বাংলা ভুতুড়ে গল্প। ভুতুড়ে গ্রাম। 1 new amazing bengali horror story.

আজকের বাংলা ভুতুড়ে গল্প টির কেন্দ্রে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত গ্রাম। সেই গ্রামে ঘটে যাওয়া অদ্ভুতুড়ে কর্মকাণ্ড নিয়েই আজকের গল্প।

বাংলা ভুতুড়ে গল্পঃ- ‘ভুতুড়ে গ্রাম’

সারা সপ্তাহ কর্মব্যস্ততা তেই কাটে আমার। সপ্তাহ শেষে আমি আর রানি শহরের এই কোলাহল ছেড়ে চলে যাই দূরে কোথাও। সেখানে সারাদিন কাটিয়ে সন্ধ্যে নাগাদ বাড়ি ফিরে আসি। সপ্তাহ শেষে এই হল আমাদের রুটিন।

এক সুন্দর সকাল, সূর্য দেব নিজ মনে নিজ তেজ চারিদিকে ছড়িয়ে চলেছেন। ঘুম ভাঙল রানির ডাকে। আজ বাইরে কোথাও যাব, তাই সে আগেই বাড়ির সব কাজ সেরে আমার জন্য চা নিয়ে হাজির। এদিকে আমি ফ্রেশ হতে না হতেই সে রেডি।

আমরা আজ যাচ্ছি এক ফরেস্ট এ। শহর শিলিগুড়ি থেকে সেই ফরেস্টটি প্রায় ১ ঘণ্টার রাস্তা। সব কিছু সেরে আমরা যখন বেড়িয়েছি তখন বেলা কাটায় কাটায় ১০ টা। মিনিট ২০ এর মধ্যে আমরা ব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে গ্রাম বাংলার ভেজা রাস্তাতে সু-নির্মল হাওয়ার পরশ উপভোগ করতে করতে এগিয়ে যেতে লাগলাম।

বাংলা ভুতুড়ে গল্প
বাংলা ভুতুড়ে গল্প

ফরেস্ট টা বেশ বড়। ফরেস্ট এর মাঝ বরাবর চলে গেছে ছোট একটা রাস্তা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, কে যেন আকাবাকা লাইন টেনে দিয়েছে, যা দূরে কোথাও মিশে গেছে।

আমরা একটি জায়গা পছন্দ করে সেখানে আসন পেতে বসলাম। যে জায়গায় বসলাম সেখান থেকে নদীর কলরব পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে। সত্যি কত শান্তি এই জায়গাটিতে।

কয়েক মিনিট পড়ে রানি নদীর ওপারে আঙ্গুল দেখিয়ে বলল ওগুলো কি! আমি দেখলাম, নদীর ওপারে যেন কতগুলো পুরনো আমলের বাড়ি। দূর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।

যা বটে বটে! কিন্তু এদিকে মন মানছে না। পুরনো জিনিসের প্রতি ঝোঁক আমার বরাবরই বেশি। যদি সেটা পুরনো বাড়ি হয় তাহলে কাছে থেকে সেটাকে না দেখে আমার রাতে ঘুম হবে না।

পড়ুনঃ- গোয়েন্দা গল্প- তান্ত্রিকের প্যাঁচ 

রানিকে একরকম জোড় করেই রাজী করলাম ওদিকে যাওয়ার জন্য। নদীর জল বেশি নেই, তাই নদী পারাপার করতেও বেশি অসুবিধা হবে না।

আমি রানির হাতটা শক্ত করে ধরলাম, এরপর নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে উঠলাম।

উঠে দেখি কিছু দূরেই একটি রাস্তা। রাস্তার দুপাশে বড় বড় জঙ্গল ঝোপ আর তারই মাঝে রয়েছে কয়েকটি পরিত্যক্ত বাড়ি। বাড়ি গুলো এত পুরনো যে সেগুলোর উপর বড় বড় গাছ জন্মে গেছে। জঙ্গলে ঢাকা থাকায় ছোট ছোট বাড়ি গুলোকে তেমন বোঝা না গেলেও বড় বড় বাড়ি গুলোর মাথা বার বার জানান দিচ্ছে তাদের অস্তিত্ব।

ভুতুড়ে গ্রাম
ভুতুড়ে গ্রাম

সেই সরু রাস্তা বেয়ে আমরা যতই ভিতরে যেতে লাগলাম, বাড়ির সংখ্যা বাড়তে লাগল। যতদূর চোখ যাচ্ছে ততদুর শুধু জঙ্গলে ঢাকা বাড়ি, ছোট বাড়ি থেকে শুরু করে বড় বিশালাকার বাড়ি পর্যন্ত রয়েছে এখানে।

মনে উঠতে লাগলো নানান প্রশ্ন। এরকম জায়গায় এত এত বাড়ি কেন। এতগুলো বাড়ি দেখে এটাকে গ্রাম মনে হচ্ছে, কিন্তু গ্রামবাসী গুলো কোথায়! সব গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে কোথায় গেল! তবে এটা কি হরপ্পা এর মত সুপ্রাচীন কোন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ!

