ছদ্দবেশি_মন্ত্রীর_ছেলে পর্ব_৩ (Golpo) Bangali Lyrics Golpo

 


#ছদ্দবেশি_মন্ত্রীর_ছেলে
#পর্ব_৩
তাকিয়ে দেখি আপু,,,
যা আপু আবার কবে এলো এখানে।।আমি আপুর ডাক শুনেও না শুনার ভান করে হাটতে লাগলাম।।
হঠাৎই আপু দৌড়ে এসে আমার সামনে দাঁড়ালো সবাই আপুকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল,,
সবাই- আপু আপনি এখানে??
আপু- এই প্রশ্নটা ত আমার তোরা এইখানে কি করিস,,আর ওর নাকে ব্যান্ডেজ করা কেন??
আমি- আসলে আপু আমরা এখানে ঘুরতে এসেছি।।আর শাওয়ার নেওয়ার সময় হঠাৎই পা স্লিপ করে পড়ে গিয়ে নাকে ব্যাথা পাইছি।।
আপু- কেন জানি তোর কথা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।।
আমি- দুলাভাই দেখেন তো আপু আমাকে শুধু শুধু সন্দেহ করে।।
দুলাভাই- আরে কি করছটা কি তারা এখানে আনন্দ করতে এসেছে তাদের আনন্দ করতে দাও।।কি ওর নাক নিয়ে পড়ে আছো।।
তারপর আমরা আমাদের হোটেলে চলে গেলাম,,,আপুরাও চলে গেলো।।
৭দিন পর,,,,
এখন নাকটা অনেক ভালো আছে।।আজকেই বাসায় ফিরে যাব।।এই ৭দিন অনেক জায়গা ঘুরেছি।।জায়গাগুলাও অনেক সুন্দর ছিলো।।বিকালে আমাদের ট্রেন তাই এখন আমরা আমাদের সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছি।।গুছিয়ে নিয়ে আমরা লাঞ্চ করতে চলে গেলাম।।লাঞ্চ করে কিছুহ্মণ রুমে এসে রেস্ট নিলাম।। পরে নিচে রিসিপশনে এসে বিল পে করে স্টেশন এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।।যথাসময় আমরা স্টেশনে চলে এলাম।।এসে নিজেদের টিকিট বুঝে নিলাম।।পরে নিজেদের সিটে গিয়ে বসে পড়লাম।।নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।।।ভোরের দিকে আমরা যে যার যার বাসায় চলে গেলাম।।নাকের হ্মত সেড়ে গেলেও দাগটা এখনও রয়ে গেছে।।সেটা দেখলেই বুঝা যায়।।বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।।৯টার দিকে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।।মা অনেকবার মানা করেছিল যেতে কিন্তু আমি কোনো মানা না শুনেই চলে এলাম।।আর নাকের কথাও জিজ্ঞাসা করেছিল কিন্তু আমজ বলি নি।।
ভার্সিটি এসে দেখি একটা হারামিও এখনও আসে নি।।মনে হয় সব গুলা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।।
আমাদের আড্ডার স্থানে গিয়ে বসে আছি তখনই আপন ভাই এসে বলল,,
আপন- কি হিরো,,সেদিনের ঘুষিটা কেমন লেগেছে??
আমি কিছু না বলে নিজের মতো হাটতে লাগলাম।।ক্লাসে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে পড়লাম।।শালার একটায়ও আজকে এলো না মায়ের কথাটা শুনলেই ভালো হতো।।আনমনে বসে বসে ভাবছিলাম এইসব কথা।।তখনই আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে ইতি বলল,,
ইতি- কি মিষ্টার ওইদিন একটা ঘুষি খাওয়ার পর ত একসপ্তাহ আপনার কোনো খোঁজই পাওয়া গেলো না।।
তা আপনার শরীরের ধারণ হ্মমতা কি এতটুকুই নাকি??
আমি- আমি কখনো কারও সাথে মারামারিতে যাই না।।(বাস্তবেও ঠিক তাই)আর অকারণে ওনাকে মারার কোনো প্রশ্নই আসে না।।প্রথমত ওনি আমার সিনিয়র,, দ্বিতীয়ত ভুলটা ওনার ছিল আর আল্লাহ বলেছেন-হ্মমা করাই মহৎ গুন।।তাই অযথা ওনাকে মারার কোনো প্রশ্নই আসে না।।ওনাকে আমার বুঝানো দরকার ছিল আমি বুঝিয়েছি।।আর রইল আমার শরীরের ধারণ হ্মমতা ওর মতো দশ আপন মিলেও আমাকে আঘাত করলেও আমার কিছুই করতে পারবে না।।
