#Secret_Agent_OF_NSI
#পর্ব_৬
১টার দিকে আপুর বাসার ( আমার হবু শ্বশুরবাড়ির) উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।। ৩০ মিনিট পরে সেখানে পৌঁছে গেলাম।।
তারপর বিয়ের পর্ব শেষ করা হলো।।পরে সবাই খেতে বসে পড়ল।।
আমার জন্য আবার স্পেশাল খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।।
বুঝেনই তো সাওরানার খাবারটা তো একটু আলাদা হবেইআমি আর বন্ধুরা মিলে সেই খাবার খেলাম।।
তারপর মাওলানা সাব দোয়া করলেন আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হওয়ার উদ্দেশ্যে।।
এখন বিদায়ের পালা,নেহা সে কি কান্না শুরু করে করে দিলো আসার সময়।।
যেখানে আমার সান্ত্বনা দেওয়ার কথা সেখানে আমিই আগে এসে গাড়ীতে বসে আছি।।
এই বিষয়টি দেখে সবাই অবাক যে জামাই বউকে রেখেই গাড়ীতে বসে আছে।।
পরে নেহাকেও গাড়িতে উঠিয়ে আমার পাশে বসিয়ে দিলো।।
তারপর গাড়ী তার আপন গতিতে চলতে লাগলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।।
আমাদের সাথে আপুও আসলো আমাদের বাসায়।।ভাগ্নিরা আগেই চলে এসেছিলো।।
আর সেখানের সব কাজ আপু আর দুলাভাই কেই দেখতে হয়েছে তাই আজকে এলো।।
বাসায় আসার পর থেকেই সবাই নতুন বউকে দেখা নিয়ে ভিড় জমিয়ে ফেলেছে।।
আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।। পরে বন্ধুদের সাথে ছাদে চলে গেলাম আড্ডা দিতে।।
আড্ডা দিতে দিতে রাত প্রায় ১২টা বেজে গেলো তখন আপু ছাদে এলো।।
আর এসেই আমার সব বন্ধুদের নিচে চলে যেতে বলল, বলল যে আমার সাথে নাকি কথা আছে তাই তারা যেনো নিচে চলে যায়।।তারা চলে যাওয়ার পর আপু আমাকে বলল,,
আপু- দেখ ভাই, তুই যখন যাই চেয়েছিস তাই তোকে দিয়েছি,,কখনো মানা করি নাই।।
তোর দুলাভাইও কখনো তোকে কোনো কিছু চাইলে মানা করে নি।।
কারণ- যদি আজ বাবা- মা থাকত তাহলে তোর সব ইচ্ছা হয়তো আমাদের থেকেও ভালোভাবে পূরণ করতো।।
আমি- হঠাৎ আজকে এইসব কথা বলতেছিস।।তাও আবার এই সময়ে??
আপু- কোনো কারণ ছাড়া নিশ্চয় আর এইগুলা বলছি না।।
আমি- তা কারণটাই তো জানতে চাইছি,,বল কি কারণে এইসব বলছি।।
আপু- শুন আজকে তোকে এই কথাগুলো বলছে ভাবিস না তোকে দয়া করেছি।।
আমি বোন হয়ে কখনো তোকে দয়া করতে পারি না।।বাবা- মায়ের পরে আমার যা দায়িত্ব সেটাই শুধু পূরণ করেছি।।
আর একটা কথা সবসময় মনে রাখবি আমরা চোখে যা দেখি তা সবসময় সত্যি হয় না।।
আমি- আপু কি বলছিস কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।।
আপু- আচ্ছা এখন রুমে যা নেহা একা একা বসে আছে।।
শুন আজকের রাতটা সকল নারী পুরুষ এর হ্মেত্রে একটা স্বরণীয় রাত।।
এমন কিছু করিস না যেনো মেয়েটাকে সারাজীবন কান্না করে কাটাতে হয়।।
আশা করি কি বলেছি তুই বুঝেছিস।।কারণ- আমি জানি আমার ভাইটা এতটাও অবুঝ না,,
সে সবসময় ভালো মন্দ ভেবেই কাজ করে।।আচ্ছা এখন চল তোকে রুমে দিয়ে আসি।।
বলে আপু আমাকে রুমে দিয়ে আসলো।।রুমে গিয়ে দেখি রুমটা খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো।।
কিন্তু যা ফুল দিয়েছে সবগুলাই অতিরিক্ত সুভাষযুক্ত যা আমার একদমই সহ্য হচ্ছে না।।
