বালিশে মাথা দিতেই হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে। হঠাৎ একটা মেসেজের আওয়াজে ঘুমটা ভাঙলো। চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি 11:20 বাজে। মোবাইল হাতে নিয়ে মেসেজ টা পড়তেই মুখের কোনে অজান্তেই হাসি চলে এলো......
""কিরে তুই এখনো ঘুমিয়ে আছিস। তুই না বলেছিলি আজ সময়মতো পৌঁছে যাবি বারোটার আগে? না আসলে কিন্তু মিস করবি খাগড়াছড়ি ট্যুর. জলদি ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি অফিস চলে আয়. অলস একটা....""
তানহা পাঠিয়েছে মেসেজটা। তাই আর দেরি না করে জলদি বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশ রুমে গেলাম। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ঘড়ির দিকে তাকাতে দেখি বারোটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি।
এবার খুব তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে লাগলাম। জলদি কিছু কাপড়চোপড় প্যাকিং করে প্যান্ট-শার্ট পড়ে এক দৌড় বাড়ি থেকে। রাস্তায় ট্যাক্সী নিয়ে সোজা অফিস অফিস। গিয়ে দেখি বাস দাঁড়িয়ে আছে অফিসের সামনে।
আমি সোজা গিয়ে বাসের ভিতরে ঢুকলাম। বাসের ভেতরে ঢুকতেই সবাই আমাকে একসাথে বলে উঠল----
" কংগ্রাচুলেশনস মিস্টার মেহমেদ"
আমি একটু অবাকই হলাম। আমাকে এভাবে স্বাগত জানানোর মানে কি? আমি গিয়ে সোজা আফসার ভাই এর পাশে বসলাম।
-- কি ব্যাপার আফসার ভাই. সবাই আমাকে এভাবে স্বাগত জানালো??
-- 15 মিনিট ভাই 15 মিনিট...
--মানে?
--মানে আর কি? 15 মিনিট. কি হেঁয়ালি করছেন বলুন তো? সোজাসুজি বলুন না কি হয়েছে?
--কালকে ইয়াকুব স্যার আমাদেরকে কড়া কন্ঠে কি বলেছিল জানেন?
-- কি বলেছিল?
-- বলেছিল." খাগড়াছড়ি ট্যুর এর জন্য অফিস থেকে বাস ঠিক 12 টা বাজে ছাড়বে। কেউ যদি বারোটার মধ্যে না আসে তার জন্য এক সেকেন্ডও লেট করা হবে না। সবাইকে বারোটার মধ্যে আসতে হবে".
আপনি কয়টা বাজে আসলেন মিস্টার মেহমেদ? একবার দেখেছেন ঘড়িতে?
-- 15 মিনিট ভাই 15 মিনিট...
--মানে?
--মানে আর কি? 15 মিনিট. কি হেঁয়ালি করছেন বলুন তো? সোজাসুজি বলুন না কি হয়েছে?
--কালকে ইয়াকুব স্যার আমাদেরকে কড়া কন্ঠে কি বলেছিল জানেন?
-- কি বলেছিল?
-- বলেছিল." খাগড়াছড়ি ট্যুর এর জন্য অফিস থেকে বাস ঠিক 12 টা বাজে ছাড়বে। কেউ যদি বারোটার মধ্যে না আসে তার জন্য এক সেকেন্ডও লেট করা হবে না। সবাইকে বারোটার মধ্যে আসতে হবে".
আপনি কয়টা বাজে আসলেন মিস্টার মেহমেদ? একবার দেখেছেন ঘড়িতে?
হাতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি 12 টা 15 বাজে তার মানে 15 মিনিট লেট করেছি। সর্বনাশ করেছে।
-- আমরা হলাম গিয়ে অফিসের সাধারণ কর্মচারী। আমাদের জন্য কি আর বাস 15 মিনিট দাড়াবে। ম্যাডামের কাছের কোন মানুষের জন্যই তো এই সুযোগ বরাদ্দ আছে তাই না। (হেসে হেসে)
--আফসার ভাই.............
--আফসার ভাই.............
--সবই বুঝি. সবই জানি. আমাকে কি কচি বাচ্চা পাইছেন নাকি? মুখে বলে দিলেই তো হয় যে. "আফসার ভাই ম্যাডাম আমার দিল, আমার জান, আমার মনের মানুষ। তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনা করতে পারি না। সে আমার হৃদয়ের মাঝে ঘর করে আছে। আমার অন্তরে তার ছবি আঁকা। আমার ভালোবাসার সেই মানুষটি তানহা, তানহা, তানহা।( হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে)
অমনি পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল বাসের ভেতর তানহা দাঁড়িয়ে আছে। আফসার ভাই একটু হকচকিয়ে গেল। রীতিমত ভয় পেয়েছে।
-- কি ব্যাপার মিস্টার আফসার? আমার নামে কি বলছিলেন? (তানহা)
--কিছু বলছিলাম না ম্যাডাম. আসলে. মানে এই মিস্টার মেহমেদ জানতে চাইছিল আপনি কই? (মাথা নিচু করে)
--কিছু বলছিলাম না ম্যাডাম. আসলে. মানে এই মিস্টার মেহমেদ জানতে চাইছিল আপনি কই? (মাথা নিচু করে)
মুখ ফসকে আমার নামটাই বের হল? কেমনটা লাগে? এরপর তানহা আমার দিকে একটা রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে সবার সামনের সিটে গিয়ে বসলো. অমনি আফসার ভাই আমার সিনাতে একটা ঘুসি মেরে বলল-----
-- ওই মিয়া পিছনে ম্যাডাম দাড়িয়ে আছে। আমাকে বলবেন না। আজ বাজাইছিলেন তো তোমার বারোটা?
-- আরে আমি কি জানতাম না কি? আমি তো দেখি নাই ম্যাডামকে আর আপনি মুখ ফসকে আমার নামটা কেন বের করলেন আর কোন নাম ছিল না?