আর এই একসপ্তাহ আমি সিয়ামদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম।।আসলে আমি কোথাও যেতে পারি না তাই সিয়াম নিজের টাকায় আমাদের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলো।। তা আর কিছু বলবেন কি??
ইতি- না আসলে আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো যদি কিছু মনে না করেন।।
আমি- বলে ফেলুন কিছু মনে করব না।।আর আমরা তো ক্লাসমেট তাই যেকোনো কথা কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলতে পারেন।।
ইতি- আসলে আমরা কি বন্ধু হতে পারি??
আমি- আমার মতো একটা আনস্মার্ট ছেলের সাথে হঠাৎ বন্ধুত্ব করত্ব চাচ্ছেন যে।।
ইতি- দেখুন আমি কে স্মার্ট, কে আনস্মার্ট এইসব দেখে বন্ধুত্ব করি না।।আমি তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করি যারা মানুষ হিসেবে ভালো।।
আমি- তা কিভাবে বুঝলেন যে আমি মানুষ হিসেবে ভালো??
ইতি- ওইদিন আপনি ওই মেয়েটাকে ইভটিজিং এর হাত থেকে বাচিয়েছো।।তাই মনে হলো আর কি??যদি চাও তাহলে বন্ধু হতে পারও না হলে থাক আমি আবার কাউকে জোড় করতে চাই না।।
আমি- আচ্ছা ঠিক আছে আমি আপনার প্রপোজাল গ্রহণ করলাম।।কিন্তু আপনার বান্ধবীরা আমাকে তার বন্ধু হিসেবে মানবে কি??যদি তারা মানে তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।।
ইতি- আমি যখন মেনেছি তখন তারাও মানতে বাধ্য।।
আমি- আচ্ছা ঠিক আছে।।এখন গিয়ে নিজের সিটে বসেন ক্লাসে স্যার চলে আসবে।।।
ইতি- আপনি করে নয় তুমি করে বলবে।।
আমি- আচ্ছা তা পরে দেখা যাবে নি।।
তারপর ইতি তার সিটে বসে পড়ল কিছুহ্মণ পর স্যার ক্লাসে চলে এলেন।।এসে হাজিরা ডাকা শুরু করলেন।। হাজিরা ডাকার শেষপর্যায়ে হারামিগুলা ক্লাসে ডুকল।।স্যারও এদের বাধা দেয় নি।।কারণ- স্যার আমাদের খুব ভালো করেই চিনে।।
তারপর স্যার ক্লাস করিয়ে চলে গেলো।।হঠাৎই ফোনটা ভেজে উঠল।।ফোন বের করে দেখি বাবার পিএ কল।দিয়েছে।।রিসিভ করার পর বলল,যে বাবা নাকি হাসপাতালে কিন্তু কি হয়েছে সেটা বলে নি।।সিয়ামকে নিয়ে হাসপাতালে চলে গেলাম।। গিয়ে দেখি বাবা বেডে শুয়ে আছেন আর ডাক্তার তাকে চেকাপ করছে।। তখন আমি ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলাম যে বাবার কি হয়েছে।।তখন তিনি জানালেন যে কোনো কারণে ওনি খুব চিন্তায় আছেন যার ফলে প্রেশার বেড়ে গেলে।। দুই-তিনদিন রেস্ট নিলে সব ঠিক হয়ে যাবে আর চিন্তার পরিমানটা কমিয়ে দিতে হবে।।তারপর ডাক্তার বলল যে বাবাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারব।।তাই বাবাকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।।কিছুদূর আসার পর জ্যামে পড়লাম।। আর ভাল্লাগেনা এই ঢাকা শহর মানেই জ্যাম।।গাড়ীর গ্লাস নামিয়ে বাইরের দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম।।হঠাৎই চোখ গেলো রাস্তার অপর পাশে থাকা একটি গাড়ীর দিকে।।আর গাড়ীতে ছিলো ইতি আর তার বান্ধবীরা।। আমি তাদের দেখার সাথে সাথেই গ্লাসটা উঠিয়ে দিলাম।।কারণ- গ্লাস কালো থাকাতে আমাকে দেখা যাবে না।।
