কষ্টের লাভ স্টোরি। অবহেলার কষ্টের গল্প। 1 new bengali emotional love story. sad story in bengali.

আজকের কষ্টের লাভ স্টোরি তে পাঠক দেখবেন, প্রেম বা ভালোবাসা মানুষকে জীবন নতুন জীবন দিতে পারে তেমনই এটি মানুষের জীবনকে শেষ করে দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে।

কষ্টের লাভ স্টোরি:-

প্রতি মাসের শেষে আমার স্বল্প বেতনের কিছু অংশ মানসিক হাসপাতালে দিয়ে আসি। কিন্তু সেদিনটা একটু আলাদা, বেতনটা হাতে পেয়ে যে আনন্দটা হয়েছিল আর যে হাসি মুখ নিয়ে সেই মানসিক হাসপাতালে গিয়েছিলাম ফিরেছিলাম একটা ভারী মুখ নিয়ে। ব্যাপারটা একটু বিস্তারিত ভাবেই বলি।

বেতন পাওয়ার প্রথম দিনেই আমি সেই এন জী ও পরিচালিত মানসিক হসপিতালে যাই। সেখানে সুপারের সাথে কথা বলার পর তার সাথেই প্রতিবারের মত আমি সেখানকার রোগীদের সাথে সময় কাটাই।

প্রতিটা রোগীর রুমে যাচ্ছি কথা বলছি আর ওদের সাথে একটু মজা করছি ওরাও ঘুরে মজা করছে আর আমার সঙ্গে সঙ্গে হাসছে। চার নাম্বার রুমে যাওয়ার পরেই আমি থমকে দাঁড়ালাম। ছেলেটার মুখটা কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। সুপারের কাছে জানলাম তাকে ২০ দিন আগে নিয়ে আসা হয়েছে, এখন সে প্রায় অনেকটাই সুস্থ।

কিন্তু আমার বারংবার মনে হতে লাগল এই মুখটা আমার চেনা। সুপারের কাছে নাম জানতে চাইলে তিনি খাতা দেখে নাম ঠিকানা বললেন- শুভম সাহা, বাড়ি- জলপাইগুড়ি। নামটা শুনেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। শুভম সাহা! বাড়ি জলপাইগুড়ি!

কষ্টের লাভ স্টোরি
কষ্টের লাভ স্টোরি

এই শুভম সাহা সেই আমাদের জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের টপার বয় নয় তো! আমি ভালভাবে তাকে দেখতে লাগলাম, আর মুহূর্তে আমার মাথায় তরঙ্গ খেলে গেল, এই শুভম সাহা আমাদের জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের টপার শুভম সাহা। কিন্তু কিন্তু তার এই অবস্থা কেন! বড় জানতে ইচ্ছে হল। যে শুভম এর একসময় তাগড়া শরীর ছিল সেই শরীর শুকিয়ে গিয়ে আজ শুকনো চ্যালা কাঠ এর মত হয়ে গেছে। এই শুভমের কাছেই কত আলোচনা করেছি পড়াশোনা নিয়ে, কিন্তু আজ সে এরকম কিভাবে!

আমি সুপার কে বললাম আমি এর সাথে একান্তে কথা বলতে চাই, আপনি বাকি কাজ গুলো দেখুন আমি এখুনি আসছি। সুপার চলে যাওয়ার পর আমি শুভমের কাছে গিয়ে তার নাম ধরে ডাকতে লাগলাম-

শুভম, শুভম এই শুভম চিনতে পারছিস রে আমি রে তোর বন্ধু অসীম। সে আমার মুখের দিকে একমনে চেয়ে আছে, আমি কখনো ওর হাত ধরে আবার কখনো ওর ঘাড়ে হাত রেখে ওকে মনে করিয়ে দিতে লাগলাম আমাদের স্কুলের স্মৃতি।

পড়ুনঃ- না পাওয়া ভালোবাসার গল্প- ব্যস্ততা 

-শুভম মনে আছে তোর সেদিনের কথা, আমি কিছুদের বায়োলজির নেফ্রন চ্যাপ্টার টা বুঝে উঠতে পারছিলাম না, আর ওই সময় স্যার আমাকে পড়া ধরেছিল তুই বলেছিলি আমাকে যেন না বকে আর তুই পরে আমাকে দারুণ ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলি। এইভাবেই অতীতের বিভিন্ন স্মৃতি ওকে মনে করিয়ে দিতে চাইলাম আর সে একমনে আমার সব কথা শুনছিল।

এইভাবে কিছুক্ষণ পর সে তার হাত তুলে আমার মুখ ছুঁয়ে বলল- অসীম তুই অসীম তুই অসীম।

আমি বললাম- হ্যাঁ রে আমি অসীম তোর সেই স্কুলের বন্ধু অসীম।

এই কথা বলার পরেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।

অবহেলার কষ্টের গল্প
অবহেলার কষ্টের গল্প

কিছুক্ষণ নানা বিষয়ে কথা বলার পর সে নিজে থেকেই আমাকে বলল বৈশাখী ওকে ছেড়ে চলে গেছে। এক ঝলকে আমার মনে পরে গেলো স্কুলের সেই দিন গুলোর কথা।

শুভম আর বৈশাখীর জুটি ছিল আমাদের স্কুলের সবার সেরা, আমরা সব বন্ধুরা এমনকি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা রা পর্যন্ত জানত যে ওরা রিলেশন এ আছে। ওদের রিলেশন দেখে আমাদের হিংসে হত, এত মিল দুটো মানুষের মধ্যে কিভাবে হতে পারে! দুই জন দুইজনকে এত ভালভাবে বুঝত সেটা বলার বাইরে।

কিন্তু হঠাৎ কি হল এদের!