-- আরে মিস্টার মেহমেদ, আপনি হলেন ম্যাডাম এর খুব কাছের লোক। বলতে গেলে খুব ক্লোজ। আপনার নামে কিছু বললে ম্যাডাম কি রাগ করবে? তাইতো আপনার নামটা দিয়া পাশ কাটিয়ে গেলাম আর কি.. --হুম. সব জায়গায় প্রেমের সাহিত্য বলতে গেলে এইরকমই হবে।
-- হৃদয়ে সাহিত্যে ভরা. প্রেমের গাথা মালা. যেখানে ফুল আছে সেখানে কাটা তো থাকবেই. তবে হৃদয় কে....
-- আরে আমি কি জানতাম না কি? আমি তো দেখি নাই ম্যাডামকে আর আপনি মুখ ফসকে আমার নামটা কেন বের করলেন আর কোন নাম ছিল না?
-- আরে মিস্টার মেহমেদ, আপনি হলেন ম্যাডাম এর খুব কাছের লোক। বলতে গেলে খুব ক্লোজ। আপনার নামে কিছু বললে ম্যাডাম কি রাগ করবে? তাইতো আপনার নামটা দিয়া পাশ কাটিয়ে গেলাম আর কি.. --হুম. সব জায়গায় প্রেমের সাহিত্য বলতে গেলে এইরকমই হবে।
-- হৃদয়ে সাহিত্যে ভরা. প্রেমের গাথা মালা. যেখানে ফুল আছে সেখানে কাটা তো থাকবেই. তবে হৃদয় কে....
---থাক থাক থাক.. খাগড়াছড়ি গিয়ে আপনার সাহিত্য শোনা যাবে. এখন প্লিজ একটু বসুন. (আফসার ভাই কে থামিয়ে দিয়ে)
-- বসলাম. দেখা যাক খাগড়াছড়িতে আবার কোন মুভি দেখতে হয়।
-- মানে??
--মানে বাংলা মুভি আরকি।
( আমি হাসতে লাগলাম উনার কথা শুনে)
ঠিক 12 টা 20 মিনিটে বাস খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল। আমরা 36 জন কর্মচারী আর তানহা সহ মোট 37 জন এই ট্যুরে যাচ্ছি।
তানহা সবার সামনে বসে আছে আর পিছনে কিছু কর্মচারী হাত তালি বাজিয়ে এক তালে সবাই গান গাইছে। অবশ্য তানহার অনুমতি নিয়েই এসব হচ্ছে। অফিসের বস বলে কথা।
হঠাৎ পিয়ন এসে আমাকে বলল.. তানহা নাকি আমাকে ডাকছে.
সিট থেকে উঠতেই আফসার ভাই জানলার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বলল ---
--যান যানন, রাধা কৃষ্ণের প্রেমলীলা না হয় আজকে বাসের মধ্যেই দেখব।
আমি ওনার কথায় কান না দিয়ে একটু হেসে চলে গেলাম তানহার কাছে। গিয়ে ওর পাশের সিটে বসলাম। গিয়ে ওকে দেখে তো আমি প্রায় অবাক।
এত সুন্দর লাগছে আজকে তানহাকে..? একদম ডানা কাটা পরির মত। ঠিক কল্পনার মতো সেজে এসেছে মেয়েটা। আফসার ভাইয়ের ঠেলাঠেলিতে তখন ভালো করে খেয়াল করিনি ওকে। মুখ টা কত মায়া ভরা তানহার। একবার তাকালেই যেন তাকিয়ে থাকতে মন চায়।
হঠাৎ চুটকি বাজিয়ে তানহা বলল ---
--এই যে মিস্টার. কি দেখছেন এভাবে?
--না কিছু না. (মাথা নিচু করে)
-- 15 মিনিট লেট. তোর জন্য আজকে 15 মিনিট লেট করাতে হলো বাসটাকে. অফিসে আমার কতটা ইনসাল্ট হয়েছে বুঝতে পেরেছিস? তুই কোনদিনই একটু সিরিয়েস হলি না। কোনো কান্ডজ্ঞান নেই?
তোকে না বলেছিলাম সময়মতো পৌঁছে যাবি??
-- সরি ম্যাম.( মাথা নিচু করে)
--দেখ. একদম মুখটা গোমরা করে থাকবি না. কি একটা ফেস নিয়ে জন্মেছিস, বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতেই পারি না তোর প্রতি।
--না কিছু না. (মাথা নিচু করে)
-- 15 মিনিট লেট. তোর জন্য আজকে 15 মিনিট লেট করাতে হলো বাসটাকে. অফিসে আমার কতটা ইনসাল্ট হয়েছে বুঝতে পেরেছিস? তুই কোনদিনই একটু সিরিয়েস হলি না। কোনো কান্ডজ্ঞান নেই?
তোকে না বলেছিলাম সময়মতো পৌঁছে যাবি??
-- সরি ম্যাম.( মাথা নিচু করে)
--দেখ. একদম মুখটা গোমরা করে থাকবি না. কি একটা ফেস নিয়ে জন্মেছিস, বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতেই পারি না তোর প্রতি।
কথাটা বলেই মুখটা ঘুরিয়ে বাইরের দিকে তাকালো তানহা। আমি নিচে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছি ওর কথা শুনে।
-- খেয়ে এসেছিস.?
-- জি খেয়ে এসেছি।
-- মিথ্যে কথাটাও ভালো করে বলতে পারিস না। কখন আবার খেলি তুই?
-- মিথ্যে বললাম কই?
--চুপ.. ঘুম থেকে উঠেছিস কয়টায় তুই ? আমি মেসেজ না পাঠালে তো তোর ঘুমই ভাঙতো না. আবার বলছে খেয়ে এসেছে।
কথাটা বলেই ব্যাগের থেকে একটা টিফিন বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিল।
-- নে খেয়ে নে।
-- কি এটা.?
-- আমার কলিজা. খুলে দেখতে পারিস না তুই? (খুব রেগে)
-- কি এটা.?
-- আমার কলিজা. খুলে দেখতে পারিস না তুই? (খুব রেগে)
টিফিন টা খুলে দেখি আমার জন্য ভুনা খিচুড়ি করে করে এনেছে তানহা।
--কিন্তু খাব কি দিয়ে?