দাড়িয়ে আছি এমন সময় নেহা এসে আমাকে সালাম করলো।।
নেহাকে যে আমি উঠাবো সেই শক্তিটাও পাচ্ছি না।।ফুলের ঘ্রাণে যেনো আমার সারা শরীর শক্তিহীন হয়ে গেছে।।
যেখানে দাড়িয়ে আছি সেখান থেকে ১ ইঞ্চিও সড়ার শক্তি পাচ্ছি না।।
চোখেও কেমন ঝাপসা ঝাপসা দেখতেছি।।তারপর আর কিছু মনে নাই।।
যখন চোখ খুললাম দেখি যে সকাল হয়ে গেছে আর আমার রুমে কোনো ফুল নেই।।
আমি বিছানায় শুয়ে আছি আর নেহা আমার বুকের উপরে শুয়ে আছে।।
কাল রাতে কি হয়েছিল কিছুই বুঝতেছি না।।যতটুকু মনে আছে আমি তো খাটের থেকে অনেকটা দূরে ছিলাম।।
আমি খাটে আসলা কিভাবে??তারপর এসব ভাবতে ভাবতে নেহাকে আমার বুকের উপর থেকে নামিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।।
ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম।। গিয়ে দেখি সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত।।
আমি আপুকে ডাক দিলাম।।আপু আমার সামনে চলে এলো।।
তখন আমি আপুকে জিজ্ঞাসা করলাম যে আমার কি হয়েছিল??
কিন্তু আপু কিছুই বলল না।।শুধু বলল যে আগামী কয়েকদিন রেস্ট নিতে।।
তারপর আপু জিজ্ঞেস করল যে নেহা ঘুম থেকে উঠেছে কি না??
আমি না বললাম।আপু আরও বলল যে কোনো বিষয় নিয়ে যেনো আমি বেশি চিন্তা না করি।।
বলে আপু আবার চলে গেলো।।তারপর আমি আবার রুমে চলে গেলাম।।
রুমে গিয়ে নেহা ঘুম থেকে উঠে গেছে।।ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে বসে চুল ঠিক করতেছে।।
আমি খাটের উপর শুয়ে মোবাইল ঘাটাঘাটি করছিলাম।।
হঠাৎ একটা মেইল এলো ফোনে।।মেইল ওপেন করার পর দেখলাম যে হেড কোয়াটার থেকে মেইল এসেছে।।
মেইলে লেখা আছে আগামী মাসের ৪ তারিখে আবু ওসমান ইরানে যাচ্ছে একটা ওয়েপেন ডিলিং করার জন্য।।
আর আবু ওসমান এর সাথে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আজমলও সেখানে থাকছে।।
যদি এই ডিলটা হয়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের সামনে অনেক বড় বিপদ এগিয়ে আসছে।।
আর আমাদের এজেন্টদের টিম ৩ দিন পরেই সেখানে যাচ্ছে।।
আমাকেও সেখানে যেতে হবে।।আমি মেইলের রিপ্লাই এ বললাম যে আমি তারা যাওয়ার ২ দিন পর যাব আর আমি সেখানে গিয়েই সব প্ল্যান বলব।।
কিছুহ্মণ পর স্যারের কল এলো,,
আমি- আসসালামু আলাইকুম স্যার।।
চিফ- ওয়ালাইকুম সালাম,, তা ফাহিম শুনলাম তুমি নাকি অসুস্থ।।
আমি- তেমন কিছু না।।কেমন আছেন আপনি??
চিফ- ভালো থাকি কি করে।। ৪ তারিখের ডিলটা আটকাতে পারলে শান্তি।।
আমি- সেদিন কোনো ডিল হবে না।।ডিল হবে ৩ তারিখ বা ৫ তারিখ।।
কারণ- আবু ওসমান ইতি মধ্যেই জেনে গেছে যে তাদের এই ডিলের ব্যাপারটা লিক হয়ে গেছে।।
তাই একদিন আগে বা একদিন পরে ডিল হবে।।
আর সেদিন আবু ওসমান এর সাথে আজমলই ওয়েপেন ডিলিং করতে যাবে।।
এই ডিল কোনো ইরানি মাফিয়ার সাথে হচ্ছে না।।আর আজমল গতকালই ইরানের উদ্দেশ্যে চলে গেছে।।
আজকে মনে হয় সেখানে পৌঁছে গেছে।।সেখানে সে ইরানি মাফিয়া দিলিপের অতিথিশালায় থাকবে।।
আর ডিলটা সেখানেই হবে।।
আর সেখানে ৫০ জন সিকিউরিটি গার্ড থাকবে আজমলকে প্রটেক্ট করার জন্য।।
চিফ- তুমি এতোকিছু কিভাবে জানো??