এদিকে,,ইতিরাও জ্যামে বসে থেকে অবস্থা খারাপ।।আশেপাশে দেখছিল যে জ্যাম কতটুকু লম্বা।।হঠাৎই তারা দেখতে পেলো একটা গাড়িতে ফাহিমের মতো দেখতে একটা ছেলে বসে আছে।।আর গাড়িটা হচ্ছে এই দেশের মন্ত্রীর।। প্রথমে ইতি বিশ্বাস করতে চাচ্ছিল না।।ইতি সিউর হওয়ার জন্য তার বান্ধবীদেরও বলে তারাও দেখে বলে যে এটা ফাহিম।।এখন তাদের মাথায় হাজারটা প্রশ্ন ঘুরছে।।কে এই ফাহিম,,মন্ত্রীর সাথে তার কি সম্পর্ক আর ওনার সাথেই বা ও কি করছে??সকালে কল আসার পরেও দেখলাম পকেট থেকে দামি ফোন বের করল।।আসলেই কি গরীব নাকি অন্যকিছু।।
ভাবতে ভাবতে ফাহিমের গাড়ী সেখান থেকে চলে গেলো।।কিছুহ্মণ পর ইতি আর তার বান্ধবীরা দেখে যে জ্যাম ছূটে গেছে আর গাড়ীটাও দেখে যাচ্ছে না।।তাদের গাড়ীর পিছনের গাড়ীগুলাও বার বার হর্ন দিচ্ছে।।তাই তারা মনে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে নিজেদের চলে গেলো।।এদিকে আমি বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।।পরে সবাই একসাথে বসে দুপুরের খাবার খেলাম।। খাওয়া শেষে বাবা বললেন ওনার সাথে ওনার রুমে যেতে।।আমিও বাবার সাথে বাবার রুমে গেলাম।।তখন বাবা বলল,,
বাবা- দেখো ফাহিম গত সপ্তাহে তোমাদের কলেজে কি হয়েছে।। আমি তার সবই জানি আর এটাও জানি যে ভুলটা তোমার ছিলো না।।।আর তোমাকে অন্যায়ভাবে মারল তুমি কিছুই বললে না।।
আমি- আসলে বাবা হয়েছিল কি,,,,
বাবা- আগে আমি কথা শেষ করি।।তুমি যখন তোমার মাকে কল দিয়েছিলে তার আগেই আমার কাছে খবর চলে আসে যে তোমাদের কলেজে মারামারি হয়েছে আর একটা সিনিয়র ছেলে তোমাকে মেরেছে তাকে তার অন্যায় কাজে বাধা দেওয়ায়।।আর তোমার নাকে ঘুষি মারার পর নাক থেকে রক্ত পড়েছিল পরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে ব্যান্ডেজ করিয়ে ছিলে।। এই বিষয়ে তোমার মা যেনো কিছু জানতে না পারে তাই তোমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাও।।কিন্তু এভাবে কতদিন চলবে বলো তো আমায়??তুমি এখন যতেষ্ট বড় হয়েছো,তাও কেনো বাচ্চাদের মতো কর।।আর তুমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সে তোমাকে মেরেছে।।তাও তুমি কিছু বলো নি বরং তোমার বন্ধুদেরও কিছু বলো নি।।আমি এই বিষয়ে কিছুই তোমার মাকে জানাই নি কারণ- সে এই বিষয় জানতে পারলে চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে যেতো।।
আমি- তুমি ত জানই আমি মারামারি পছন্দ করি না।।আমি চাই সব সমস্যা মারামারি ছাড়াই সমাধান করতে।।তাই সেদিন মারামারি করি নাই।।না হলে তুমি ত জানই যে যে যতবড়ই মাস্তান আর যাই হোক তোমার ছেলের সামনে কিছুই না।।।
বাবা,,,,
দুঃখিত প্রতিদিন গল্প দিতে না পারার জন্য,,,আর সবাইকে ধন্যবাদ গল্পের পর্বের জন্য অপেহ্মা করার জন্য🥰🥰





Tag: Bengali Golpo, Funny Bengali Golpo, Abhela, Golpo, golpo icon.png, golpo holeo shotti, golpo kotha, bangla golpo, bangla romantic golpo, bangla funny golpo, golpo book bangla, bangla mojar golpo book, bangla romantic golpo book, bangla hasir golpo book, golpo boi bangla, ছদ্দবেশি_মন্ত্রীর_ছেলে পর্ব_৩


Post a Comment

0 Comments