খুব জোরে আমার হাতে একটা চামচ ধরিয়ে দিল। যেন রাগে ওর শরীর জ্বলছে। রাগলে মেয়েটাকে এত সুন্দর লাগে যে ওর সৌন্দর্য কে যেন শতগুণে বাড়িয়ে দেয় ওর এই রাগ।
খুব জোরে আমার হাতে একটা চামচ ধরিয়ে দিল। যেন রাগে ওর শরীর জ্বলছে। রাগলে মেয়েটাকে এত সুন্দর লাগে যে ওর সৌন্দর্য কে যেন শতগুণে বাড়িয়ে দেয় ওর এই রাগ।
চার পাচ চামচ খেতেই তানহা জানালার দিকে তাকিয়ে হঠাত বলল--
-- দেখ আমি কিন্তু থাকবো না সব সময় তোর খেয়াল রাখার জন্য. এবার একটু নিজের যত্নের ব্যাপারে সিরিয়াস হ. এরকম খামখেয়ালিপনা জীবন যাপন আর কতদিন??
ওর মুখে এই কথাটা শুনে আমার হৃদয়ে যেন কালো মেঘে ছেয়ে গেল। মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল কথাটা শুনে। আমি খিচুড়িটা না খেয়ে রেখে দিলাম।
--কি হলো. রেখে দিলি কেন,( তানহা)
--আর খাব না.
--আর খাব না.
--খাব না মানে? মাত্র কয়েক চামচ খেলি এর মধ্যেই পেট ভরে গেছে?
-- আমি চুপ করে আছি.
--কি হলো খা.
আমি কিছু না বলে সিট থেকে উঠে পড়লাম। যেই চলে আসব পিছন ফিরে দেখি আফসার ভাই আমাদের ঠিক পেছনের সিটে বসে আছে। কিন্তু উনি তো মাঝখানের সিটে ছিলেন। তাহলে পেছনের সিটে কি করছেন?
নিশ্চয়ই আমাদের কথা লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছিলেন। আমি ওনাকে এড়িয়ে মাঝখানের সিটে এসে বসলাম। কিছুক্ষণ পর আফসার ভাই এসে আমার পাশে বসলেন। শুরু করে দিলেন উনার বকবক ----
--আরে সবই বুঝি বুঝি. এরকম হৃদয়বিদারক কথা শুনলে কি পেটের ক্ষুধা থাকে? মুখে কি আর খাবার যায়?
-- মানে (অবাক হয়ে)
-- আরে ভাই মেহেমেদ. এসব কথা মেয়েরা বলেই থাকে. মেয়েদের বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না. তোমার তো বুঝতে হবে তাই না. এরকম মন খারাপ করলে চলে??
-- আপনি আরি পেতে আমাদের কথা শুনছিলেন? --আমি আসলে তোমাদের ব্যাপারটা বুঝতে পারছিলাম না। তাই পিছনে গিয়ে তোমাদের কথাবার্তা শুনতে চাইছিলাম। সবই শুনলাম, বুঝলাম শুধু একটি জিনিস বুঝতে পারলাম না। ম্যাডাম তোমাকে তুই তুই করে বলছিলেন কেন? ছোটবেলার বন্ধুত্ব নাকি? হঠাৎ ভালোবেসে ফেলেছ তাই না?
-- ওরকম কিছু না..
আফসার ভাই জানালার দিকে মুখ ফিরিয়ে আবার তার সাহিত্য শুরু করে দিলেন----" হৃদয় জ্বলছে তোমার ভালোবাসার দহনে. আমি পুরবো, জ্বলবো, জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাব। তাতে কোনো আপত্তি নেই। শুধু তোমার ভালোবাসা দিও, তাতেই আমি সিক্ত হব প্রেমের মায়াজালে""..
হঠাৎ পিয়ন এসে আমায় বলল --
--স্যার , ম্যাডাম আপনাকে ডাকছে।
যেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু যদি না যাই তাহলে সবাই ভাববে তানহার সাথে আমার কোন সম্পর্ক আছে সে কারণেই আমি ওর কথা মানছি না।
আবার গিয়ে বসলাম ওর পাশে। ও আমার গালে হাত দিয়ে বলল---
-- কি হল রাগ করেছিস আমার কথায়?
ওর এই কোমল স্পর্শ আর এই মিষ্টি কথায় যেন আমার সমস্ত রাগ অভিমান হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তারপরও মুখটা মলিন করে বললাম --
ওর এই কোমল স্পর্শ আর এই মিষ্টি কথায় যেন আমার সমস্ত রাগ অভিমান হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। তারপরও মুখটা মলিন করে বললাম --
--না ম্যাম. আমি রাগ করবো কেন. রাগ করিনি.
-- হুম. তাহলে খাবার শেষ না করে উঠে গেলি কেন?
-- এমনিই..খেতে ইচ্ছে করছিল না
-- খেতে ইচ্ছে করছিল না. নাকি রাগ করেছিস সবই জানি. নে এবার মুখটা খোল। (মুখের সামনে খিচুড়ি নিয়ে)
-- হুম. তাহলে খাবার শেষ না করে উঠে গেলি কেন?
-- এমনিই..খেতে ইচ্ছে করছিল না
-- খেতে ইচ্ছে করছিল না. নাকি রাগ করেছিস সবই জানি. নে এবার মুখটা খোল। (মুখের সামনে খিচুড়ি নিয়ে)
আমি শুধু ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। কি মায়াময় চোখ।
-- কি হলো? তাকিয়ে আছিস কেন? . হা কর.
আমি হাঁ করলাম। তানহা আমায় খাইয়ে দিল।
--ভালো ছেলে. আর কথায় কথায় অভিমান করার স্বভাবটাও তোর এখনো গেল না।
--ভালো ছেলে. আর কথায় কথায় অভিমান করার স্বভাবটাও তোর এখনো গেল না।
তানহা আরেক চামচ নিয়ে যেই আমায় খাইয়ে দেবে অমনি আফসার ভাই এসে এমন ভাবে ডাকা ডাকি শুরু করল যেন মহাপ্রলয় বেধে গেছে---
-- ম্যাডাম ম্যাডাম (চিৎকার করে)
তানহা তো প্রায় ভয় পেয়ে হাত থেকে চামচ টা পড়েই গেল।
--মিস্টার আফসার. আপনার কোন কমন সেন্স নেই? এভাবে কেউ ভয় দেখায়?(তানহা)
--সরি ম্যাম. আসলে
--কি? আসলে কি? (তানহা খুব রেগে)
-- না ম্যাম. আমি আসলে আপনাকে বলতে এসেছিলাম ভেরি নাইস জুটি.