আমি- যারা আমাকে নিস্ব করে দিয়েছে আমি তাদের খবর রাখব না এটা কি করে হয়।।
আমি তো এই দিনটারই অপেক্ষা করছিলাম।।যেদিন এদের দুইজনকে একসাথে পাব।।
চিফ- বুঝতে পারলাম না কি বলতেছো??
আমি- সময় হলেই বুঝতে পারবেন।।তাহলে আবার টিকিট পাঠিয়ে দিয়েন।।
আমি যেদিন বলেছি তার আগের দিন রওনা দিব।।
আর একটা কথা টিমমেম্বারদের সাথে আপনিও যাবেন সেখানে।।
কারণ- আমি আপনাকে প্ল্যান বুঝিয়ে দিব আর আপনি বাকীদের বুঝিয়ে দিবন।।
কিন্তু কাউকে কখনো বলবেন না যে কে এই FS।। কি তার পরিচয়, কোথায় থাকে সে।।
আর এটাও বলবেন না যে আমি তাদের সাথে থাকব।।
চিফ- ওকে।।
কল কেটে দেখি নেহা আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।।
তাই আমি নেহাকে জিজ্ঞাসা করলাম,,
আমি- কি হলো এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন??
নেহা- আপনার সাথে কিছু কথা আছে।।তার আগে বলুন কাকে বলছেন যে আপনি যে তাদের সাথে আছেন কাউকে জেনো না বলে??
আমি- সবকথা শুনে ফেলল নাকি (মনে মনে)
নেহা- কি এতো ভাবছেন বলুন??
আমি- তোমাকে বলতে যাব কেন?? আর তুমি কি বলবে আমি জানি।।
ডিভোর্স চাইবে তো,, যাতে তোমার প্রেমিককে বিয়ে করতে পারো।।
কিন্তু দুঃখের কথা হলো আমি তোমাকে কখনোই ডিভোর্স দিব না।।
যাকে ভালবাসি তাকে কি করে অন্যের হতে দিব।।আর হাতে কি??
নেহা- কফি এনেছিলাম আপনার জন্য।।আর আপনি ভুল বুঝতেছেন।।আমার কথাটা তো শুনবেন।।
আমি- আমি আর কিছু শুনতে চাই না,, যা বললাম এটি ফাইনাল।।
এখন কফির মগটা দিয়ে এখান থেকে আসতে পারো।।
নেহা কফির মগটা দিয়ে মনটা খারাপ করে চলে গেলো।।
আমিও আপন মনে ফোন চালাতে চালাতে কফিতে চুমুক দিলাম।।
কফির স্বাদটা আজকে ভিন্ন লাগতেছে,,এটা তো কাকি বা লামিয়ার হাতে বানানো কফি না।।
সেই পুরনো স্বাদ বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে।।কফিটা মন মতো হয়েছে।।
আজকে বঊভাতের অনুষ্ঠান আর সেটা অনেক বড় করে আয়োজন করা হয়েছে।।
সব আত্নীয়স্বজনদের দাওয়াত করা হয়েছে।।নেহাও তার বান্ধবীদের দাওয়াত করেছে।।
নিচে নেমে দেখি সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত।।তখন লামিয়াকে ডেকে বললাম খাবার দিতে।।
কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেলো খাবার নিয়ে আসছে না।।
কিছুহ্মণ পর নেহা আমার জন্য খাবার নিয়ে এলো।।আমিও খেতে শুরু করে দিলাম।।
সেই কখন খেয়েছিলাম গতকাল রাতে।।যা ক্ষুধা পেয়েছিলো।।
তাই এদিকে সেদিকে না তাকিয়ে খাবার খেতে লাগলাম।।
বউকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলা বেপি,,কথাটা শুনে খাওয়া বাদ দিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি রিম্পা দাঁড়িয়ে আছে।।
আমি- বেপি আগে খেয়ে নিই পরে কথা বলি খুব ক্ষুধা পেয়েছে।।তুই বসে যা আমার সাথে।।
রিম্পা- না রে আমরা মাত্র খেয়ে আসলাম।।আর তোর দুলাভাই ভাইরে দাঁড়িয়ে তোর কাকার সাথ কথা বলতেছে।।