রাস্তা দিয়ে যতই ভিতরের দিকে যাচ্ছি ততই এরকম বাড়ির সংখ্যা বাড়তে লাগল। কিছুদূর গিয়ে দেখি একজন বয়স্ক ব্যক্তি মাথায় গাছের ডাল নিয়ে আসছে।

তাকে দাড় করিয়ে এই বাড়ি গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। সে আমাদের যেমন বলেছে তেমনটা পুরোটা তুলে ধরলাম-

‘এদিকে আসতে নি কর্তা এদিকে আসতে নি। ওই যে ঘর গুলো দেখছ চারিপাশে ওগুলোতে এককালে মানুষ বাস করত গো কর্তা। এটা একটা গ্রাম ছিল। প্রায় ৪০-৪৫ বছর আগে সবাই এই গ্রাম ছেড়ে ভেগেছে ভূতের অত্যাচারে।‘

পড়ুনঃ- এক ভয়ানক নিশি রাতের গল্প 

আমি অবাক হয়ে বললাম- “ভূতের অত্যাচার! ধুর ওইসব আবার বাস্তবেও হয় নাকি!”

বৃদ্ধটি বলতে লাগল- ‘হ হয় কর্তা হয়। এই গ্রামে প্রায় ৫০০০০ লোকের বাস ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে লোকগুলো অন্য জায়গায় চলে যায়। ওই যে ওদিকে, একটা রেল লাইন আছে কর্তা। এই গ্রামের শেষে একটা কালী মায়ের মন্দির ছিল। সেই মন্দিরের পূজারী ছিল একজন মহিলা। গ্রামের কিছু লোকের এতেই ছিল যাবতীয় প্রশ্ন। মহিলা পূজারী তারা মানবে না।

সেই খারাপ লোকগুলো এক পূর্ণিমার রাতে ওই মহিলা পূজারী কে ঘর থেকে তুলে নিয়ে আসে, আর তার হাত পা বেঁধে ওই রেল লাইনে ফেলে দেয়। রাতের ট্রেনে কাটা পড়ে তার শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।

কিন্তু গ্রামের অন্য কারো সাহস ছিল না, সেই লোকগুলোর বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু বলে। সেই মহিলা পূজারী মারা যাবার একমাস পর অর্থাৎ পরের পূর্ণিমা তে অদ্ভুত ভাবে যে লোক গুলো ওরে মেরেছিল সেই লোক গুলো ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায় একই রাতে।

পড়ুনঃ-  সত্যি প্রেমের গল্প- বিশ্বস্ত হস্ত 

এরপর গ্রামের সাধারণ লোকগুলোর উপর অত্যাচার শুরু হল কর্তা। প্রতি পূর্ণিমাতে ৫ জন করে ওই রেল লাইনে কাটা পড়ে মারা যায়। এতে গ্রামের লোক বুঝতে পাড়ে এই কাজ সেই মহিলা পূজারীর অতৃপ্ত আত্মার।‘

রানি লোকটাকে থামিয়ে বলল- “কিন্তু সে গ্রামের লোকগুলোর ক্ষতি করছিল কেন!”

লোকটা আবার শুরু করল- ‘ওই যে, গ্রামের কোন লোক সেই মহিলা পূজারীর হত্মার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি তাই রেগে গেছে তার আত্মা।

 notun bengali horror story
notun bengali horror story

এরপর লোকগুলো নিজের জীবন বাঁচাতে একে একে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে থাকে। এরকম করেই গোটা গ্রামের জনসংখ্যা কমতে থাকে। আর শেষে যারা অবশিষ্ট ছিল নিজেদের জীবন বাঁচাতে তারাও চলে গেছে গ্রাম ছেড়ে।

তবে বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে সবাই এই গ্রামে ফিরে আসে। কার্ত্তিক মাসের প্রথম পূর্ণিমা তে গ্রামবাসীরা আবার এই গ্রামে ফিরে আসে আর গ্রামের সেই কালী মন্দিরে পূজা করে। আর সঙ্গে সেই পূজারীর আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এই জায়গা ভালো নয় কর্তা আপনারা যে পথে এসেছেন সেই পথে তাড়াতাড়ি ফিরে যান।‘

আমার আরও কিছু প্রশ্ন ছিল কিন্তু রানি আমার হাত ধরে টানতে থাকে সে আর কিছুতেই এখানে থাকবে না। অগত্যা ফিরতে হল আমাদের। আর মনে রয়ে গেল একঝাক প্রশ্ন। আর তার মধ্যে অন্যতম হল, লোকটা যে কথাগুলো বলল সেগুলো কি সত্যি! সত্যিই কি ওরকম ভাবে একটি আত্মা একটা গোটা গ্রাম খালি করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে!

ব্ল্যাক শ্যাডো

ভুতুড়ে গল্পের ভাবনায়-

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
পড়ুনঃ- 
  
জীবন নিয়ে শিক্ষণীয় গল্প 

রহস্যময় গল্প- রহস্যময়ী নারী 

ভালোবাসার গল্প- অসমাপ্ত 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র () 

বাংলা ভুতুড়ে গল্প। ভুতুড়ে গ্রাম। amazing bengali horror story



from ছাড়পত্র https://ift.tt/o0ydsBN
via IFTTT

Post a Comment

0 Comments