-- মানে. কি বলতে চাইছেন আপনি?
--মানে আবার কি ম্যাম. ভেরি নাইস জুটি. খুব মানিয়েছে আপনাদের.
--মিস্টার আফসার. ভনিতা না করে যা বলার সোজাসুজি বলুন. না আসলে ম্যাম আমি বলতে চাইছি যে আপনার আর মিস্টার মেহমেদের জুটিটা খুব নাইস। আপনাদের দুজনকে ভালো মানিয়েছে।
তানহা তো প্রায় ভয় পেয়ে হাত থেকে চামচ টা পড়েই গেল।
--মিস্টার আফসার. আপনার কোন কমন সেন্স নেই? এভাবে কেউ ভয় দেখায়?(তানহা)
--সরি ম্যাম. আসলে
--কি? আসলে কি? (তানহা খুব রেগে)
-- না ম্যাম. আমি আসলে আপনাকে বলতে এসেছিলাম ভেরি নাইস জুটি.
-- মানে. কি বলতে চাইছেন আপনি?
--মানে আবার কি ম্যাম. ভেরি নাইস জুটি. খুব মানিয়েছে আপনাদের.
--মিস্টার আফসার. ভনিতা না করে যা বলার সোজাসুজি বলুন. না আসলে ম্যাম আমি বলতে চাইছি যে আপনার আর মিস্টার মেহমেদের জুটিটা খুব নাইস। আপনাদের দুজনকে ভালো মানিয়েছে।
আমিতো আসমান থেকে পড়লাম কথাটা শুনে।আফসার ভাই কি পাগল হয়ে গেল নাকি। তানহা সব বুঝতে পেরে বলল--
--মিস্টার আফসার, মেহমেদ আমার ফুফুর ছেলে। আমার কাজিন। আন্ডারস্ট্যান্ড।।
-- ও মাই গড. মামাতো বোনের সাথে প্রেম..( বলেই জিভে কামড়)
--কি? কি বললেন আপনি? (তানহা)
--না ম্যা ম্যা ম্যাম.আমি. আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম, মানে আমি..... (আমতা আমতা করছে)
--মিস্টার অফসার আপনি একটু আগে কি বললেন আবার বলুন।
--ম্যাম আমি সরি. আসলে-আসলে আমার না আমার মামাতো বোনের সাথে প্রেম ছিল আমি ভেবেছিলাম আপনাদের ও ঠিক তাই... (এক টানে বলল কথাটা)
-- ও মাই গড. মামাতো বোনের সাথে প্রেম..( বলেই জিভে কামড়)
--কি? কি বললেন আপনি? (তানহা)
--না ম্যা ম্যা ম্যাম.আমি. আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম, মানে আমি..... (আমতা আমতা করছে)
--মিস্টার অফসার আপনি একটু আগে কি বললেন আবার বলুন।
--ম্যাম আমি সরি. আসলে-আসলে আমার না আমার মামাতো বোনের সাথে প্রেম ছিল আমি ভেবেছিলাম আপনাদের ও ঠিক তাই... (এক টানে বলল কথাটা)
আফসার ভাইয়ের কথা শুনে আমার যেন লজ্জায় মাথা কাটা গেল। লোকটার মুখে কিছু আটকায় না। সব বিড়বিড় করে বলে দিচ্ছে। তানহা খুব রাগী কন্ঠে মিস্টার আফসার কে বলে দিল ----
--মিস্টার আফসার. আপনাকে যেন আর কোন দিন এসমস্ত আজেবাজে কথা বলতে না শুনি. যান নিজের সিটে গিয়ে বসুন।
--জ্বি ম্যামম(মাথা নিচু করে)
--জ্বি ম্যামম(মাথা নিচু করে)
আফসার ভাই সিটে গিয়ে বসে পরলো। ওমনি তানহা আমায় বলল--
-- দেখেছিস লোকটা কি বলে গেল??
-- হুম,দেখেছি। আপনি যেভাবে আমায় খাইয়ে দিচ্ছেন মিস্টার আফসার এর থেকে বেশী আর কি ভাবতে পারে বলুন।
-- শোন, কে কি বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আর তুই বেশি পাকা পাকা কথা বলিস না। নে হা কর।
-- হুম,দেখেছি। আপনি যেভাবে আমায় খাইয়ে দিচ্ছেন মিস্টার আফসার এর থেকে বেশী আর কি ভাবতে পারে বলুন।
-- শোন, কে কি বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আর তুই বেশি পাকা পাকা কথা বলিস না। নে হা কর।
তানহা আমায় খাইয়ে দিচ্ছে। এভাবেই বাসের মধ্যে সারা দিন ওর সাথে গল্প করতে করতে কাটিয়ে দিলাম।
ঠিক 6 ঘণ্টা পর সন্ধ্যা 6 টা 20 মিনিটে খাগড়াছড়ির একটি বড় হোটেলে গিয়ে বাসটা থামলো। সবাই লম্বা জার্নির কারনে অনেক টায়ার্ড। এখন রেস্ট নিতে হবে। তাই যে যার হোটেল রুমে গিয়ে বিশ্রাম নিতে চলে গেল।
তবে আমার রুম টা একদম তানহার রুমের সাথে পরল। তানহা আমার রুমের চাবি আমার হাতে দিয়ে বলল ----
--সারাদিন অনেক ধকল গেছে. এবার গিয়ে একটু বিশ্রাম নে.
-- আচ্ছা. আপনিও গিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন।
-- আচ্ছা. আপনিও গিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন।
এরপর তানহা আর আমি যে যার রুমে চলে গেলাম। হঠাৎ তানহা নিজের রুমে চিৎকার করে উঠল। চিৎকারের শব্দ শুনেই আমি দৌড়ে ওর রুমে চলে গেলাম। রুমে যেতেই ও আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আমি যেন আর আমার মধ্যে ছিলাম না ওর কান্ড দেখে,, এই প্রথম তানহা আমায় এত কাছ থেকে স্পর্শ করল। আমি যেন স্বপ্নের মধ্যে আছি?
