক্সা থেকে নামলো।

মজার গল্প
মজার গল্প

বীশু বললো ” কি দেখার আছে পল্টু দা শহর থেকে ফিরছে।”
আপ্পু বললো ” আজকের তোমার টার্গেট। “
বীশু বললো ” ধরো আজ অন্য জায়গায় যাবো ভাবছি। ওর ঘরে কি পাবো। তাছাড়া পাড়ার মধ্যে আমি চুরি করি না। আমরা হলাম বংশ পরম্পরায় চোর ডাকাত।”

সেটা ঠিক বীশুদার ঠাকুরদা মস্ত ডাকাত ছিলেন। চিঠী দিয়ে ডাকাতি করতে যেতো। ওর বাবা গনেশ সিঁধেল চোর ছিলো বড় মাপের। ইঁদুরের মত গর্ত খুঁড়ে ঠিক রান্না ঘরে ঢুকে খাবার দাবার খেয়ে পালিয়ে যেতো বিড়ালের মতো। বীশু যদিও ছিঁচকে চোর। লাউ শাক, সবজি ওসব চুরি করে। গ্রামের মানুষ ওগুলো এমনিতেই দিয়ে দেয়। কিন্তু চোরের ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ও চুরি করে।

আপ্পু কেন সবাই জানে বীশু খেতে ভালবাসে। ও বলল ” ভালো বুদ্ধি দিলাম শুনলে না তো। শহর থেকে এসেছে, ভীম নাগের সন্দেশ, জয় নগরে মোয়া, কে সি দাশের রসগোল্লা, গোলবাড়ির কসা মাংস, অনাদীর মোগলাই নিয়ে এসেছে। আজ না গেলে পাবে নাকি!”

পড়ুনঃ- দারুণ কমেডি হাসির গল্প 

বীশুর চোখটা জ্বলজ্বল করে উঠলো। আপ্পু বুঝতে পরে গেলো ও টোপ খেয়েছে। “ও বললো কমিশন হিসেবে আমাদের জন্য কয়েকটি বই চুরি করে আনবে।”
আমাদের ও ডান করে যেতেই, আপ্পু বললো” এক ঢিলে দুই পাখি। মাধ্যমিক সামনে বলে বইমেলায় যাওয়া হয়নি, তাই নতুন বই পেয়ে যাবো, আবার আজ ও রাঙা দিদার বাড়িতে চুরি করতো। আজ দিদা পায়েস করেছে আর সাথে চম চম। আমরা রাতে সাবার করবো। ওর নামে দোষ হবে।

রাতে হাজির হলাম যখন তখন রাঙা দাদুর গলা শুনতে পেলাম। কাকে যেনো বলছে। ” পায়েস কি এমনি দেবো ভালো করে পা টা টেপ।”
ওকি দিয়ে দেখি। বীশুদা পা টিপে দিচ্ছে রাঙা দাদুর।

awesome funny story in bengali
awesome funny story in bengali

আমরা হতাশ হয়ে ফিরলাম। সকাল বেলায় বীশু দা কে দেখে রেগে আমরা বলে উঠতে যাবো কিছু তার আগেই ও আমাদের হাতে একটা করে মোটা বই ধরিয়ে দিলো। তারপর নিজে থেকেই বলতে শুরু করলো রাতের গল্প – “পল্টু দার নাকি সে রাতে খাওয়া দাওয়া হয় নি পয়সা ছিলো না তাই। অতো বই সে কেনে নি চুরি করেছে। বীশু এমনিতে ভাল মানুষ। তার উপর যখন শুনেছে পল্টু দাও বই চোর। তখন ওর শরীরে দয়া এলো। চোর হলেও ও মানুষটা সৎ তাই নিজের জন্য চুরি করবে, কিন্তু পল্টু দার জন্য নয়। তাই রাঙা দাদুর পা টিপে পল্টু দাকে সে পায়েশ খাইয়ে এসেছে। তবে আমাদের জন্য ও সে বই চুরি করে এনেছে।
পল্টু দাও চোর শুনে আপ্পু বাপি থ!

আমি গভীর গলায় বললাম “মারকুস জুসাকের ‘বুক থিফ’ পড়েছিস, লেসলি সেখানে বইচোর। বই চুরিটা কোন অপরাধ নয়। “
তারপর বীশুদার দেওয়া বইটা খুলে মাথায় হাত। এতো রান্নার রেসিপি বই। আপ্পুরটা আইন শাস্ত্র। বাপির হিসাব শাস্ত্র।
বাপি হতাশার সাথে বললো ” মোটা বই হলেই ভালো বই হয় না। সেটা কি ও মাথা মোটা জানে! এই জন্য বলি বই চোর হতে গেলে শিক্ষিত হতে হয়।’

মানব মণ্ডল

গল্পের ভাবনায়-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ- 
কল্প বিজ্ঞানের গল্প- পটলা কোম্পানির গোয়েন্দাগিরি  

আধুনিক ছোট গল্প-৪২০ কাজের মেয়ে 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)



from ছাড়পত্র https://ift.tt/zOclJgR
via IFTTT

Post a Comment

0 Comments