তা বেপি একা একাই খাইতেছো।।তোমার বউ যে এভাবে তোমাকে খাওয়াচ্ছে তুমি তো তাকে খাওয়ার কথা বলতেছো না।।
আমি- বেপি তুমি ত ঠিকই বললা।।সমস্যা নাই ও খেয়ে নিবে নি পরে।।
রিম্পু - এই নেহা তুইও খেয়ে নে।। এই হাদারাম কখনো মুখফোটে তোকে খেতে বলবে না।।( আসলে রিম্পা নেহারও বান্ধবী)
তারপর রিম্পার সাথে কথা বলতে বলতে খাওয়া শেষ করলাম।।
আমি- তা চলো বেপি দেখি সেই কপালপোড়া কে যে আমার এই বেপিটাকে বিয়ে করেছে।।
রিম্পু- আচ্ছা চল তোকে আলাপ করিয়ে দেই।।তারপর রিম্পু (বন্ধুরা সবাই রিম্পাকে রিম্পু বলেই ডাকি) তার জামাইকে ডাক দিলো।।
তাকে দেখে তো আমি পুরাই অবাক।।কারণ- নেহার সাথে সেদিন পার্কে যাকে দেখেছিলাম এটাই সে লোক।।
রিম্পু- কিরে হাদারাম কোথায় হারিয়ে গেলি।।শুন এই হচ্ছে আরিফ আমার স্বামী আর আরিফ এ হচ্ছে,,,
আরিফ- বলতে হবে না আমি এনাকে আগে থেকেই চিনি।। কিন্তু ইনি হয়তো আমাকে চিনে না।।
ইনি হচ্ছে ফাহিম নেহার স্বামী।। আর তোমার সেই পাগল বেপি।।
আমি- কিরে তুই ওনাকে আমার সম্পর্কে কি বলেছিস।।(রিম্পুকে উদ্দেশ্য করে বললাম)
রিম্পু- আরে ভাই কিছু কই নাই।।ও তোর সাথে মজা করতেছে।।
আমি- সেটা আমি তোকে পরে বুঝাবো।।যা ভাগ এখান থেকে এখন।।
ওনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।।যদি না যাস তাহলে আমাদের মাঝে যা যা হয়েছিলো সব বলে দিব।।
রিম্পু - থাক ভাই মাপ চাই তোর কাছে।।তোর সেই কেলোর কির্তি শুনলে ও পাগল হয়ে যাবে।।
যা বাদরামী করতি তুই,,তা নিয়ে তো আমাদের প্রায়ই ঝগড়া হতো।।
আমি- এইতো গুড সব মনে আছে এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন যা এখান থেকে।।
তারপর রিম্পু চলে গেলো আমিও আরিফকে নিয়ে ছাদে চলে গেলাম।।
সেখানে যাওয়ার পর আরিফ বলল,,
আরিফ - আমি জানি আপনি আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন আর কি বলবেন??
আমি- মানে বুঝলাম না।।
আরিফ- আপনি সেদিনের বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন।।
আসলে সেদিন আমরা তোমার বিষয়েই কথা বলছিলাম।।
আমাদের কথার মাঝখানে হঠাৎ রিম্পুর একটা দরকারী কল আসে তাই একটু সাইডে যায় কথা বলার জন্য।।
তখনও নেহার সাথে তোমার সম্পর্কেই কথা বলতেছিলাম।।
কিন্তু হঠাৎ করে তুমি জানি কোথা থেকে চলে আসো।।
আর আমাদের একটা সাথে দেখে ভুল বুঝো।।সব থেকে বড় কথা হচ্ছে আমি নেহার কাজিন (মামাতো ভাই)।।
আমি- আসলে আমি সেদিন বুঝতে পারি নি।।তাই এমন রিয়েক্ট করেছিলাম।।।
তার জন্য আমি খুবই দুঃখিত,, পারলে হ্মমা করে দিবেন।।
তারপর,,,,,
সবাই ২ টা করে কমেন্ট করিয়েন।।রিচ অনেক কমে গেছে
Tag: Bengali Golpo, Funny Bengali Golpo, Abhela, Golpo, golpo icon.png, golpo holeo shotti, golpo kotha, bangla golpo, bangla romantic golpo, bangla funny golpo, golpo book bangla, bangla mojar golpo book, bangla romantic golpo book, bangla hasir golpo book, golpo boi bangla,
0 Comments