খুব ইচ্ছে করছিল দুহাত দিয়ে আমিও ওকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। ওর কপালে একটি ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দেই। আর বলি, "আমি তোমায় ভালোবাসি তানহা, খুব বেশি ভালোবাসি""
আমি আমার স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছি আর ও আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। এবার আমার খুব লজ্জা করছিলো। স্বপ্নের ঘোর থেকে বেরিয়ে এলাম--
-- আরে কি করছেন কি, ছাড়ুন,, ( ওকে ছাড়িয়ে) কি হচ্ছে এসব??
--কি হচ্ছে কি এসব....? (যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না.)
--আপনি আমায় জড়িয়ে ধরলেন কেন?
--কেন তোকে কি জড়িয়ে ধরার অধিকারটুকুও আমার নেই??
-- এসব আজেবাজে কথা রাখুন তো. আগে বলুন এভাবে চিৎকার করে উঠলেন কেন?
-- বাথরুমের ওই তেলাপোকাটা আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিল.....
-- মানে,, আপনি চিৎকার করেছেন তেলাপোকা দেখে??(তাজ্জব হয়ে)
--আমার দিকে কিভাবে তাকিয়ে ছিল জানিস??(যেন ছোট্ট বাবুটা)
--কি হচ্ছে কি এসব....? (যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না.)
--আপনি আমায় জড়িয়ে ধরলেন কেন?
--কেন তোকে কি জড়িয়ে ধরার অধিকারটুকুও আমার নেই??
-- এসব আজেবাজে কথা রাখুন তো. আগে বলুন এভাবে চিৎকার করে উঠলেন কেন?
-- বাথরুমের ওই তেলাপোকাটা আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিল.....
-- মানে,, আপনি চিৎকার করেছেন তেলাপোকা দেখে??(তাজ্জব হয়ে)
--আমার দিকে কিভাবে তাকিয়ে ছিল জানিস??(যেন ছোট্ট বাবুটা)
তানহার মুখে কথাটা শুনেই আমি একটা অট্টহাসি দিয়ে হাসতে লাগলামম। আমার যেন হাসি থামছিলই না ---
--এত হাসছিস কেন? ( মুখটা যেন কেমন করে)
--হাসবো না তো কি করবো,? আপনি যেভাবে চিৎকার করেছেন আমি তো ভেবেছিলাম.......
-- কি ভেবেছিলি..?
-- বাদ দিন..
তা তেলাপোকার বোধহয় আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে। তাই ওভাবে হয়তো তাকিয়ে.......
--এই চুপ...
-- একটা পোকা দেখে কেউ এভাবে চিৎকার করে..?
--তুই জানিস না তেলাপোকাকে আমি কত ভয় পাই? এতগুলো টাকা দিলাম হোটেল ম্যানেজারকে আর সে কিনা আমাকে এই থার্ড ক্লাস রুম দিল..
--থার্ড ক্লাস রুম কোথায়? রুমটা তো ভালোই. খুব সুন্দর..
--থার্ড ক্লাস নয়তো কি? কতগুলো তেলাপোকা ঘরের ভিতরে?? আমি এক্ষুনি গিয়ে হোটেল ম্যানেজারকে এতগুলো কথা শুনে আসব ---
--হাসবো না তো কি করবো,? আপনি যেভাবে চিৎকার করেছেন আমি তো ভেবেছিলাম.......
-- কি ভেবেছিলি..?
-- বাদ দিন..
তা তেলাপোকার বোধহয় আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে। তাই ওভাবে হয়তো তাকিয়ে.......
--এই চুপ...
-- একটা পোকা দেখে কেউ এভাবে চিৎকার করে..?
--তুই জানিস না তেলাপোকাকে আমি কত ভয় পাই? এতগুলো টাকা দিলাম হোটেল ম্যানেজারকে আর সে কিনা আমাকে এই থার্ড ক্লাস রুম দিল..
--থার্ড ক্লাস রুম কোথায়? রুমটা তো ভালোই. খুব সুন্দর..
--থার্ড ক্লাস নয়তো কি? কতগুলো তেলাপোকা ঘরের ভিতরে?? আমি এক্ষুনি গিয়ে হোটেল ম্যানেজারকে এতগুলো কথা শুনে আসব ---
বলেই চলতে লাগলো আর অমনি আমি ওর হাতটা ধরে নিজের কাছে টান দিয়ে নিয়ে এলাম. ওর আর আমার মধ্যে মাত্র চার আংগুলের ফারাক। ও আমার এতটাই কাছে যে ওর নিঃশ্বাসটা আমার গলায় এসে পড়ছে।
এর আগে কখনো ওকে এত কাছ থেকে দেখিনি। আমি যেন ওর নেশায় আসক্ত হয়ে গেছিলাম। বড্ড বেশী,,, ও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
ওর চোখ যেন কিছু বলছে আমায়..সেই মায়াভরা চোখগুলি------
ওর চোখ যেন কিছু বলছে আমায়..সেই মায়াভরা চোখগুলি------
--সব ঘরেই তো তেলাপোকা থাকে। এতে এত রাগ করার কি আছে? (একটু হেসে)
--আমি যে ঘরে থাকবো সে ঘরে কোন তেলাপোকা থাকতে পারবে না। (মুখটা বেকিয়ে)
--কেন?? তেলাপোকা কি আপনার আদেশ মেনে চলবে নাকি?
--অবশ্যই, আমার ঘর আমার মর্জি।।
--সব সময় কি আপনার মর্জি মতোই হবে সব কিছু?
-- একদম!!
-- এমন কেউ যদি আপনার জীবনে আসে. যে আপনার মর্জি মতো কিছুই করবে না। তখন কি করবেন??
--তখন ওকে মেরে এক্কেবারে খাটের সাথে বেধে রাখবো..
-- বরকে পিটাবেন?
--ওমা,, কথা না শুনলে পিটাবো না..?
--আর ভালোবাসবেন না..?..আদর করবেন না..?
-- ওকে এত বেশি আদর করবো যে অন্য মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাবে না,( মুচকি হাসি দিয়ে)
--তাই
--একদম,,
--আমি যে ঘরে থাকবো সে ঘরে কোন তেলাপোকা থাকতে পারবে না। (মুখটা বেকিয়ে)
--কেন?? তেলাপোকা কি আপনার আদেশ মেনে চলবে নাকি?
