নতুন রহস্যময় গল্প। রহস্যজনক ভূতের গল্প। অভিশপ্ত মানি ব্যাগ। 1 new mysterious horror story in bengali.

আজকের নতুন রহস্যময় গল্প টির মূল চরিত্রে রয়েছে দুই বন্ধু। মাঝে মাঝে তারা আশে পাশে ঘুরতে যায়। এরকমই একদিন ঘুরতে গিয়ে তাদের হাতে আসে একটি মানি ব্যাগ। আর এর পরের ঘটনাক্রম গল্পে।

নতুন রহস্যময় গল্পঃ- “অভিশপ্ত মানি ব্যাগ”

ঘটনা হল যখন আমি কলেজে পড়ি তখনকার। আমি এবং আমার বন্ধু রাজেশ প্রায়ই কাছের পাহাড়ি জায়গা গুলোতে ঘুরতে যেতাম। এই ঘুরতে যাওয়ার শখটা আমাদের আগাগোড়া থেকেই। সপ্তাহের শেষে কোথায় ঘুরতে না গেলে আমাদের দম যেন বন্ধ হয়ে আসে।

এক বৃষ্টি মুখর দিনে আমরা দুই বন্ধু বেড়িয়ে কারশিয়াং এর সেই বিখ্যাত ভূতুড়ে জায়গা ডাউন হিলের উদ্দেশ্যে। শিলিগুড়ি থেকে বাসে চেপে সোজা ডাউনহিলের সামনে নেমে যাই আমরা, এই জায়গাটা যেমন শান্ত তেমনই মনোরম। সেখানে কিছুক্ষণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার পর, পাহাড়ের উপর একটি লেকের পাশে তাবু খাটিয়ে আমরা দুই বন্ধু দুপুরের খাবার খেতে লাগলাম।

এরপর গল্প করতে করতে বিকেল হয়ে গেছে। সবকিছু বাগিয়ে ফিরতে যাব, হঠাৎ করেই চোখ গেল লাকের পাশে যে বিশাল পীচ গাছটা রয়েছে সেখানে। সেই গাছের নিচেই রয়েছে একটি ছোট্ট বসার জায়গা। আর সেই ছোট্ট বসারটির নিচেই পড়ে রয়েছে কিছু একটা, যেটা দেখতে অনেকটা মানি ব্যাগের মত।

নতুন রহস্যময় গল্প
নতুন রহ্যময় গল্প

রাজেশ দৌড়ে গেল ওদিকে। হুম একদম ঠিক, সেটা মানি ব্যাগই বটে। রাজেশ এদিক ওদিক দেখে মানি ব্যাগটা চুপ করে তার ব্যাগে ঢুকিয়ে নিল। এরপর সেখানে গাড়ি ধরে সন্ধ্যা নাগাদ আমরা আমাদের হোস্টেলের রুমে ফিরে আসি।

কৌতূহল জন্মাচ্ছে সেই মানি ব্যাগটা নিয়ে। তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে দুই বন্ধু বিছানায় বসে খুললাম সেই মানি ব্যাগটা। তাতে রয়েছে ১১১ টাকা আর সব কটি নোট দশ টাকার ও একটি এক তটাকারr কয়েন। নোট গুলোর উপর বড় বড় করে কিছু লেখা আছে। মানি ব্যাগটির ছোট্ট পকেট টিতে রয়েছে ১১ টাকা।

রাজেশ বলল, চল টাকা গুলো ভাগ করে নিই। কিন্তু আমি তাকে বাঁধা দিয়ে বললাম, এর চেয়ে বরং এই মানি ব্যাগটা পুলিশ স্টেশনে জমা করে দিলে হয়না! আমার কথা শুনে রাজেশ হাসতে লাগল। সে বলল এই সামান্য কটা টাকার জন্য তুই যাবি পুলিশ স্টেশনে মানি ব্যাগ জমা করতে। সে আবার হাসতে লাগল।

আমি বললাম, দেখতো ব্যাগটাতে কোন কার্ড আছে নাকি। সে দেখল মানি ব্যাগটায় দুটো কার্ড আছে। আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল কার্ড এর নাম্বার হল, ০১১১ ১১১১ ১১১১ ১১১১ আর দ্বিতীয় কার্ড এর নাম্বার হল ১১১১ ১১১১ ১১১১ ১১১১। কার্ড দুটো হাতে নিয়ে আমি কোন নাম বা ঠিকানা আছে কি না, খুঁজতে লাগলাম, কিন্তু নিরাশ হলাম। কেননা সেখানে না আছে কোন নাম না আছে কোন ঠিকানা। শুধু লিখা আছে ব্যাংক অফ ভিলডে। আর তাতে রয়েছে নানান আজব আজব চিত্র। 