আমি শুভম কে জিজ্ঞাসা করলাম- কিভাবে হল রে এইসব।

সে এবার হাসতে লাগলো আর বলতে লাগল- ছেড়ে দিয়েছে রে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে, আর আমি শালা এতটাই নির্বোধ এতটা সপে দিয়েছি ওর কাছে নিজেকে যে তা ভাষায় ব্যক্ত করা আমার পক্ষে অসম্ভব। সে আবার হাসতে লাগল।

আমি কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই সে আবার বলা শুরু করল- কলেজ পর্যন্ত আমার আর বৈশাখীর সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল।

আগে যেমন পড়াশোনা আর আমাদের প্রেম একসাথে চলত কলেজ পর্যন্ত সব কিছুই একই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ওর কি হল জানি না, আমাকে একদিন বলল আমি তোমার লাইফে না থাকলে তোমার লাইফটা কেমন হত।

পড়ুনঃ- প্রথম দেখায় প্রেমের গল্প 

ওর মুখে এরকম কথা শুনে ও কি বোঝাতে চাইল আমি বুঝি নী। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম- মানে!

ও ঘুরে বলল, আমি তোমার লাইফের অনেকটা সময় নষ্ট করছি। এই সময়টা হয়ত তোমার অনেক কাজে আসত।

অথচ আমি কখনোই এরকম বলা তো দূর ভাবিও নী। কারণ ওর কাছেই আমি স্বস্তি খুঁজে পাই। ওর এরকম কথাতে আমি রেগে যাই, আর ওকে রেগে বলে দিই তোর যদি মনে হয় তুই আমার সময় নষ্ট করছিস আমার এতে কিছু করার নেই। আমি রেগে বলে দিই হ্যাঁ কাজে লাগত তো এই সময়টা।

আমার এই কথাতেই সে আমাকে যা নয় তাই শুনিয়ে দিল। আমি ওকে বারবার বলি আমি মন থেকে বলিনী সেই কথাটা, কিন্তু ওকে কিছুতেই বোঝাতে পাড়ি নী। এরপর ধীরে ধীরে সে আমার সাথে কথা বলা কমিয়ে দিতে থাকে, সকালের ম্যাসেজ দুপুরে রিপ্লাই করতে থাকে।

ওর এরকম স্বভাবে আমি অনেক কষ্ট পাই, আমি ওকে বারবার আগে আমরা যেমন ছিলাম সেই অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা করি কিন্তু সে আমার কথা শোনে নি। এরপর আমাকে সে একদিন ব্লক করে দেয়।

bengali emotional love story.
bengali emotional love story.

একদিন সে বাজারে অত লোকের সামনে আমাকে চর মেরে দেয়, কিন্তু আমি তবুও হাল ছাড়ি নী। কিন্তু সে আমার সাথে কথা বলা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দেয়।

এরপর কি হল জানিনা, আমার এরকম অবস্থা দেখে বাবা মা বিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু কি করব বল অসীম, মন তো একটাই সেটা তো একজনের বশেই থাকে, অন্যজনের কাছে কি যায়!

এরপর একদিন ওকে অন্য একটি ছেলের সাথে হাত ধরে হাঁটতে দেখলাম। সেদিন থেকে পুরো ডিপ্রেশনে গেছি এরপর কি করেছি আমার মনে নেই। যখন বোধ ফিরে এসেছে তখন বুঝলাম আমি এই হসপিটালে।

পড়ুনঃ- ছোট ছোট প্রেমের গল্প 

কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শুভমের চোখ দিয়ে জল পরতে লাগল, কিন্তু সে মুখে পাগলের মত হেসেই  চলেছে। সে চেয়েছিল বৈশাখী কে আগলে রাখতে কিন্তু সেই বৈশাখী কালবৈশাখী রূপে তার জীবন তছনছ করে দেবে সেই অনুমান ছিল না শুভমের। সে তো বৈশাখী কে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল সেও চেয়েছিল তাদের প্রেম পরিপূর্ণতা পাক কিন্তু অজুহাত নামক এক অদৃশ্য মায়াবী হাত এসে শুভমের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বৈশাখীকে আর সঙ্গে ফেলে গেছে ঝড়ের পরবর্তী প্রিয়জন হারানোর বিরহ যন্ত্রণায় কাতর শুভমের ভয়াবহ আর্তনাদ।

ব্ল্যাক শ্যাডো

গল্পের প্রতিচ্ছবিতে-

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।

পড়ুনঃ-
রহস্যময় ভূতের গল্প- অভিশপ্ত বাড়ি

সত্যি প্রেমের গল্প- বিশ্বস্ত হস্ত
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (
)

কষ্টের লাভ স্টোরি। অবহেলার কষ্টের গল্প। 1 new bengali emotional love story. sad story in bengali.



from ছাড়পত্র https://ift.tt/pDjbsIz
via IFTTT

Post a Comment

0 Comments