--অবশ্যই, আমার ঘর আমার মর্জি।।
--সব সময় কি আপনার মর্জি মতোই হবে সব কিছু?
-- একদম!!
-- এমন কেউ যদি আপনার জীবনে আসে. যে আপনার মর্জি মতো কিছুই করবে না। তখন কি করবেন??
--তখন ওকে মেরে এক্কেবারে খাটের সাথে বেধে রাখবো..
-- বরকে পিটাবেন?
--ওমা,, কথা না শুনলে পিটাবো না..?
--আর ভালোবাসবেন না..?..আদর করবেন না..?
-- ওকে এত বেশি আদর করবো যে অন্য মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাবে না,( মুচকি হাসি দিয়ে)
--তাই
--একদম,,
আমি ওর হাতটা তখন থেকে ধরেই আছি.. ওর কোন হদিসই নেই..শুধু চেয়ে আছি দুজন দুজনের দিকে..
হঠাৎ দরজায় কেউ কড়া নাড়লে আমরা দুজনেই চমকে গিয়ে দুজন দুজনকে ছেড়ে দেই।
--ইয়েস কাম ইন( তানহা)
-- ম্যাম কিছু লাগবে (ওয়েটার)
--না কিছু লাগবেনা. তুমি এখন যেতে পারো.
-- ম্যাম কিছু লাগবে (ওয়েটার)
--না কিছু লাগবেনা. তুমি এখন যেতে পারো.
ওয়েটার চলে গেল। আমরা দুজনই খুব লজ্জায় পড়ড়ে গেলাম..দুজনই এদিক-ওদিক তাকাচ্ছি ---
-- তাহলে ম্যাম আমি আসি এখন..
--ঠিক আছে যা, আর শোন রাতে খেয়ে ঘুমাস,,( মুচকি হেসে)
-- জি, ঠিক আছে। খেয়ে ঘুমাবো..?
--ঠিক আছে যা, আর শোন রাতে খেয়ে ঘুমাস,,( মুচকি হেসে)
-- জি, ঠিক আছে। খেয়ে ঘুমাবো..?
আমি আমার রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। রাতে খাওয়া দাওয়া করে একটা ল-ম্বা ঘুম দিলাম। এক ঘুমে রাত পার।
হঠাৎ কলিং বেলের শব্দে আমার ঘুমটা ভাঙলো। দরজা খুলে দেখি তানহা একটা চান্দ্রমাখা হাসি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
হঠাৎ কলিং বেলের শব্দে আমার ঘুমটা ভাঙলো। দরজা খুলে দেখি তানহা একটা চান্দ্রমাখা হাসি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
-- গুড মর্নিং..(তানহা)
-- গুড মর্নিং ম্যাম।
--কেমন ঘুম হয়েছে রাতে?
-- ভালো.
--তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে. বাইরে যাব.
-- কোথায়?
-- আরে আশ্চর্য, এখানে কি তুই ঘুমাতে এসেছিস? ঘুরতে যাব সবাই মিলে.
-- ও ঠিক আছে..
-- ঠিক আছে না,। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বাইরে আয়। আমি অপেক্ষা করছি।
-- জ্বী..
-- গুড মর্নিং ম্যাম।
--কেমন ঘুম হয়েছে রাতে?
-- ভালো.
--তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে. বাইরে যাব.
-- কোথায়?
-- আরে আশ্চর্য, এখানে কি তুই ঘুমাতে এসেছিস? ঘুরতে যাব সবাই মিলে.
-- ও ঠিক আছে..
-- ঠিক আছে না,। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বাইরে আয়। আমি অপেক্ষা করছি।
-- জ্বী..
কথাটা বলেই তানহা চলে গেল। আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বাইরে গেলাম। গিয়ে দেখি পুরো টিম বাসে বসে আছে। মানে অফিসের সবাই.
তানহার পাশের সিটটা খালি। সম্ভবত আমার জন্য রেখেছে। কিন্তু ওকে পাশ কাটিয়ে আমি মিস শায়লার কাছে গিয়ে বসলাম। তানহাতো ওই দৃশ্য দেখে তেলে-বেগুনে জ্বলছে। অবশ্য ওকে একটু জেলাস ফিল করানোর জন্যই আমি কাজটা করলাম। বুঝতে চাই যে আমার প্রতি ভালবাসাটা কতটুকু।।
-- হ্যালো মিস্টার মেহমেদ. কেমন আছেন?? (মিস শায়লা)
--জ্বী ভালো. আপনি কেমন আছেন?
-- আমি পরিষ্কার ভালো. তবে আপনাদের বিষয়টা একটু ঘোলাটে লাগছে।
-- মানে?
-- অফিসের সবাই তো একটা বিষয় নিয়ে খুব চর্চা করছে।
--কোন বিষয়টা বলুনতো?
-- ম্যাডাম আর আপনার বিষয়টা. ম্যাডাম আর আপনার এতটা ঘনিষ্ঠতা সবার মনেই কিছু না কিছু প্রশ্ন তৈরি করছে....
--সবার মনের টা বাদ দিন. আপনার মনে কি প্রশ্ন সেটা বলুন.
--সেটা তো আপনি বলবেন?
--যেমন?
-- ভালোবাসেন আমাদের ম্যাডামকে??
একটু লজ্জাই পেলাম কথাটা শুনে..
--হৃদয়কে প্রশ্ন করতে হবে.
-- কেন? আপনার হৃদয় আর আপনি কি আলাদা?
-- আলাদা নই. তবে যাই বলি আর যাই করি, আগে এই মনটাকে প্রশ্ন করি.. তারপর সবকিছু.
--আপনার রসিক স্বভাবটা আমার পছন্দ হয়েছে. (একটু হেসে)
--তাই নাকি?
-- একদম.
-- শুনলাম আফসার ভাই নাকি আপনাকে পছন্দ করে?
-- মানে?(শায়লা কিছুটা অবাক হল কথাটা শুনে)
-- না মানে আফসার ভাই আজকাল আপনার দিকে একটু বেশিই তাকাচ্ছে মনে হয়।
--জ্বী ভালো. আপনি কেমন আছেন?