পড়ুনঃ- ভূতুড়ে গল্প- মাথা কাটা লাশ 

আমরা দুই বন্ধু কিছুতেই এই ১ সংখ্যা এর রহস্য মিলাতে পারছি না। মানি ব্যাগে ১১১ টাকা তারপর ছোট খাপে ১১ টাকা এরপর কার্ড দুটির নাম্বারও ১ দিয়েই।

নোট গুলো লাইন লাইন করে তাদের উপরে যে লেখাটি আছে সেটা পড়ার চেষ্টা করতে লাগলাম আমরা। তাতে ইংরেজি লেটার এ লিখা আছে- সি ভিস ভিভ্রে প্রজিস হক। লেটার গুলো ইংরেজি হলেও এটি মোটেও ইংরেজি ভাষা নয়, সেটা দুই বন্ধু মিলে বেশ বুঝলাম।

এরপর রাজেশ বলে, ভাগ করে নিই টাকা গুলো। আমি বললাম- আমার কেমন যেন অদ্ভুত অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা। সবকিছুতে ১ সংখ্যা উপস্থিতি দেখাচ্ছে কেন! রাজেশ আমার কথার পাত্তা না দিয়ে বলল, ঠিক আছে তুই সেটাই চিন্তা করতে থাক। আমি আপাতত এগুলো আমার পকেট এ ভরলাম।

আমি রাজেশ কে বাঁধা দিলেও সে কিছুতেই শোনে না। সে একরকম জোড় করেই টাকা গুলো তার পকেটে রেখে দিল।

রাত তখন প্রায় দুটো আমার কিছুতেই ঘুম আসছে না, রাজেশের বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখি, সে বিন্ধাস ঘুমাচ্ছে। কিন্তু আমার মাথায় শুধু সেই শব্দ গুলিই ভাসছে- সি ভিস ভিভ্রে প্রজিস হক। কি অর্থ এগুলোর। এগুলো কি কোন সিক্রেট ম্যাসেজ! আর কি ভাষাতেই বা এগুলো লেখা আছে! কিছুই আমার মাথায় ঢুকছে না।

আমার চিন্তা জাল ছিন্ন করে কানে একটা অদ্ভুত শব্দ ভেসে এল। মাথা উঠিয়ে দেখলাম রাজেশ তার বিছানায় নেই, আর অদ্ভুত শব্দটা আসছে বাথারুম থেকে। ছুটে গিয়ে দেখি, রাজেশ বেসিনের উপর ঝুকে বমি করছে। আমি তার কাছে যেতেই শিউরে উঠলাম, দেখলাম যে রাজেশ শুধু রক্ত বমি করছে। পরিস্থিতির আকস্মিকতায় আমি পুরো ঘাবড়ে গেছি, চেঁচিয়ে কেয়ার টেকার কে ডাকার ক্ষমতা টুকুও নেই আমার।

বাথরুমের মেঝেতে দেখি রক্ত লেগে রয়েছে। চারিদিকে এত এত রক্ত দেখে আমার ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। নিজেকে কোন মতে সামলে নিয়ে, রাজেশ কে বললাম- রাজেশ এই রাজেশ এরকম করছিস কেন, কি হল তোর! কিন্তু রাজেশের কোন উত্তর নেই, সে শুধু হাত দিয়ে ঈশারা করে তাকে শক্ত করে ধরে থাকতে বলল। আমিও সেটাই করলাম।

পড়ুনঃ- দুই বোনের উধাও রহস্য 

প্রায় পনেরো মিনিট পর রাজেশ ঈশারা করল, ওকে বিছানায় নিয়ে যেতে। আমি ওর মুখে লেগে থাকা রক্ত গুলো পরিষ্কার করে দিয়ে ওকে বিছানায় দিয়ে নিজে ওর পাশে বসে রইলাম। পরের দিন ভোরের আলো ফুটতেই আমি ডাক্তার ডেকে আনার কথা ভাবলাম এবং রাজেশের বিছানা ছেড়ে উঠতে যাব, এমন সময় রাজেশ আমার হাত ধরে বলে উঠল, তুই এখানেই বসে থাক।

আমি ঠায় বসে রইলাম তার পাশে। আমি ওর মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম জ্বরে ওর শরীর পুড়ে যাচ্ছে। থার্মোমিটার টা দিয়ে চেক করে দেখলাম, জ্বর ১০৩ ডিগ্রি উঠে গেছে। আমার কাছে থাকা জ্বর এর ওষুধ গুলো ওকে খাইয়ে দিলাম।

আমার ফোনটা বেজে উঠল। রিসিভ করতেই ওপার থেকে মায়ের কান্না মিশ্রিত গলা ভেসে উঠল। মা জানাল যে, সকাল সকাল সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে বাবার পা ভেঙে গেছে। আমাকে তখনই যেতে হবে। এদিকে রাজেশ কে এই অবস্থায় একা ফেলে আমি নড়তে পারব না।