-- আমি পরিষ্কার ভালো. তবে আপনাদের বিষয়টা একটু ঘোলাটে লাগছে।
-- মানে?
-- অফিসের সবাই তো একটা বিষয় নিয়ে খুব চর্চা করছে।
--কোন বিষয়টা বলুনতো?
-- ম্যাডাম আর আপনার বিষয়টা. ম্যাডাম আর আপনার এতটা ঘনিষ্ঠতা সবার মনেই কিছু না কিছু প্রশ্ন তৈরি করছে....
--সবার মনের টা বাদ দিন. আপনার মনে কি প্রশ্ন সেটা বলুন.
--সেটা তো আপনি বলবেন?
--যেমন?
-- ভালোবাসেন আমাদের ম্যাডামকে??
একটু লজ্জাই পেলাম কথাটা শুনে..
--হৃদয়কে প্রশ্ন করতে হবে.
-- কেন? আপনার হৃদয় আর আপনি কি আলাদা?
-- আলাদা নই. তবে যাই বলি আর যাই করি, আগে এই মনটাকে প্রশ্ন করি.. তারপর সবকিছু.
--আপনার রসিক স্বভাবটা আমার পছন্দ হয়েছে. (একটু হেসে)
--তাই নাকি?
-- একদম.
-- শুনলাম আফসার ভাই নাকি আপনাকে পছন্দ করে?
-- মানে?(শায়লা কিছুটা অবাক হল কথাটা শুনে)
-- না মানে আফসার ভাই আজকাল আপনার দিকে একটু বেশিই তাকাচ্ছে মনে হয়।
কথাটা শুনে মিস শায়লা একটু লজ্জাবোধ করলো। বুঝতেই পারছি তারও কিছুটা দুর্বলতা আছে আফসার ভাইয়ের প্রতি। যাই হোক আমি আর মিস শায়লা পেছনে বসে হাসি ঠাট্টা করছি। আর তানহা কিছুক্ষণ পর পর আমাদের দিকে দেখছে।
তবে আমাদের এই পুরো বিষয়টা লক্ষ্য করলেন আফসার ভাই। তিনি প্রথম থেকে আমাদের দিকে নজর রেখে চলেছে। হঠাৎ পিয়ন এসে বলল তানহা নাকি আমায় ডাকছে। আমি মিস শায়লার কাছ থেকে উঠে গিয়ে তানহার পাশের সিটে গিয়ে বসলাম।
--কিসের এত কথা তোর মিস লায়লার সাথে? (খুব রেগে)
-- কই. কিসের কথা?
-- কই. কিসের কথা?
-- তাহলে এত হাসি ঠাট্টা কেন তোদের মাঝে? তোকে না বলেছি ওই মেয়েটার কাছ থেকে দূরে থাকবি?
-- এই বলছিলাম কেমন আছেন কি করছেন এই সব...
-- আমাকে কিন্তু টুপি পরাতে আসবি না. আমি কোন কচি খুকি নেই বুঝলি. সব বুঝি.
--কি বুঝেন আপনি??( ওর চোখের দিকে তাকিয়ে)
-- শুধু তুই বুঝলিনা. (অভিমানী সুরে জানালার দিকে তাকিয়ে থেকে কথাটা বলল)
কিন্তু আমি ওর অভিমানটা ভাঙ্গাতে গেলাম না। পাবলিক প্লেসে ওর সাথে এতটা ঘনিষ্ঠ হওয়া বোধহয় ঠিক হবে না। আমি আর কথা না বাড়িয়ে চুপ হয়ে গেলাম। সারাপথ একটা কথাও বলিনি।
বাসটা হঠাৎ কোথাও থামল। খুব সুন্দর একটি জায়গা। চারদিকে পাহাড়, জঙ্গল, সবুজের সমারোহ, একটি মিষ্টি সকালে এরকম একটি দৃশ্য দেখা সত্যিই খুব আনন্দের। সবাই বাস থেকে নেমে হাঁটতে লাগলাম।
পাহাড়ের গা কেটে মাটির সিঁড়ি বানানো হয়েছে। সেই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলাম। তানহা ঠিক আমার সাথে। গোমড়া মুখ করে থাকবে, কথা বলবে না কিন্তু আমার থেকে অন্য কোথাও যাবেও না।আর বাকিরা আগে পেছনে।
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে খুব সুন্দর খোলামেলা একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম আমরা। সেখানেই আছে বাঁশের বেড়া দিয়ে কারুকাজ করা খুব সুন্দর একটি রেস্টুরেন্ট। সে রেস্টুরেন্টের মাঠে একটা বড় চাদর বিছানো হলো। সেই চাদুরে আমাদের সবাইকে গোল করে বসতে বলা হলো।
আমরা বসলাম। তানহাও ঘুরেফিরে সেই আমার পাশেই বসলো। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে এবং নিজেদের মধ্যে কি যেন বলছে। অবশ্য আমার বুঝতে বাকি নেই সবার মাঝে কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
ইয়াকুব স্যার আমাদের সবার জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করতে গেলেন। এরই মাঝে আফসার ভাই বলে উঠল---
-- আচ্ছা আমরা কি এভাবেই বসে থাকবো চুপ করে? কোন বিনোদন, গান-বাজনা, কবিতা -সাহিত্য. এমন কিছু হয়ে যাক?
-- মিস্টার অফিসার তাহলে পরিচালনা দায়িত্বটা আপনিই নিন।( তানহা)
--আমি..?
--হ্যাঁ আপনি, আপনিই পরিচালনা করুন।
--ম্যাডামের আদেশ শিরোধার্য. (একটু ভঙ্গিমা করে)
-- তবে আমার একটি কথা আছে. (মিস শায়লা)
-- কি কথা?( আফসার ভাই ভালোবাসাময় একটি হাসি দিয়ে)
--পরিচালনার দায়িত্বটা যখন আপনিই পেয়েছেন, তাহলে শুরুটাও আপনাকে করতে হবে।
--যেমন?
-- মিস্টার অফিসার তাহলে পরিচালনা দায়িত্বটা আপনিই নিন।( তানহা)
--আমি..?