অভিশপ্ত ভূতের গল্প
অভিশপ্ত ভূতের গল্প

কিন্তু রাজেশ বারবার আমাকে জানাতে লাগল যে, তুই চলে যা আমি ঠিক হয়ে যাব। ইচ্ছে না থাকলেও রাজেশ কে ওই অবস্থা তে রেখেই আমি রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।

বাড়িতে পৌঁছে রাজেশ কে অনেক বার কল করেছি ম্যাসেজ করেছি কিন্তু কোন উত্তর পাই নি। এরপর হোস্টেলের অন্য ছেলেদের রাজেশের খোঁজ নিতে বললাম, তারা জানাল যে আমাদের রুম বাইরে থেকে তালা বন্ধ। রাজেশ হয়ত বাড়ি গেছে। আবার অবাক হলাম, রাজেশ এত তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে বাড়ি চলে গেল। অথচ আমাকে কিছু জানালোই না।

প্রায় ১০ দিন পর বাবার অবস্থা কিছুটা ঠিক হওয়ার পর, হস্টেলে ফিরতেই দেখি, অনেক ভিড় জমে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমাদের রুম থেকে এক বিশ্রী পচা গন্ধ ভেসে আসছে। আর দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা চলছে।

দরজা ভেঙে ভিতরে গেল পুলিশের দল। বিছানার ভিতর থেকে উদ্ধার হল রাজেশের পচা গলা দেহ। আমি যেহেতু রাজেশের সাথেই থাকি, সেহেতু সমস্ত দোষ এসে পরল আমার ঘারে। আমাকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু তখনও আমার মনে শুধু কিছু প্রশ্ন ঘুরে যাচ্ছিল। আমি কি সেই রাতে রাজেশ কেই দেখেছি! আমি বাড়ি যাওয়ার সময় কি রাজেশ কেই রেখে গেছি! আমি তো দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করিনি, তাহলে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ কেন!

এইসব নানান প্রশ্নের ভিড়ে বারবার মনে পড়ে যেতে লাগল, সেই রহস্যময় মানি ব্যাগটির কথা। সব কিছু সংখ্যা ১ দিয়েই তারপর সেই লেখা টা সি ভিস ভিভ্রে প্রজিস হক। কি মানে ওটার!

রহস্যজনক ভূতের গল্প
রহস্যজনক ভূতের গল্প

যাকগে, এরপর ৫ বছর কোর্ট এর ঝামেলা কাটিয়ে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হই। কেননা হোস্টেলের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে, আমি পাগলের মত আচরণ করছি, যেন কাউকে বিছনায় শুয়ে দিয়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি, আবার বাথরুম থেকে যেন কাউকে ধরে নিয়ে আসছি। কিন্তু আমার একদম পুরো মনে আছে যে, সেদিন আমি রাজেশ কেই ধরে নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে দিয়েছি আর তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছি। তবে কি তবে কি রাজেশ আগে থেকেই…

আর এই ঘটনার বহু বছর পর সেই রহস্যময় মানি ব্যাগের নোট গুলিতে লেখা সি ভিস ভিভ্রে প্রজিস হক, শব্দটার মানে খুঁজে পেয়েছি, কথাটির অর্থ হল- যদি তুমি বাঁচতে চাও এটিকে দূরে ছুড়ে ফেলে দাও।

রাজেশ হয়ত সেই রহস্যময় লেখা নোট গুলি নিজের কাছে রেখেছে তাই এমন হয়েছে, আমার ভাগ্য ভাল যে, সে গুলি নেওয়ার প্রতি আমি কোন আগ্রহ দেখাই নি, নাহলে হয়ত আমিও আজ রাজেশের মত…

কিন্তু সেই রহস্যময় ১ সংখ্যা গুলির রহস্য আমি আজও সমাধান করতে পারিনি। তবে ব্যাংক অফ ভিলডে এর রহস্য আমি অনেকটা সমাধান করতে পেরেছি। ভিলডে এর শেষের শব্দ ‘ডে’ কে যদি সামনে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে সেটা দাঁড়ায় ‘ডেভিল’ অর্থাৎ ব্যাংক অফ ডেভিল।  

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ- 

রহস্যময় গল্প- অদ্ভুতুড়ে ফোন নাম্বার 

গোয়েন্দা গল্প- নীল নারী মূর্তি উধাও রহস্য 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

নতুন রহ্যময় গল্প। রহস্যজনক ভূতের গল্প। অভিশপ্ত মানি ব্যাগ। mysterious horror story in bengali



from ছাড়পত্র https://ift.tt/xLXqplv
via IFTTT

Post a Comment

0 Comments