--হ্যাঁ আপনি, আপনিই পরিচালনা করুন।
--ম্যাডামের আদেশ শিরোধার্য. (একটু ভঙ্গিমা করে)
-- তবে আমার একটি কথা আছে. (মিস শায়লা)
-- কি কথা?( আফসার ভাই ভালোবাসাময় একটি হাসি দিয়ে)
--পরিচালনার দায়িত্বটা যখন আপনিই পেয়েছেন, তাহলে শুরুটাও আপনাকে করতে হবে।
--যেমন?
--কিছু একটা দিয়ে শুরু করুন. যাতে আপনার টা দেখে আরেকজন শুরু করতে পারে...
--তাহলে ঠিক আছে. সাহিত্য দিয়ে আজকের জলসা শুরু করলাম---""বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"""
( আফসার ভাইয়ের ভনিতা দেখে সবাই মুচকি মুচকি হাসছে)
-- এবার আফসার ভাই তার জীবনপ্রিয় সাহিত্য শুরু করে দিলেন,,--" হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করেছো তুমি তোমার ওই প্রেম মাখা তীরে.. তুমি জাননা তুমি বোঝনা তোমাকে ভালোবাসার জন্য আমি কতটা ব্যাকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছি.? হৃদয় কে কষ্ট দিয়েছো তুমি তোমার অজ্ঞতার বেড়াজালে বন্দি হয়ে.. তোমাকে মুক্ত করতেই আমার এই ভালবাসার জন্ম.. তোমাকে ভালোবাসতেই আমার এই প্রেমের উৎপত্তি.. তোমাকে পাবো বলে তীব্র বাসনা জেগে উঠেছে হৃদয়ে.. তোমাকে হারানোর বেদনা আমাকে ঘুমোতে দেয় না রাতে.. হৃদয়ের যন্ত্রণা তুমি বুঝবি একদিন, সেই প্রত্যাশায় আমার কষ্ট ভোগ করার কারন হে প্রিয়তমা.. তোমাকে ভালবেসে আজ আমি বিনা রোগে রোগী হয়ে আছি.. তোমাকে ভালোবেসে আমি হাবুডুবু খাচ্ছি কষ্টের সাগরে.. হতাশা আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি তোমার ওই চাঁদ মাখা মুখের হাসি দেখেছি বলে.. কষ্ট আমায় ছুঁতে পারেনি তোমার দীঘল কাজল মাখা চোখে চোখ রেখেছি বলে.. আমি ভুলে গিয়েছি সব যন্ত্রনা তোমাকে পাওয়ার আনন্দে.. আত্মহারা হয়েছি তোমার ভালবাসায়.. হৃদয়ে প্রশান্তি দেওয়ার মত এমন একটি কথা তুমি বলে দাও, আমায় যা শ্রুতি মধুর হয়ে আমার কানে বাজবে সর্বক্ষণ..
কষ্ট. যন্ত্রণা. দুঃখ. বেদনা..?? সেতো মরীচিকার মত উড়ে যাবে তোমার ভালবাসার একটু স্পর্শ পেলে.. তাহলে আর দেরি কেন..? সেই স্পর্শ আমায় দাও হে প্রিয়তমা.. আমি তোমার সেই পবিত্র ছোয়া পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করব আদি.অনন্ত.অনাদীকাল পর্যন্ত........
কষ্ট. যন্ত্রণা. দুঃখ. বেদনা..?? সেতো মরীচিকার মত উড়ে যাবে তোমার ভালবাসার একটু স্পর্শ পেলে.. তাহলে আর দেরি কেন..? সেই স্পর্শ আমায় দাও হে প্রিয়তমা.. আমি তোমার সেই পবিত্র ছোয়া পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করব আদি.অনন্ত.অনাদীকাল পর্যন্ত........
শেষ করতেই সবাই হাত তালি বাজিয়ে আফসার ভাই এর সাহিত্য কে বরণ করে নিলো...
-- মিস্টার আফসার আপনি যে এত ভালো সাহিত্য জানেন আগে কিন্তু জানতাম না.. খুব সুন্দর হয়েছে.( মিস শায়লা)
-- কি হবে এই সাহিত্য দিয়ে? যদি মনের মানুষ কেই শুনাতে না পারি.
--তা কে আপনার মনের মানুষ আফসার ভাই??( আমি)
-- আমার কথা বাদ দিন মেহমেদ ভাই, আপনার মনের মানুষ কে, তা বলুন?
-- আমার আবার মনের মানুষ??
--কেন আপনার কোন মনের মানুষ নেই..?
-- কই না তো.. (কথাটা অবশ্য মিথ্যে)
-- কি হবে এই সাহিত্য দিয়ে? যদি মনের মানুষ কেই শুনাতে না পারি.
--তা কে আপনার মনের মানুষ আফসার ভাই??( আমি)
-- আমার কথা বাদ দিন মেহমেদ ভাই, আপনার মনের মানুষ কে, তা বলুন?
-- আমার আবার মনের মানুষ??
--কেন আপনার কোন মনের মানুষ নেই..?
-- কই না তো.. (কথাটা অবশ্য মিথ্যে)
এরপর আফসার ভাই সবার সামনে যে বিস্ফোরক মুলক কথাটা বলল, রীতিমত যেই বিস্ফোরণ ঘটাল, তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না....
--লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান, এই মুহূর্তে যিনি বললেন যে আমার কোনো মনের মানুষ নেই,( আমাকে উদ্দেশ্য করে) তিনি একটি ডাহা মিথ্যা কথা বললেন. আসলে তার মনের মানুষ আছে.. কিন্তু তিনি প্রকাশ করতে চান না। তবে আমরা সবাই উনার মুখ থেকে শুনবো কে সেই মনের মানুষ??
আমি উনার এনাউন্সমেন্ট শুনে যেন আসমান থেকে পড়লাম। এটা কি কথা বলে দিলো আফসার ভাই?? উনি যে এরকম একটা কথা বলবেন সবার সামনে আমি তো কল্পনাও করতে পারিনি.
--কি হলো মেহমেদ ভাই,, বলুন।(আফসার ভাই)
সবাই আমাকে ঘিরে ধরলো আমার মনের মানুষের নাম কি, তা জানতে। হঠাৎ তানহা উঠে দাঁড়ালো.....
চলবে......
0 Comments